আমারো পরান যা হা চায়.......
৩য় দিন আমরা গেলাম মিনারা টাওয়ার দেখতে। যেটাকে বলা হয় কেএল টাওয়ার। আমাদের হোটেলের একদম কাছেই ছিলো। আমার হেটেই রওনা দিলাম। ওখানে হাটতেও মজা লাগে।
গাড়িগুলো কত ধিরে চলে। আর ওদের রাস্তা গুলোও বেশ আপন আপন লাগছিলো। আমি মনে মনে ভাবছিলাম কেন ?পরে বুজলাম আমাদএর দেশের ফুটপাতগুলো একটু উচু রাস্ত থেকে। ওদের রাস্তা আর ফুটপাত সমান। হাটতে হাটতে টাওয়ারের কাছাকাছি আসলে একটা মাইক্রো আসলো ।
বললো আমরা কোথায় যাব?বললাম;আমাদের গাড়িতে উঠে পরতে বললো। ওটা ছিলো ফ্রি সার্ভিস। কেএল টাওয়ারে যেতে ইচ্ছুক পর্যটককে ওরা এই গাড়ীতে করে টাওয়ারের কাছে নিয়ে যায়। টাওয়ার টা একটা উচু জায়গায়। আবার বাংলাদেশের কথা ভাবছিলাম ,বাংলাদেশ কি কখোনো এরকম কোনো সার্ভিস দিবেনা?বাংলাদেশে কোনো সেবামুলক কোনো সুবিধাতো দেয়া হয়ই না বরং আরো কি কি সমস্যা করা যায় মনে হয় সেটা ভাবা হয়।
একবার আমি আমার এক আত্বিয়র সাথে গনস্বাস্হ্য হাসপাতালে খোজ নিতে গিয়েছিলাম । গিয়ে কাউন্টারে জিগ্গেস করলাম আপানাদের হাসপাতালে কি কি সুবিধা দেয়া হয়?উত্তরে লোকটা খুবই বিরক্তির সাথে আমাকে বলল সেখানে নাকি সবই অসুবিধা কোনো সুবিধা দেয়া হয়না। এরকম উত্তর শুনলেই মেজাজ গরম হয়ে যায়। যাই হোক মুল কথায় আসি।
সেখানে পৌছে গাড়ি থেকে নেমে টিকেট কাটতে হলো।
৪৫ রিংগিত ছিলো মনে হয় টিকিটে দাম। ঠিক মনেও পরছেনা। মানে বংলাদেশি টাকায় ১১২৫ টাকা। লিফটে উঠার সময় এক ফটোগ্রাফার বললো দাড়ান ছবি তুলব। আমাদের ছবি তুললো।
এখানে সব জায়গাতেই এরকম। কোনো জায়গায় গেলেই ছবি তুলে পরে আসার সময় সেই ছবি সুন্দর কোনো শোপিসে ঢুকিয়ে কিনতে বলে। দাম থাকে ১০/৩০/৪০ রিংিত। যার ইচ্ছে হয় স্মৃতি হিসেবে কিনে নেয়। ছবিতএ আমার চেহারা সবসময় এত জঘন্য লাগে!! মানে হটাৎে বিটাৎে আমার চেহারা ছবিতে ভালো আসে।
১০০ টা ছবি তুললে ২টা ভালো আসতে পারে। । ০০০১% সম্ভাবনা ছবি ভালো আসার। যাই হোক উঠে পড়লাম লিফটে। এমন দ্রুত লিফট উঠলো কানে প্রচন্ড প্রেশার ফিল করলাম।
এক মিনিটেরও কম সময়ে ২৭৬ মিটার উঠে যায়।
টায়ারের উপর থেকে দারুন ভিউ দেখা যায়।
কে এল টাওয়ার থেকে নেমে আমাদের কে ফ্রি একটা চিরিয়াখানা দেখতে দিলো। সেখানে প্রবেশ পথেই ২টা কাকাতুয়া বসে আছে স্বাগতম জানানোর জন্য। ভেতরে ছোটো ছোটো খাচায় সাপ,মাকড়সা,বিভিন্ন প্রানী।
অজগর সাপ নিয়ে আবার ছবি তোলারও ব্যবস্থা আছে। ষেখানে এক বাংলাদেশী কর্মী ছিলো। ওর কাজ হলো ৩টা পাখি নিয়ে বসে আছে যারা চায় তাদের সাথে ছবি তুলিয়ে দেয় ,সেটার জন্যও টাকা খরচ করতে হয়। আমরা ছবি তুললাম আরেকটু ঘুরাঘুরি করে আবার ঐ মাইক্রোতে করে চলে আসলাম।
পরেরদিন গেলাম লানকাউই তে।
শুনেছিলাম অনেকদুরে নাকি লানকাউই কুয়ালালামপুর থেকে। বাসে তারপার ফেরীতে করে যেতে হয়। আবার আবার লং জার্নি ভালোই লাগেনা। তাই ভয় পাচ্ছিলাম মনে মনে। ।
বাসে করে রওনা দিলাম। বাস কাউন্টার টাও কি সু্ণদর। বাসটাও খুব বড়। সিটগুলো প্লেনের চেয়েও বড় অনেক। গা্যে চাদর পেচিয়ে লম্বা করে শুয়ে পড়লাম।
আমার আবার এই বদভ্যাস আছে। গারীতে আমি সোজা হয়ে বসে থাকতেই পারিনা। আমার এই হেলান দেয়ার অভ্যাসের কারনে আগে আপা আমাকে লাউ গাছ ডাকত। লাউগাছ যেমন একটা লাঠি ছাড়া উঠতে পারেনা আমিও নাকি তেমন!!!
তারপর কখন যে ৬ না ৭ ঘন্টা পার হলো টেরও পেলাম না। ভোরে ঘুম ভাংলো।
৫টায় সম্ভবত। উঠে বাস থেকে নামলাম। নেমে একটা শুনশান বাস কাউন্টার । অনেকটা আমদের মফস্বল শহরের মতো। ২ /১ জন যাত্রি ছাড়া আর কেউ নেই।
আমার ওয়েট করতে লাগলাম। সকাল হলো ৭টার ফেরির টিকেট কাটলাম। ওখানে ফেরি আসার আগ পর্য্নত গেইট খোলা হয়না। কেউ পানির কাছ পর্যণ্ত যেতে পারেনা। পানিও ময়লা হয়না আর আমাদের বুড়িগন্গা!!!!!ইসসসসসশ!!!কালো কুচকুচে পানি!!!!একটা আস্ত নদী কালো করে ফেলেছি আমরা!!!!কি লজ্জা!!!
ফেরি আসলো ।
তার আগে ডিম ভাজি আর ডাল দি্যে পরোটা। দারুন নাস্তা করে নিলাম। চমৎকার একটা ফেরী আসলো। ভেতরে এসি ফুল স্পিডে ছাড়া। জানালার পাশে বসলাম।
সমুদ্রের পানি দেখে দেখে যাচ্ছি উফ এতখন যে জার্নি করেছি শরীর কিছুই বলছেনা। কারন জার্ণি বলতে বাংলাদেশের যে জার্নি র সাথে আমি পরিচিত,জ্যম,ধুলাবালি,মানুযের কোলাহল কিছুই যে নেই!আর সব কি ঝকঝকে। ফেররিতে মুভি ছাড়া টিভিতে কিনতু কে দেখে বাইরের সিনারি এত সুনদর!! পাহাড় আর পাহাড় আর নীল নীল পানি!!! আমি ফেরীর বন্ধ জানালা থেকেই ভিডিও করলাম ছবি তুললাম।
তারপর ১না ২ ঘন্টাপরেই পৌছে গেলাম। নেমেই বললাম ওয়াও সে কি অসাধারন ভিউ!!আর সেই ঈগলটা।
সেটা ওয়েবসাইটে দেখেছিলাম । সেখানে দাড়িয়েও অনেক ছবি তুললাম..........।
বাকি লানকাউইর কাহীনি আবার পরে বলব..........আরেকদিন। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।