পথ্য তো রোগীরও লাগে না ভালো! যদিও এটা তার রোগ সারিয়ে তুলতে সাহায্য করবে,তথাপিও! এই পোস্টটি পড়ার পূর্বে পূর্ববর্তী পোস্টটি পড়ার অনুরোধ করছি লিঙ্ক: (কেননা, এই পোস্টটি উক্ত পোস্টের ২য় অংশ) http://www.somewhereinblog.net/blog/gurudevgi/29519008
[হাদীস অমান্যকারীদের জন্য এই পোস্ট নয়, কেননা হাদীস থেকে এখানে উদ্ধৃতি প্রদান করা হয়েছে। তাদের বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করতে বিরত থাকতে বলা হচ্ছে। তাদের মন্তব্য এখানে প্রকাশ করা হবে না]
পরাক্রান্ত প্রজ্ঞাময় দয়াময় নিজের পরিচয় প্রদানকরতঃ উক্ত গুণবাচক নামে তাঁকে ডাকতে বলেছেন।
আল্লাহ্ বলেন- وَلِلَّهِ الْأَسْمَاءُ الْحُسْنَى فَادْعُوهُ بِهَا
“আল্লাহর অনেক সুন্দর সুন্দর নাম আছে, সেই নামের মাধ্যমে তোমরা তাঁকে ডাক। " (সূরা আরাফঃ ১৮০)
[যে কোন (মন্দ/খারাপ/অর্থহীন/বিব্রতকর/সৃষ্টির সমকক্ষ) নাম বানিয়ে নিয়ে সে নামেই যদি তাঁকে ডাকার কথা বিধিত হত তবে উক্তআয়াতাংশ নাযীলের অপরাপর উদ্দেশ্য কি হতে পারে?]
الله (আল্লাহ) মহান সেই স্রষ্টার এমন একটি গুণবাচক নাম যার কোন দ্বিবচন বা বহুবচন নেই; নেই কোন বিপরীতার্থক।
যা সর্বাস্থায় 'এক' এবং অদ্বিতীয় অর্থ বহন করে। ডান-বাম-উপর-নীচ সর্ব দিক থেকে নামটির গুণাবলী একই থাকে। অক্ষরমাত্রা কমবেশীকরণেও তাহার গুণাবলীর অথবা অর্থের হেরফের হয় না, সামান্যতম ক্ষুন্ন হয় না। আল্লাহ -ই আল্লাহর পছন্দের গুণবাচক নাম যেমন, মনোনীত দ্বীন হিসেবে একমাত্র 'ইসলাম' ই তাঁর পছন্দের। এইরুপ সর্বমোট (হাদীসে উল্লেখিত) ৯৯টি গুণবাচক নামের উল্লেখ রয়েছে এবং الله (আল্লাহ) পরমকরুনাময় রাব্বুল আলামীনের গুণবাচক ৯৯ নামের ‘প্রথম' নাম।
ا ل ل ه = আলিফের স্থান ১, লাম এর স্থান=২৩, হা এর স্থান=২৬
১+২৩+২৩+২৬=৭৩
ا ب ت ث ج ح
خ د ذ ر ز س
ش ص ض ط ظ ع
غ ف ق ك ل
م ن ه و ي
সূরা আরা’ফের ১৮০ নং আয়াতের যে অংশে ঐসমস্ত সুন্দর সুন্দর নাম ধরে ডাকতে বলা হয়েছে, উক্ত আয়াতাংশের অক্ষর সংখ্যা ২৬ আল্লাহ্ বলেন- وَلِلَّهِ الْأَسْمَاءُ الْحُسْنَى فَادْعُوهُ بِهَا = ২৬ অক্ষর
৭৩ + ২৬ = ৯৯
وَلِلَّهِ الْأَسْمَاءُ الْحُسْنَى فَادْعُوهُ بِهَا وَذَرُوا الَّذِينَ يُلْحِدُونَ فِي أَسْمَائِهِ سَيُجْزَوْنَ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ ﴿7:180﴾
And to Allah belong the best names, so invoke Him by them. And leave [the company of] those who practice deviation concerning His names. They will be recompensed for what they have been doing.
আর আল্লাহর জন্য রয়েছে সব উত্তম নাম। কাজেই সে নাম ধরেই তাঁকে ডাক। আর তাদেরকে বর্জন কর, যারা তাঁর নামের ব্যাপারে বাঁকা পথে চলে। তারা নিজেদের কৃতকর্মের ফল শীঘ্রই পাবে।
(তাফসীরে মা’আরেফুল এর চতুর্থখন্ডের পৃষ্ঠা ১৪১-১৪৬ পড়ার অনুরোধ রইল)
[বিকৃত নাম অথবা বানানো নামের বিষয়টি বুঝার সুবিধার্থে নীচে সাটামাটা কথায় দু’টো উদারহণ টানা হল]
ঈশ্বরও যা ভগবানও তাই।
একটা নামে ডাকলেই হল। আর এমনটি নয় যে আমরা যাকে বিভিন্ন নামে ভিন্ন ভাষায় ডাকছি তিনি তা বোঝেন না! তিনি তো সব মনের সব ভাষায় বোঝেন, ইংরেজিতে গড (GOD) বলা আর বাংলায় খোদা, সংস্কৃতি ভাষায় ঈশ্বর, হিব্রু ভাষায় ইলা বা ল্যাটিন ভাষায় ডিউস, আরবি ভাষায় আল্লাহ বলা একই কথা। গড, ভগবান, আল্লাহর মধ্যে পার্থক্য কোথায়? কত দেশের মানুষ কত ভাষায় না তাঁকে ডাকে? কেউ বলে আহুরা মাজদা, কেউ বলে ওহে গুরু, কেউ বলে এক ওমকার আবার কেউ বলে জেহোভা। তিনি কি তাদের ডাক শুনেন না?
-তোমার নাম তো যোসেফ? এটা কোথায় পেলে? বাবা-মা অথবা আত্মীয়-স্বজনরা দিয়েছে। আজ এই নামটাই তোমার সব চেয়ে বড় পরিচয়।
সবাই তোমাকে যোসেফ নামে চিনে-জানে (কারণ, সবাইকে তুমি এই নামটাই জানিয়েছ)। নামটা তোমারও অপছন্দের নয় বৈকি? তোমার নাম জানা সত্ত্বেও কেউ যদি তোমাকে শ্রীকুট্টুস কুমার হুট্টুষ বলে ডাকে তবে তোমার কেমন লাগবে? তুমি ভাববে সে তোমার সাথে অশোভন আচরণ করছে নয়ত তোমাকে বিব্রত করার চেষ্টা করছে অথবা কারো সামনে তোমাকে লজ্জিত-হেয়প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করছে। তাই নয় কি? আবার মনে করো, তুমি এমন এক নির্জন জাগায় গিয়েছ সেখানে তুমি ছাড়া আর কেউ নেই। হঠাৎ দূর থেকে তোমার বন্ধু তোমাকে শ্রীকুট্টুস কুমার হুট্টুষ বলে ডাকছে (যদিও সে তোমার নাম জানে)। তুমি কি তার ডাকে সাড়া দিবে? যেহেতু সেখানে কেউ নাই; সেহেতু তুমি ভাববে তোমাকে ছাড়া অন্য কাউকে সে ডাকছে না।
তারপরও মনে এইরূপ প্রশ্নের উদয় হতে পারে যে, সে তোমার নাম জানা সত্ত্বেও কেনো বিব্রতকর নামে ডাকছে? তবে কি সে নাম নিয়ে ক্রীড়া-কৌতুক করছে না তো? আর যে তোমাকে ডাকছে, তোমাকে যদি তার ভীষণ প্রয়োজন হয় তবে কি সে তোমার কাছ থেকে কোনো সাহায্য পাবে? তুমি তো তার ডাককে ক্রীড়া-কৌতুক ভেবেই আপন কাজে ব্যস্ত থাকবে। তোমার আসল নামে তোমাকে ডাকলে অবশ্যই তুমি তার সাহায্যে আসতে। সে যদি ভিন্ন নামে ডেকে ক্ষতিগ্রসত্দ্য হয়, সে কি তোমার দোষ? নিশ্চয় নয়। কেননা, তুমি তো তোমার নাম, ঠিকানা সাক্ষাতেই তাদেরকে জানিয়ে দিয়েছ। ধর, তুমি তোমার বন্ধু মহলকে বলেছ তোমার নাম যোসেফ, বাড়ির নং-২১।
কেউ যদি ১২ নং বাড়িতে গিয়ে তোমাকে শ্রীকুট্টুস কুমার হুট্টুষ নামে ডাকে, তবে কি তোমার সাক্ষাত পাবে? ঠিক তেমনি, যাকে তোমরা ডাক তিনি তাঁর নাম তোমাদেরকে বলে দিয়েছেন, নিজেকে তোমাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন। এরপরও যদি ভিন্ন নামে তাঁকে ডাক তবে কি তিনি সে ডাকে সাড়া নাও দিতে পারেন? কেননা অন্য যে সব নামে তোমরা তাঁকে ডাক তিনি সে সম্পর্কে জানা সত্ত্বেও তোমাদের ডাকে সাড়া নাও দিতে পারেন। কারণ, তিনি ঐ সব নাম নিজের জন্য পছন্দ করেন না। যেমন, যোসেফ তার জন্য পছন্দ করবে না শ্রীকুট্টুস কুমার হুট্টুষ। যেহেতু ওটা ওর নাম নয়।
তাই, যার যে নাম সে নামেই ডাকা ভালো- আশা করা যায় তাতে অমঙ্গল হবে না। যোসেফের আরো দু' চারটে ফ্যামেলি নাম থাকতে পারে। যেটা সমাজে ততটা প্রচলিত নয়, খুব কম লোকই তাকে সে নামে চিনে। তারপরও কেউ যদি তাকে সেই সব নাম ধরে ডাকে তবে সে নিশ্চয় তার ডাকে সাড়া দিবে। ঠিক তেমনি যাকে তোমরা ডাক তারও কিছু উপনাম আছে।
সে সব নামেও তোমরা তাঁকে ডাকতে পার। তবে নাম বানিয়ে নিয়ে সে নামে ডেকে নিজেদের কল্যাণকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার ধৃষ্টতা না করাই ভালো।
- আচ্ছা, GOD (গড) কে উল্টা দিক থেকে বানান করলে কি দাঁড়ায়... বাংলাতেও কিন্তু একই হয়। অর্থটাও থাকে অভিন্ন। আবার এই গড (GOD) বলতে Great Goodness Omnipresence Omnipotence Omniscience One and Only Divine Deity অর্থাৎ মহান পরমআত্মা যিনি সদাসর্বদা বিরাজমান পরাক্রমশীল সর্বজ্ঞ জ্ঞানময়ী এক এবং অদ্বিতীয় উপাস্য।
আবার GOD শব্দটিকে যদি ভাঙ্গা হয় এবং প্রতিটি অরের মান নির্ণয় করা হয় তবে দেখা যায়, ইংরেজী বর্ণমালায় G এর স্থান ৭ O এর স্থান ১৫ D এর স্থান ৪ । ৭, ১৫, ৪ এর যোগফল দাঁড়ায় ২৬। আর ইংরেজী বর্ণমালার মোট বর্ণমালার সংখ্যাও ২৬ টি। অর্থাৎ GOD শব্দটি ইংরেজী ভাষীদের জন্য ইংরেজী বর্নমালার অনাকাংতি বন্ধন। এববার, ভগবান এর ভ অরটা বাদ দিলে থাকে গবান।
গবান শব্দের কোন অর্থ বাংলা অবিধানের খুঁজে পাওয়া যায়নি। আবার গবান এর গ বাদ দিলে থাকে বান। যার অর্থ বন্যা। বান এর বা বাদ দিলে থাকে ন। ন অর্থ হল নাই।
অর্থাত কিছুই নাই। একটু ভিন্ন করে ভেবে দেখা যাক, ভ গ বা ন শব্দটার মর্মার্থ। ভ তে ভগবত। ভগবত হল হিন্দু ধর্মের আরেক নাম। গ তে গরু।
বা বানর। ন তে নাই। যার অর্থ দাঁড়ায় ভগবতে গরু বানর ছাড়া কিছুই নাই। লক্ষ্য করে দেখ যাক, শ্রীরামের জীবনকালে বানরদের ভূমিকা (রামায়নের এক-তৃতীয়াংশ) আর শ্রীকৃষ্ণের জীবনকালে গরুর ভূয়ষি প্রশংসা। এই কারণে তাকে গোপাল বা গোনন্দনও বলা হয়ে থাকে।
সে কথার কথা... তোরা আবার রাগ করিসনে... ভ তে ভগবানও হতে পারে, ভাগ্যবিধাতাও হতে পারে আবার ভীম-ভানু-ভীদুর_ভাসাও হতে পারে। গ তে গঙ্গা-গণেষ-গায়িত্রী, বা তে বামুন-বাসুদেব-বাসন্তী, ন তে নমঃ-নারায়নও হতে পারে। ভগবান শব্দের অর্থ হতে পারে ভাগ্যবিধাতা গঙ্গা-গায়িত্রী-বাসুদেব কে নমঃ। যে যেভাবে নেয়। তবে নাম বানিয়ে নিয়ে সে নামে ডেকে নিজেদের কল্যানকে দূরে সরে দেওয়ার ধৃষ্টতা না করায় ভাল।
অনেক সময় এমনও বলা হয়েছে যে, ভগবান নামটি মানুষের ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা হয়ে থাকে; ছয়টি সুনির্দিষ্ঠগুণ থাকলে কতকমানুষেও ভগবান বলে খ্যাত দেওয়া যায়। কৃষ্ণ বা রাম অথবা ব্রহ্ম-বিষ্ণু-শিবকেও ভগবান বলা হয়। শ্রীনিমাইকে বলা হয় মহাপ্রভু।
অনেকেই বলে উঠে তবে মানুষের নাম ‘রহমান’ বা ‘রাজ্জাক’ অথবা ‘করিম’ কেন? শুধু আল্লাহর গুণবাচক নামে মানুষের নাম রাখতে নিষেধ করা রয়েছে। আব্দুর রহমান, আব্দুর রাজ্জাক অথবা আব্দুল করিম রাখাতে কোন দ্বিতম নেই।
কিন্তু নামের প্রথম অংশ বাদ দিয়ে কেবল শেষ অংশ ধরে ডাকার অনুমতিও নেই এক্ষেত্রে। যেমন ধরুন, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, কেহ যদি কেবল ‘লা ইলাহা’ এর মধ্যই সীমাবদ্ধ থাকে তবে তার অর্থ দাঁড়াবে ‘ নাই কোন ইলাহ’; পরবর্তী পদটি যুক্ত হলে হবে ‘আল্লাহ ছাড়া’। আব্দুর রহমান অর্থাৎ রহমানের বান্দা। কোন মানুষ শুধু রহমান হতে পারেন না। নবীজি সা: থেকে অনেক হাদীস আছে এই মর্মে যে, নবীজি সাহাবায়ে কেরামের শিরকী নাম পাল্টে মুসলিম নাম দিয়েছেন।
যেমন আবু হুরায়রা রা: এর কাফের থাকা অবস্থায় তার নাম ছিল আব্দুস শামশ(সূর্যের বান্দা), মুসলমান হবার পর নবীজি সা: তার নাম পাল্টে রাখলেন আব্দুর রহমান। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।