আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমার বহুত হাসি পাইছে। যদি চান ট্রাই মাইরা দেখতে পারেন, আপনার হাসি না ও আসতে পারে!!!

আমার কিছু বলার ছিল বন্ধুরা, আপনাদের মধ্যে এমন কেউ আছেন, যাঁরা মদ্যপান করেন? না, না, দাঁড়ানোর দরকার নেই। বলতে চাইছিলাম যে, তাঁরা আমাকে ভালোমতো বুঝতে পারবেন। ঘটনা হলো এই যে একদিন আমার স্ত্রী আমাকে নিয়ে গেল ডাক্তারের কাছে। নিজের থেকে আমি কস্মিনকালেও যেতাম না। কিন্তু সে যেভাবে ঘ্যানর ঘ্যানর শুরু করল, ‘চলো না, প্লিজ, চলো! এখন খুব সহজেই এটার চিকিৎসা করা যায়।

ট্যাবলেট খাবে, তারপর হিপনোসিস, সবশেষে মনোরোগ চিকিৎসা। ব্যস, আর কখনো মদ খেতে ইচ্ছে করবে না। এমনকি উৎসবের সময়েও। ’ ভাবলাম, যাই, মজা দেখে আসি। আমি মদ খেতে চাইব না, এ কখনো হতেই পারে না।

আমার পানপ্রীতির মুখোমুখি হলে বিজ্ঞান ও টেকনোলজির বিপ্লবও ব্যর্থ হয়ে যাবে। গেলাম একদিন ডাক্তারের কাছে। ঢুকতে না ঢুকতেই তিনি প্রশ্ন করলেন, ‘আপনি সত্যি সত্যি মদ খাওয়া ছেড়ে দিতে চান?’ আমি বললাম, ‘স্ত্রী চায়। ’ -‘আর আপনি?’ ‘আমি তো চাই না। ’ -‘একদম ঠিক কথা!’ বললেন তিনি।

‘মনের সুখে মদ খেতে থাকুন। ’ আমি তো আকাশ থেকে পড়লাম! বলে কী! ‘মনের সুখে মদ খেতে থাকুন!’ এঁর কাছে এলাম কেন তাহলে? আমি বললাম, ‘নাকি একটু চেষ্টা করে দেখব?’ -‘আপনার মাথা খারাপ নাকি,’ ডাক্তার বললেন। ‘কোনো দরকার আছে?’ ‘দরকার আছে তো! মদ খাওয়া তো ক্ষতিকর। ’ -‘এ কী শুরু করলেন! মদ খাওয়া আপনার জন্য ক্ষতিকর হতে যাবে কেন?’ ‘আমার জন্য?’ -‘হ্যাঁ। ’ ‘এই ধরুন, ঠেসে মদ গিলে কখনো কখনো আমি মারপিট শুরু করে দিই।

’ -‘ঠিকই করেন। মারপিটই যদি না করলেন, তাহলে মদ খাওয়ার শান্তিটা কোথায়? স্মৃতি হিসেবে কিছু থাকা প্রয়োজন। ’ ‘পরদির সকালে এমনিতেই আমার কোনো কিছু মনে পড়ে না। ঘুম থেকে উঠে দেখি, চোখের নিচে কালশিরে দাগ। কে মেরেছে, কখন, কিছুই মনে করতে পারি না।

’ -‘সেটাই ভালো বরং,’ ডাক্তার বললেন। ‘মনে পড়লেই আবার মারপিটের প্রয়োজন দেখা দিত। আর মারপিট করতে গিয়ে আবার মার খেয়ে আসার আশঙ্কা। ’ ‘ঠিকই বলেছেন। মাতাল হলে কোনো হুঁশ-জ্ঞান থাকে না আমার।

ট্রলিবাসের উদ্দেশেও অশ্লীল গালিগালাজ করতে পারি। ’ -‘তাতে অসুবিধে কোথায়? মাতাল না থাকলে আপনি তো এটা করতে পারতেন না। ’ ‘তা ঠিক। ’ -‘সারা জীবন মুখ বুজে সব সহ্য করতে হবে নাকি!’ ‘তা না হয় বুঝলাম, কিন্তু মাতাল হয়ে আমি অনেক সময় রাস্তার ওপরে ঘুমিয়ে পড়ি। ’ -‘এতেও খারাপ কিছু নেই।

খোলা হাওয়ায় শুয়ে ঘুমের মজাই আলাদা। মাতাল না হলে রাস্তার ওপরে কখনো ঘুমোতে পারতেন?’ ‘কিন্তু বউ যে পরে রাগারাগি করে!’ -‘রাগারাগি করে, কারণ আপনি কম মদ খান। বেশি করে খাবেন এর পর থেকে। ’ ‘তাহলে কী হবে?’ -‘তাহলে বউ আপনাকে ছেড়ে চলে যাবে। বাচ্চাকাচ্চাসহ।

’ ‘ওদের ছাড়া আমি থাকব কী করে?’ -‘কেন! কত আরামের ব্যাপার না? ওরা থাকলে প্রাণখুলে গালিগালাজ করতে পারেন না, কুড়োল হাতে নিয়ে ছোটাছুটি করতে পারেন না ফ্ল্যাটের ভেতরে, রাস্তায় ঘুমোতে পারেন না মনের আনন্দে। এখন ভেবে দেখুন, কী শান্তি! পরিবারে কেউ নেই, তাদের পেছনে টাকা খরচ করতে হবে না। বেতন পেয়ে সে দিনই সব টাকা উড়িয়ে দিতে পারবেন। ’ ‘কিন্তু তার পরে চলব কীভাবে?’ -‘আজ একজনের কাছে কিছু চেয়ে নেবেন, অন্যদিন আরেকজনের কাছে। ’ ‘যখন কেউ আর দিতে চাইবে না?’ -‘তখন ভিক্ষে করা যেতে পারে।

ঘুমোবেন তো পিচঢালা পথের ওপরেই। সেই অবস্থায় হাতটা একটু বাড়িয়ে ধরা কি খুব কষ্টের ব্যাপার হবে?’ ‘কিন্তু আমার মতো ভদ্রগোছের কাউকে লোকজন পয়সা দেবে?’ -‘ভদ্রগোছের? আরে না! তত দিনে আপনার দিকে তাকালেই মানুষের মনে দয়া জেগে উঠবে। ’ ‘কিন্তু স্বাস্থ্যের কী দশা হবে তখন? মদ খেলে বুড়ো বয়সে ভুলো-মন রোগ হয়, হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কাও থাকে। ’ -‘সে ভয় আপনার নেই। আপনি তত দিন বাঁচবেন না।

’ ‘তার মানে আমি খুব শিগগির মারা যাব?’ -‘না, না, খুব শিগগির কেন! এখনো বহুদিন বাঁচবেন। অন্তত বছর তিনেক তো বটেই। চাইকি পাঁচ বছরও হতে পারে। ’ ‘আর তারপর?’ -‘তারপর আর কী! অক্কা যাবেন! মানে, পটল তুলবেন! তবে তাতে কী! এই দু বছর তো মনের আনন্দে কাটাবেন। ’ ‘বউ আমার কবর দেখতেও আসবে না?’ -‘কেন আসবে? তার তো তখন অন্য স্বামী থাকবে।

’ আমি আর সহ্য করতে পারলাম না। ডাক্তারের কেবিন থেকে বের হয়ে চিৎকার করে বউকে বললাম, ‘আমি তোমাকে দেখাচ্ছি অন্য স্বামী! তুমি আমার সঙ্গেই থাকবে। মদ খাওয়া ছেড়ে দেব। এবং তুমি আমার দিকে নজর রাখবে। ’ সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জুলাই ০৪, ২০১ সংগ্রহীত: ।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।