আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ক্রসফায়ার, একটি সরকারি প্রেস-নোট আর যুদ্ধাপরাধী ও একটি সার্কাসের সমাপ্তি

D:\afif\handy_cam\mahdi.jpg দেখুন আমরা বাঙ্গালিরা বিভিন্ন কঠিন সমস্যার অদ্ভুত সব সমাধান বের করেছি। যার মধ্যে গত এক দশকে দুটি জিনিস খুবিই জনপ্রিয় আর কার্যকর হিসেবে নাম করেছে তার একটি হল ক্রসফায়ার আর অপরটি সরকারি প্রেস-নোট (তবে ইদানীং গুম হত্যা নামক আরও দারুণ ব্যাপার চালু হয়েছে); এদুটি জিনিস আমরা মেলা কাজে ব্যবহার করেছি বিরোধীদল দমন থেকে শুরু করে, বেয়ারা ছাত্র অথবা উঠতি রংবাজ এরকম সব অপ্রয়োজনীয় মানব দঙ্গল পরিষ্কারে এর জুড়ি নাই। তো আর একটি কাজে একে ব্যবহার করলে তেমন আর কি ক্ষতিবৃদ্ধি হবে। যুদ্ধাপরাধী দমনে একে ব্যবহার করলে কেমন হয়। কল্পনা করুন আজ থেকে কয়েক সপ্তাহ পরের একটি সরকারি প্রেস-নোট **** প্রজ্ঞাপন অধিকর্তা : তন্ত্র-মন্ত্রহীন বাংলাদেশ সরকার বিষয় : মাঝরাতে কতিপয় যুদ্ধাপরাধীর ক্রসফায়ার প্রসঙ্গে গতকাল মাঝরাতে সরকারি R, P এবং M বাহিনীর একটি সমন্বিত দল একদল যুদ্ধাপরাধীদের নিয়ে বিশেষ অভিযানে বের হয়, কিন্তু পথিমধ্যে কিছু সংখ্যক রাজাকার আর তাদের সহযোগী দোসর B পার্টির সন্ত্রাসী দ্বারা আক্রান্ত হয়।

ধারনা করা হচ্ছে যে সন্ত্রাসীদের লক্ষ্য ছিল যুদ্ধাপরাধীদের মুক্ত করে তাদের বিদেশে পাচার করা যাতে তারা বিচারের হাত থেকে বেচে যেতে পারে। আমদের সাহসী বাহিনী তাদের সেই চক্রান্ত নস্যাৎ করে দিয়েছ। শুধু তাই নয় গো.আ., সা.কা., মতি সহ সকল যুদ্ধাপরাধী পলানোর সময় মারা গেছে যদিও সন্ত্রাসীদের কাউকেই ধরা সম্ভব হয় নাই। .......... বাকি অংশ পুরনো যেকোনো প্রেস-নোট থেকে কপি করে নিন। **** যদি আনন্দিত হন কোন কথা নাই।

কিন্তু চমকিত্ বা অবাক হলে দুইটা কথা আছে। কেন ভাই সব ভুলে গেলেন নাকি গত এক দশক ধরে এটাইত আমাদের বিচারের পদ্ধতি, সস্তা এবং জনপ্রিয় ঠিক বাংলা সিনেমার মত। তবে মনে হয় একটু ভুল হয়ে গেল, এক দশক নয় বরং চার দশক ধরে আমাদের ক্ষুদ্র ইতিহাসে এভাবেই ন্যায় প্রতিষ্ঠা করছি। রাজনৈতিক হত্যা শুরু হয়েছিল সিরাজ শিকদার দিয়ে তারপর, শেখ মুজিব, চার নেতা, তাহের, জিয়া, ডা: মিলন আর বছর বছর নামহীন কতশত মানুষ যাদের জীবননাশ সংবাদপত্রের এক লাইনে উল্লেখেরও যোগ্য নয়। তবে আমি এটাকে সমর্থন দিচ্ছি অন্য এক কারণে।

কোন কিছু বলা যায় না, হাজার অন্যায় এর কোন প্রতিবাদ করা যায় না, কারণ একটাই ক্ষমতাসীন আর তাদের চেলচামুন্ডারা রৈ রৈ করে ওঠে – সব কিছু গোল্লায় যাক, আগে হবে যুদ্ধাপরাধীর বিচার তার পর সব কিছু, তাতে গণতন্ত্র নামক যত্তসব তন্ত্র ফন্ত্র আগামী কয় দশক ধরে বন্ধ থাকে তাতে কুছ পরোয়া নেই। আমরা শেয়ার মার্কেট লুটবো, বিদ্যুতের নামে ব্যাংকের সমস্ত আমানত লুটবো, পুরনো স্টাইলের চুরি চামরী আর টেন্ডার-বাজি তো আছেই । আর সব আখের গুছিয়ে পাঠাব বিদেশে, স্বপ্নের দেশ আমেরিকায় নয়ত প্রভুর দেশ বিলেতে, নিদেন পক্ষে মরু শহর দুবাই তো আছেই। বিদেশের সবাই ডাকছেরে আমায় কত ডিগ্রী কত পুরস্কার শুধু তোরাই আমার দামটা বুঝলি না। আগের ক্ষমতাসীনরা ছিল চোর আর বর্তমানেরটা ডাকাত।

কিন্তু ডাকাতই বা বলি কি ভাবে, ডাকাত অন্যায় করে কিন্তু দুর্বল আর কাপুরুষ বলে কেউ গালি দিতে পারবে কি? পড়শি ভারত যখন নেংটা করে পিটায়, মেরে কাটাতারে ঝুলিয়ে রাখে কই তখন তো কোন হুংকার শুনিনি, তখন জিভ দিয়ে লালা পরে আনন্দে লেজ নাচাতে থাকে ঠিক যেন কার্তিক মাসের কুকুরী। আনন্দে সব দিয়ে দেয় নদী, মাটি পারলে আমদের বসন টুকুও। অন্ধ হ বোবা হ কালা হ, বেশী খারাপ লাগলে গলায় দড়িদে কিন্তু কিছু দেখবি না, কিছু শুনবি না আর অবশ্যই মুখ খুলবি না যদি জানের মায়া থাকে। ঠিক আছে প্রভু তাই সই, কিন্তু প্রার্থনা ছিল যে একটা। কি?? একী সার্কাস দেখতে দেখতে একঘেয়েমিতে মরে যাচ্ছি প্রভু।

ঝুলিয়ে দিন না যুদ্ধাপরাধী কুমিরের ছানা গুলিকে, এবার না হয় আমরা তুল তুলে শালিক ছানা ধরে নিয়ে আসব। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.