বিদ্যুতের দাম আবার বাড়ানো হচ্ছে। পিডিবির পাইকারি ক্রেতা-বিতরণ কোম্পানিগুলোর ক্ষেত্রে এই দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হয়েছে। সরকারের উচ্চপর্যায়ের নীতিগত সিদ্ধান্ত পেলে একই সঙ্গে গ্রাহক পর্যায়েও দাম বাড়ানো হবে।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ে গতকাল সোমবার বেলা ১১টায় অনুষ্ঠিত এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সরকারি সূত্র জানায়। এর আগে সকাল নয়টায় অনুষ্ঠিত অপর এক সভায় বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহ বাড়াতে দুটি সার কারখানা বন্ধ রাখা, ভৈরব থেকে ময়নামতি পর্যন্ত সিএনজি ফিলিং স্টেশনগুলো বেলা তিনটা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত বন্ধ রাখা এবং সেচের জন্য গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ ৫ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বাড়ানো হবে মূলত প্রতিদিন রাত ১১টা থেকে সকাল সাতটা পর্যন্ত। ফলে ঢাকাসহ শহরাঞ্চলে গভীর রাতে লোডশেডিং বাড়বে।
বেলা ১১টার সভায় প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, বিদ্যুৎসচিব মো. আবুল কালাম আজাদ, এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ ইউসুফ হোসেন, পিডিবির চেয়ারম্যান এ এস এম আলমগীর কবির ও আরইবির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মইন উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
এর আগের সভায় প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, বিদ্যুৎসচিব, জ্বালানিসচিব মোহাম্মদ মেজবাহউদ্দিন, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান অধ্যাপক হোসেন মনসুর, পিডিবির চেয়ারম্যান, তিতাস গ্যাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আজিজ খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সরকারি সূত্র জানায়, বিইআরসি আইনের আওতায় সংক্ষিপ্ত প্রক্রিয়ায় বিদ্যুতের পাইকারি দাম বাড়ানো হতে পারে।
দাম বাড়ানোর প্রধান কারণ ভর্তুকি কমানো। গত বছর বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয় ও বিক্রয়মূল্যের মধ্যে ব্যবধানের কারণে ভর্তুকি দিতে হয়েছে সাড়ে চার হাজার কোটি টাকার বেশি। এ বছর বিদ্যুতের উৎপাদন বাড়ায়, বিশেষ করে তেলচালিত কুইক রেন্টাল ও ভাড়াভিত্তিক কেন্দ্রে উৎপাদন ব্যয় বেশি হওয়ায় দাম বাড়ানোর পরও প্রায় সমপরিমাণ ভর্তুকি দিতে হবে।
এ ছাড়া রয়েছে জ্বালানি তেলে দেওয়া ভর্তুকি। গত দুই সপ্তাহে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম প্রতি ব্যারেল ১০-১২ মার্কিন ডলার করে বেড়েছে।
বাজারের প্রবণতা আরও বাড়ার দিকে। কাজেই ভর্তুকি সীমিত রাখা এবং লোকসান কমাতে দাম বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই।
দাম বাড়ানোর পাশাপাশি বিদ্যুতের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাসের সরবরাহ বাড়াতে ঘোড়াশাল ও পলাশ ইউরিয়া সার কারখানা দুটি দুই মাসের জন্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সিদ্ধিরগঞ্জ, হরিপুর, ঘোড়াশাল ও মেঘনাঘাট বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাসের চাপ বাড়ানোর জন্য কিশোরগঞ্জের ভৈরব থেকে কুমিল্লার ময়নামতি পর্যন্ত সব সিএনজি স্টেশন বেলা তিনটা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত বন্ধ রাখা হবে। এখন বিকেল পাঁচটা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত এগুলো বন্ধ থাকে।
বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বোরো চাষে সেচের জন্য নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে রাত ১১টা থেকে সকাল সাতটা পর্যন্ত গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বর্তমানের চেয়ে ৫ শতাংশ বাড়ানো হবে। সেচের জন্য এবার দেড় হাজার মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ সরবরাহ দরকার। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।