কম্প্রমাইজ প্রথম ধাপ দুর্নীতির। তাই নো কম্প্রমাইজ। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত লড়াই। আজন্ম যোদ্ধা সংসপ্তক আমি।
হিন্দু বিবাহ আইন-২০১১ (খসড়া)
(২০১১ সালের........নং আইন)
খসড়া প্রস্ততকরণে: হিন্দু বিবাহ আইন প্রণয়নে নাগরিক উদ্দ্যেগ
১৩ ফেব্র“য়ারী-২০১১
হিন্দু বিবাহ আইন-২০১১ (খসড়া)
২০১১ সনের ---------নং আইন
যেহেতু, বাংলাদেশের হিন্দু নাগরিকদের জন্য হিন্দু বিবাহ আইন সংশোধন এবং বিধিবদ্ধ করা সমীচীন ও অপরিহার্য সেহেতু নিম্নরূপ আইন প্রণীত হইল।
প্রথম পরিচ্ছেদ
প্রারম্ভিক
১। সংক্ষিপ্ত শিরোনাম, আওতা, প্রয়োগ ও প্রর্বতন-
(১) এই আইনটি “হিন্দু বিবাহ আইন” ২০১১ নামে অভিহিত হইবে।
(২) ইহা সমগ্র বাংলাদেশের হিন্দু নাগরিক ও হিন্দু আইন অনুসারীদের উপর প্রযোজ্য হইবে।
(৩) সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন জারির তারিখ হইতে ইহা কার্যকর হইবে।
২।
সংজ্ঞা - বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থি কিছু না থাকিলে, এই আইনে-
(ক) “হিন্দু বিবাহ” বলিতে অত্র আইনের দ্বিতীয় পরিচ্ছেদের ৪ ধারায় বর্ণিত শর্তাবলী পূরণ সাপেক্ষে সম্পাদিত বিবাহকে বুঝাইবে;
(খ) “পারিবারিক আদালত” বলিতে ১৯৮৫ সালের “পারিবারিক আদালত অধ্যাদেশে” (অধ্যাদেশ নং-১৮) বর্ণিত পারিবারিক আদালতকে বুঝাইবে;
(গ) “জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত” ও “চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত” বলিতে ১৮৯৮ সালের ফৌজদারী কার্যবিধির(৫নং আইন) ৬(খ) ধারায় উল্লেখিত জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতকে বুঝাইবে। এবং উক্ত আইনের ৬(৩)(ক) ধারায় উল্লেখিত চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতকে বুঝাইবে;
(ঘ) “পূর্ণরক্ত” (ঋঁষষ নষড়ড়ফ) এবং “বৈমাত্রেয়”(ঐধষভ নষড়ড়ফ) বলিতে দুজন ব্যক্তি পরস্পরের সহিত পূর্ণরক্ত সর্ম্পকে সম্পর্কিত হইবে যখন তাহারা একই পূর্বপুরুষের একই স্ত্রীর মাধ্যমে বংশধর এবং বৈমাত্রেয় যখন তাহারা একই পূর্বপুরুষের কিন্তুু ভিন্ন ভিন্ন স্ত্রীর মাধ্যমে বংশধর;
(ঙ) “বৈপিত্রেয়”(টঃবৎরহব নষড়ড়ফ) বলিতে দুজন ব্যক্তি পরস্পরের সহিত ‘বৈপিত্রেয়’ সম্পর্কে সম্পর্কিত হইবে যখন তাহারা একই পূর্বপুরুষীয় (স্ত্রী লিংগ) ভিন্ন ভিন্ন স্বামীর ঔরসজাত সন্তান ;
ব্যাখা-(ঘ) (ঙ) উপধারানুযায়ী পূর্বপুরুষ বলিতে পিতা এবং পূর্বপুরুষী বলিতে মাতা অর্ন্তগত হইবে;
(চ) “সপিন্ড আতœীয়” বলিতে
১) কোন ব্যক্তির পির্তৃবংশের ছয় পূর্বপুরুষ বা পির্তৃবংশের সাত পরবর্তী পুরুষ;
২) কোন ব্যক্তির মার্তৃবংশের চার পূর্বপুরুষ বা মার্তৃবংশের পাচঁ পরবর্তী পুরুষ;
৩) কোন ব্যক্তির পির্তৃবংশের সাত পরবর্তী পুরুষদের মধ্য হইতে এিবিধ বন্ধ;ু
৪) কোন ব্যক্তির মার্তৃবংশের পাচঁ পরবর্তী পুরুষদের মধ্য হইতে মার্তৃবংশের ত্রিবিধ বন্ধু;
ব্যাখা: ক) পির্তৃবংশের ত্রিবিধ বন্ধু বলিতে পিতামহের বোনের ছেলে, পিতামহীর বোনের মেয়ে ও ভাইয়ের ছেলেকে বুঝাইবে;
খ) মার্তৃবংশের ত্রিবিধ বন্ধু বলিতে মাতামহের বোনের ছেলে, মাতামহীর বোনের মেয়ে এবং ভাইয়ের ছেলেকে বুঝাইবে;
(ছ) “নিষিদ্ধ সর্ম্পকের মান”(উবমৎববং ড়ভ ঢ়ৎড়যরনরঃবফ ৎবষধঃরড়হংযরঢ়) বলিতে দুজন ব্যক্তি পরস্পরের সহিত নিষিদ্ধ সম্পর্কে সম্পর্কিত বলিতে বুঝাইবে-
(১) যদি একজন অপরজনের সহিত সরাসরি বংশোদ্ভুত হন ; অথবা
(২) যদি কেহ একজন অপরজনের পূর্বপুরুষ অথবা পরবর্তী পুরুষের স্ত্রী অথবা স্বামী ছিলেন; অথবা
(৩) যদি কেহ একজন অপরজনের পিতা মাতার ভ্রাতা অথবা পিতামহ অথবা পিতা মহীর ভ্রাতা ছিলেন; অথবা
(৪) দুজনে যদি ভাই-বোন হন, কাকা-ভাইজি হন, পিসিমা-ভাইপো হন, মামা-ভাগ্নী হন অথবা ভাইবোনের সন্তানাদি;
ব্যাখ্যাঃ (খ) এবং (গ) ধারার উদ্দেশ্যে এরূপ সর্ম্পক যুক্ত হইবে- “বৈমাত্রেয়” ও “বৈপিত্রেয়” সর্ম্পকিত এবং সেই সঙ্গে “পূর্ণরক্ত” সর্ম্পকিত সর্ম্পক;
(জ) “স্ত্রীধন” বলিতে নারীর সেই সকল সম্পদকে বুঝাইবে যাহা বিবাহের সময় বা বিবাহের পরে পিতা-মাতার গৃহ হইতে অথবা স্বামী গৃহ হইতে অথবা আত্মীয় বা অনাত্মীয়র নিকট হইতে প্রাপ্ত উপহার বা দান সামগ্রীকে বুঝাইবে। ইহা ছাড়াও নারীর স্বপার্জিত সম্পদ বা দান বা উইলমূলে প্রাপ্ত সম্পদকেও বুঝাইবে। এই সম্পদ নারী স্বাধীনভাবে ভোগ, দান বা বিত্র“ী করিতে পারিবেন।
(ঝ) “বিধি” বলিতে এই আইনের অধীনে প্রণীত বিধিকে বুঝাইবে;
(ঞ) “নির্দেশিত” বলিতে এই আইনের বিভিন্ন নিয়মাবলীতে যেগুলো নির্দেশিত হইয়াছে।
৩। আইনের প্রাধান্য-
বর্তমানে বলবৎ হিন্দু বিবাহ সংশ্লিষ্ট অন্যকোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের বিধানাবলী প্রাধান্য পাইবে।
দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ
হিন্দু বিবাহ
৪। হিন্দু বিবাহের শর্তাবলী-
১)নিম্নের শর্তাবলী পূরণ সাপেক্ষে একজন হিন্দু নারী ও একজন হিন্দু পুরুষের মধ্যে বিবাহ সম্পন্ন হইতে পারিবে;
ক. বিবাহের সময় বর ও কনে মানসিকভাবে আইনসঙ্গত সম্মতি প্রদানে সক্ষম হইবেন এবং তাহাদের পূর্ণ সম্মতি থাকিতে হইবে;
খ. বিবাহে কনের বয়স অন্যূন ১৮ বছর ও বরের বয়স অন্যূন ২১ বছর হইতে হইবে;
গ. কনে ও বর “সপিন্ড আতœীয় বা নিষিদ্ধ সর্ম্পকের আতœীয়” হইতে পারিবে না;
ঘ. বিবাহটি অবশ্যই এই আইন অনুসারে নিবন্ধন করিতে হইবে।
২) বিবাহে ধর্মীয় প্রথা, নিয়মাদি ও সামাজিক উৎসবাদি পালন করা যাইবে।
৫। হিন্দু বিবাহ নিবন্ধিকরণ-
১. সরকার প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে প্রত্যেক উপজেলায় একজন হিন্দু বিবাহ রেজিস্ট্রার নিয়োগপ্রদান করিবেন। বিবাহ রেজিস্ট্রার বরপক্ষ অথবা কনে পক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে এবং বরপক্ষের দুইজন সাক্ষী ও কনেপক্ষের দুইজন সাক্ষীর উপস্থিতিতে এবং বর ও কনের সাক্ষ্য গ্রহণপূর্বক বিবাহ নিবন্ধন করিবেন। বিবাহ রেজিস্ট্রার বরপক্ষের অথবা কনে পক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে নির্ধারিত ফরমে বিবাহের সার্টিফিকেট প্রদান করিবেন;
২. বিবাহ সম্পন্ন হইবার দিন হইতে ৩০ দিনের মধ্যে অবশ্যই বিবাহ নিবন্ধন করিতে হইবে। কোন অনিবার্য কারণে নির্ধারিত ৩০ দিনের মধ্যে বিবাহ নিবন্ধন না করিতে পারিলে ৩০০ টাকা বিলম্বফিস সহ পরবর্তী ১৫ দিনের মধ্যে বিবাহ নিবন্ধন করা যাইবে।
বিবাহ নিবন্ধনের দায়িত্ব উভয় পক্ষের। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোনপক্ষ বিবাহ নিবন্ধন করিতে অনীহা প্রকাশ করিলে সংক্ষুব্দ পক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত নির্দেশিত সময়ের মধ্যে নিবন্ধনের আদেশ প্রদান করিতে পারিবেন অথবা তজ্জন্য দায়ী ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ ৩ মাসের কারাদন্ড অথবা ২০০০ টাকা অর্থদন্ড অথবা উভয়দন্ডে দন্ডিত হইবেন;
৩. বরপক্ষ ও কনেপক্ষ কোনরূপ ধর্মীয় নিয়মাদি ও সামাজিক উৎসবাদি পালন ব্যতিত সরাসরি বিবাহ রেজিস্ট্রারের অফিসে বিবাহ নিবন্ধন করিতে পারিবেন;
৪. হিন্দু বিবাহ আইন-২০১১ পাশ হইবার পূর্বে সম্পাদিত সকল বিবাহও পক্ষদ্বয়ের আবেদনের প্রেক্ষিতে এই আইন পাশ হইবার পর যেকোন সময় নিবন্ধন করা যাইবে।
৬। বিধবা বিবাহ-
“হিন্দু বিধবা বিবাহ আইন ১৮৫৬ (১৫ নং আইন)” অনুযায়ী বিধবা বিবাহের ক্ষেত্রেও বর্তমান আইনের ৪ নং ধারায় উল্লে¬¬খিত শর্তসমূহ অবশ্যই পালন করিতে হইবে।
৭।
বিবাহের শর্ত ভঙ্গ করিবার দন্ড-
বিবাহের যে কোন পক্ষ ৪ ধারার (খ) উপধারার শর্ত ভঙ্গ করিলে “বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন-১৯২৯”(২১ নং আইন) অনুযায়ী এক মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড অথবা এক হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দন্ডেই দন্ডিত হইবেন।
তৃতীয় পরিচ্ছেদ
বিবাহ বিচ্ছেদ
৮। বিবাহ বিচ্ছেদ-
এই আইন প্রর্বতিত হইবার পূর্বে অথবা পরে সম্পাদিত যে কোন বিবাহের স্বামী অথবা স্ত্রী নিন্মলিখিত যেকোন এক অথবা একাধিক কারণে আদালতে বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য আবেদন করিতে পারিবেন:
১. স্বামী অথবা স্ত্রী যদি একজন অন্যজনের উপর শারীরীক, মানসিক, অর্থনৈতিক ও যৌন নির্যাতন করিয়া থাকেন;
২. স্বামী অথবা স্ত্রী যেকোন একজন যদি হিন্দুধর্ম পরিত্যাগ করিয়া অন্যধর্ম গ্রহণ করিয়া থাকেন;
৩. স্বামী অথবা স্ত্রী যেকোন একজন যদি মানসিক ভাবে অসুস্থ থাকেন এবং চিকিৎসা করানোর পরও যদি সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা না থাকিয়া থাকে;
৪. স্বামী অথবা স্ত্রী যেকোন একজন যদি সংক্রামক কোন ব্যাধিতে আক্রান্ত হইয়া থাকেন যা চিকিৎসা দ্বারা ভালো হওয়ার সম্ভাবনা খুব ক্ষীণ অথবা ভালো হওয়ার সম্ভাবনা নাই বলিয়া চিকিৎসক সনদ প্রদান করেন;
৫. স্বামী স্ত্রীকে যদি একাধিক্রমে দুই বছর যাবত ভরণপোষণ প্রদান না করিয়া থাকেন;
৬. অত্র আইনের ৯ ধারা অনুযায়ী স্ত্রী স্বামীর কাছ থেকে পৃথকভাবে বসবাসকালীন সময় স্বামী যদি স্ত্রীকে ভরণপোষণ প্রদান না করিয়া থাকেন;
৭. অত্র অইনের ১১ ধারার প্রযোজ্য বিশেষক্ষেত্র ব্যতিত স্বামী যদি স্ত্রী বর্তমান থাকা অবস্থায় দ্বিতীয় বিবাহ করিয়া থাকেন;
৮. স্বামী অথবা স্ত্রী যদি ২ বছর যাবত নিরুদ্দেশ থাকেন;
৯. স্বামী অথবা স্ত্রী যেকোন একজন কোন অপরাধে জড়িত থাকার কারণে ৭ বছর দন্ডপ্রাপ্ত হইলে;
১০. স্বামী অথবা স্ত্রী যদি একজন অন্যজনকে অপরাধমূলক কাজ করিতে বাধ্য করিয়া থাকেন;
১১. স্বামী বিবাহের সময় পুরুষত্বহীন থাকিলে এবং তাহা আবেদন দাখিল করা পর্যন্ত বহাল থাকিলে;
তবে শর্ত থাকে যে, স্ত্রী গর্ভবতী থাকিলে সন্তান ভূমিষ্ঠ না হওয়া পর্যন্ত বিবাহ বিচ্ছেদ কার্যকরী হইবে না।
৮.ক। উভয় পক্ষের সম্মতিতে বিবাহ বিচ্ছেদÑ
(১)এই আইনে বর্ণিত বিধান মতে বিবাহের উভয়পক্ষ (স্বামী-স্ত্রী) একমত হইয়া বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য পারিবারিক আদালতে আবেদন দাখিল করিতে পারিবেন।
বিবাহটি বর্তমান আইন প্রর্বতিত হওয়ার পূর্বে বা পরে যখনই সম্পন্ন হউক না কেন স্বামী-স্ত্রী এই ভিওিতে আবেদন করিতে পারিবেন যে, তাহারা গত ছয়মাস ধরিয়া পৃথকভাবে বসবাস করিতেছেন, তাহাদের একসাথে বসবাস করা সম্ভব হইবে না এবং তাহারা আপোসে উভয়পক্ষ এই বিষয় একমত পোষণ করেন যে তাহাদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটা আবশ্যক;
(২) আদালত আবেদন পাওয়ার পর উভয়পক্ষের মতামতের উপর ভিওি করিয়া বিবাহ বিচ্ছেদের ডিক্রী প্রদান করিবেন ।
৯। বিবাহিতা হিন্দু নারীর পৃথক বাসস্থান ও ভরণপোষণের অধিকার -
১৯৪৬ সালের “বিবাহিতা হিন্দু মহিলাদের পৃথক বাসস্থান ও ভরণপোষণের অধিকার আইন” (১৯ নং আইন)অনুযায়ী আদালতের আদেশের মাধ্যমে হিন্দু নারীদের পৃথকভাবে বসবাস করার অধিকার এই আইনের কোন বিধানদ্ধারা বারিত হইবে না।
১০। বিবাহ বিচ্ছেদ প্রাপ্ত ব্যক্তিগণ কখন পুনর্বিবাহ করিতে পারিবেন-
কোন ডিক্রী মূলে বিবাহ-বিচ্ছেদের আদেশ জারী হইবার পর যখন কোন পক্ষই উক্ত আদেশের বিরুদ্ধে আপীল দায়ের না করিয়া থাকেন অথবা আপীল দায়ের করিলেও আপীল খারিজ হইয়া যায়, সেই ক্ষেত্রে যেকোন পক্ষ উক্ত চুরান্ত রায় ঘোষণার ৯০ দিন অতিক্রান্ত হইবার পর এই আইনের বিধানাবলী পালন সাপেক্ষে উভয় পক্ষ নিজেদের মধ্যে অথবা তৃতীয় কোন ব্যক্তির সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হইতে পারিবেন।
১১। বহুবিবাহ -
এই আইন প্রবর্তিত হইবার পর একজন হিন্দু নারী ও একজন হিন্দু পুরুষের মধ্যে বৈবাহিক সর্ম্পক বিদ্যমান থাকা অবস্থায় যদি কোন হিন্দু পুরুষ এক বা একাধিকবার অন্য কোন নারীর সাথে বৈবাহিক সর্ম্পক স্থাপন করিয়া থাকেন তাহা হইলে সেই ব্যক্তি সর্ব্বোচ সাত বছর কারাদন্ডে দন্ডিত হইবেন অথবা অনুন্য দুই বছর কারাদন্ডে দন্ডিত হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থদন্ডেও দন্ডিত হইবেন । এবং দন্ডিত হইবার পর দন্ডিত পুরুষের স্ত্রীর বিবাহে কোন বাধা থাকিবে না।
১২। প্রতিপক্ষের প্রতিকার প্রার্থনার অধিকারÑ
যে কোন বিবাহ বিচ্ছেদের মামলায় বাদী যে সকল কারণে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা দায়ের করিয়াছেন তাহা যদি প্রমানিত না হইয়া থাকে তাহা হইলে মামলাটি যথাযথ ভাবে খারিজ হইয়া যাইবে।
তবে আদালত যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হইয়া থাকেন যে, বাদী অসৎ উদ্দেশ্যে ও প্রতিপক্ষকে হয়রানী করিবার উদ্দেশ্যে আদালতে এই অভিযোগ আনয়ন করিয়াছেন এবং বাদী নিজেই এই আইনের ৮(১)(২) (১০) ধারার যেকোন এক বা একাধিক অভিযোগে অভিযুক্ত তাহা হইলে এই আইন অনুযায়ী প্রতিপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রতিপক্ষের অনুকূলে যেরূপ প্রযোজ্য সেইরূপ প্রতিকারের আদেশ প্রদান করিতে পারিবেন।
১৩। মামলা চলাকালীন ভরণপোষণ-
এই আইনানুযায়ী পরিচালিত কোন মামলা যেখানে আদালতের নিকট এরূপ প্রতীয়মান হয় যে, স্ত্রীর অবস্থা এরূপ যে, তাহার নিজের জীবনধারণের জন্য কোন স্বাধীন উপযুক্ত আয় নেই তাহা হইলে স্ত্রীর আবেদনক্রমে প্রতিপক্ষের নিজস্ব আয় বিবেচনা মতে আদালত প্রতিপক্ষকে দরখাস্তকারীর/ আবেদনকারীর স্বপক্ষে মামলা চলাকালীন তাহার ভরণপোষণ, যেইরূপ উপযুক্ত বিবেচনা করিবেন, সেই মতে প্রদান করিবার জন্য আদেশ প্রদান করিতে পারেন।
১৪। সন্তানের ভরণপোষণ-
বর্তমানে বলবৎ পারিবারিক আইন অনুযায়ী আদালত প্রতিপক্ষকে সন্তানের ভরণপোষণ প্রদানের আদেশ প্রদান করিবেন।
১৫। সন্তানের হেফাজত ও অভিভাবকত্ব-
আদালত কর্তৃক ১৮৯০ সালের অভিভাবকত্ব ও প্রতিপাল্য আইন (৮ নং আইন) অনুযায়ী সন্তানের হেফাজত ও অভিভাবকত্ব নির্ধারণ করা হইবে।
১৬। সম্পত্তির বন্দোবস্তকরণ-
এই আইনানুুযায়ী যে কোন বিচার কার্যধারায় আদালত ডিক্রীতে সেরূপ যে কোন ব্যবস্থা রাখিতে পারেন, যেটিকে আদালত উপযুক্ত বিবেচনা করিবেন, এবং যে গুলি বিবাহের সময় বা বিবাহ সম্পর্কিত বা বিবাহকালীন সময় এবং যেগুলি স্বামী ও স্ত্রী কর্তৃক একত্রে বসবাসকালীন সময় অর্জিত অথবা দখলীকৃত সম্পত্তি বা স্থায়ী আমানত বলিয়া প্রমানিত হইবে।
তবে শর্ত থাকে যে, স্ত্রীধন যেহেতু স্ত্রীর একক সম্পত্তি বা স্থায়ী আমানত তাই উক্তরূপ সম্পত্তি বা আমানত এইক্ষেত্রে ভাগ বা বন্টনযোগ্য হইবে না।
চতুর্থ পরিচ্ছেদ
বিচারের এক্তিয়ার এবং বিচার প্রক্রিয়া
১৭। কোন আদালতে দরখাস্ত/আবেদন দাখিল করা যাইবে-
এই আইনের অধীনে বিচারের এক্তিয়ার এবং বিচার প্রক্রিয়া পারিবারিক আদালত অধ্যাদেশ-১৯৮৫ বর্ণিত বিধান মোতাবেক সম্পন্ন হইবে।
তবে উক্ত আইনের ১১ ধারার ক্ষেত্রে আদালত বলিতে “জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত” ও “চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত” বুঝাইবে।
১৮। দরখাস্তের/ আবেদনের বিষয়বস্তু ও সত্যপাঠ-
(১) এই আইনানুযায়ী উপস্থাপিত প্রার্থিত প্রতিকারোপযোগী প্রতিটি আবেদনপত্রের প্রকৃতি, যার উপর দাবীটি প্রতিষ্ঠিত, তাতে পরিস্কার বর্ণনা থাকিবে যে দরখাস্তকারী/ আবেদনকারী ও অপর পক্ষের সহিত বিবাহ কোন অশুভ উদ্দেশ্য প্রনোদিত নহে।
(২) এই আইনানুযায়ী প্রতিটি দরখাস্তের বিবৃতি দরখাস্তকারী/ আবেদনকারী বা অন্য কোন উপযুক্ত ব্যক্তি দ্বারা সত্যনিরূপক বিবৃতি (াবৎরভরপধরঃড়হ) সহ হইতে হইবে যেটি দেওয়ানি মামলার আর্জিতে আবশ্যক এবং যেটি শুনানির সময় সাক্ষ্য হিসাবে ব্যবহৃত হইতে পারে।
১৯। ডিক্রী বা আদেশের বিরু দ্ধে আপীল-
এই আইনের অধীন প্রদও কোন ডিক্রী বা আদেশ দ্বারা সংক্ষুদ্ধ কোন পক্ষ পারিবারিক আদালত অধ্যাদেশে বর্ণিত বিধান মোতাবেক আপীল দায়ের করিতে পারিবেন।
২০। বিধি প্রণয়নের ক্ষমতাÑ
এই আইন কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে সরকার সরকারী গেজেটে প্রকাশিত প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবেন।
উক্তরূপ বিধি সাধারণভাবে নিম্নরূপ বিষয়ে প্রণীত হইবে, তবে শুধু এইগুলির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকিবে না, যথা;
ক) বিবাহ রেজিস্টারের যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা;
খ) বিবাহ রেজিস্টারের দায়িত্ব ও কর্তব্য;
গ) বিবাহ রেজিস্টার কতৃর্ক বিবাহের রেকর্ড হিসাবে রেজিস্টার পূরণ ও সার্টিফিকেট প্রদানের প্রক্রিয়া;
ঘ) আবেদন পত্রের নমুনা;
ঙ) বিবাহের সার্টিফিকেটের নমুনা;
চ) অন্যকোন বিষয় যাহা এই আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিতকরণের ক্ষেত্রে সরকার প্রয়োজন মনে করেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।