তিন বছর ধরে ফুসফুসের ক্যানসারে ভুগছিলেন বিপুল ভট্টাচার্য। গতকাল শুক্রবার সকাল নয়টা ২৫ মিনিটে না ফেরার দেশে চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের এই শিল্পী। শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ধানমন্ডির আহমদ মেডিকেল সেন্টারে। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬১ বছর। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গুণী এই শিল্পীর মৃত্যুতে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তাঁর দীর্ঘদিনের সহকর্মী ও সহযোদ্ধারা।
ফকির আলমগীর
বিপুল ভট্টাচার্যের চেতনার মূলে ছিল গণসংগীত। আমরা একসঙ্গে অনেক জনপদে গান গেয়েছি। বিপুল সব সময় প্রগতি ও অসাম্প্র্রদায়িকতার পক্ষে কাজ করেছেন। তাঁর মতো একজন বড় মাপের শিল্পীকে কোনো রাষ্ট্রীয় সম্মানে ভূষিত করা হয়নি—বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। সাড়ে তিন বছর তিনি ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করেছেন।
প্রচারবিমুখ মানুষ ছিলেন; কেবল কাজ করে যেতেন। তাঁর চলে যাওয়ায় বড় ক্ষতি হয়ে গেল।
সুজেয় শ্যাম
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে একজন শব্দসৈনিক হিসেবে বিপুল ভট্টাচার্যের অবদানের কথা সবাই জানেন। অনেক বড় মনের একজন মানুষ ছিলেন বিপুল। অত্যন্ত বন্ধুবৎসল ছিলেন।
সবাইকে আপন করে নেওয়ার অন্য রকম ক্ষমতা ছিল তাঁর। এত তাড়াতাড়ি যে তিনি চলে যাবেন, সেটা কল্পনা করিনি।
ইন্দ্রমোহন রাজবংশী
বিপুল ভট্টাচার্যদের মতো মানুষেরা একবারই জন্ম নেন। বিপুল ভট্টাচার্যের মৃত্যুতে বাংলাদেশের একটি অসম্ভব উজ্জ্বল নক্ষত্রের পতন হলো। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের মেধাবী এই কণ্ঠশিল্পীকে রাষ্ট্রীয়ভাবে কোনো সম্মাননা জানানো হয়নি, এটা আমাদের সবার লজ্জা।
মূল্যবোধের এই অবক্ষয়ের সময়ে বিপুল ভট্টাচার্যের মতো মানুষের প্রয়োজন ছিল অনেক বেশি।
তিমির নন্দী
মুক্তিযুদ্ধে কণ্ঠযুদ্ধে আমার সহযোদ্ধা ছিলেন বিপুল। ছিলেন আমার একজন বন্ধুও। ১৯৬৯ সালে এক প্রতিযোগিতায় পল্লি গানে আমি হয়েছিলাম দ্বিতীয় আর বিপুল প্রথম। সেই থেকে আমাদের পরিচয় এবং বন্ধুত্ব।
খুব কম শিল্পীই বিপুলের মতো এত লোকগান গেয়েছেন। আবদুল আলীম ছিলেন একজন, আরেকজন আমাদের বিপুল ভট্টাচার্য। বিপুলের মৃত্যুতে আমরা হারালাম এ দেশের ইতিহাসের একজন সাক্ষীকে। বিপুল অসুস্থ হওয়ার পরপরই তাঁকে নিয়ে বিটিভি ও দেশ টিভিতে অনুষ্ঠান করেছিলাম। সব সময় চেষ্টা করেছি কিছু একটা করতে।
চন্দনা মজুমদার
বিপুল ভট্টাচার্য স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রের শিল্পী। ঠিক তেমনি স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে লোকগান প্রতিষ্ঠিত করার ক্ষেত্রেও ভূমিকা রেখেছেন। এত দরাজ কণ্ঠস্বরের লোকগানের শিল্পী আমি আমার জীবনে খুব কম দেখেছি। সব সময় বেশ আড়ালে থাকতে পছন্দ করতেন। গান করে গেছেন নিজের জন্য, মানুষের জন্য।
তাঁর মৃত্যুতে লোকসংগীতের অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।