বুকের ভেতর বহু দূরের পথ... বাঙ্গালীরা পৃথিবীর যে প্রান্তেই যাক না কেন দুটো বিষয় নাকি খুব বেশি মিস করে। এক হচ্ছে রসগোল্লা আরকেটা হচ্ছে আড্ডা! আমি অবশ্য অনেক কিছুই মিস করবো (যদি কখনও দেশের বাইরে যাই আর কী!)। সেটার লিস্টি অনেক বড় হবে। তবে সবচেয়ে যেটা মিস করবো সন্দেহাতীতভাবেই সেটা হচ্ছে 'আড্ডা। হোক সেটা বিষয়ভিত্তিক, হোক সেটা আবোল তাবোল কথার ফুলঝুরি ।
আড্ডা শুধু একবার শুরু হয়ে গেলেই হলো...
অনেকগুলো ব্লগীয় আড্ডা হলেও কখনও আমার যাওয়া হয়নি। এবারই প্রথম গেলাম। না গিয়ে উপায় আছে! এ যে আমার সবচেয়ে প্রিয় বিষয় সিনেমা নিয়ে আড্ডা, সিনেমাখোরদের আড্ডা!
এত মানুষ হবে কল্পনাও করিনি। ধারনা ছিলো খুব বেশি হলে বিশজন। কিন্তু সিনেমাখোর আর অ-সিনেমাখোর সব মিলিয়ে শেষ পর্যন্ত আড্ডায় উপস্থিতির সংখ্যা ৬০-৭০জন! আরও বেশিও হতে পারে।
আড্ডায় অনেকের সঙ্গে পরিচয় হলো। ভার্চুয়াল জগতের প্রিয় অনেক মানুষকে কাছ দেখতে পেলাম। তবে আফসোস সবার সঙ্গে পরিচিত হতে হতেই সময় পার। প্রাণখুলে আড্ডা দিতে পারিনি। তাই শীর্ঘই পরবর্তী আড্ডা আয়োজনের প্রস্তাব দিচ্ছি।
আমার কাছে আড্ডার কোন ছবি নাই যে ছবিব্লগ দিবো। তার চেয়ে বরং আড্ডায় কাকে কেমন লাগলো সেইটা বলি-
পুশকিন- আড্ডার মূল আয়োজক। আড্ডাটি হওয়ার পেছনে তার অবদান অনেক। দুইজন ব্লগারকে আড্ডার আগে থেকেই চিনতাম। তাদের একজন পুশকিন ভাই।
দারুন ব্যক্তিত্ত্বসম্পন্ন লোক। কন্ঠটা খুব সুন্দর। দেখতেও অচাম
ওয়াহিদ সুজন- আরেকজন ব্লগার যাকে আগে থেকেই চিনি। কথা বলার চেয়ে শ্রোতা হিসেবেই থাকতে পছন্দ করেন।
ছাইরাছ হেলাল ও জিসান শা ইকরাম- এ দু'জনকে দেখার ইচ্ছে ছিলো অনেক।
অত্যন্ত জনপ্রিয় এই দুই ব্লগারের সঙ্গে কথা বলা বেশ কষ্টকর ব্যাপার ছিলো। কারন প্রচুর মানুষ তাদেরকে ঘিরে রেখেছিলো। ব্লগের মতই বান্তবেও তাদেরকে খুবই আন্তরিক মনে হয়েছে।
দারাশিকো-দি বস! লেখালেখির পাশাপাশি ভালো বক্তা। সিনেমা বিষয়টি ছাড়াও উনার সঙ্গে আমার আরেকটা মিল আছে।
আমাদের ঘুরাঘুরি করতে ভাল্লাগে।
স্নিগ- গুরু! গুরু! গুরু! অমায়িক এক ব্যক্তি। এ লোকটাকে দেখার খুবই খায়েশ ছিলো। তবে তার সঙ্গে বেশিক্ষণ আড্ডা দিতে পারিনাই।
নাফিজ মুনতাসির- ৬নং পয়েন্টটা ঠিকমত ক্লিক করে নাই দেইখা আমিও যারপরনাই কষ্ট পাইছি।
আপাতত মুভি দিয়া পেট ভরেন। নেক্সট টাইম দেখা হইলে কাচ্চি খামু আপনে আর আমি
ফেলুডার চারমিনার-ফেলুদাও মনে হয় কথা কম বলতে পছন্দ করেন। তবে তার সিনেমাজ্ঞান যে প্রখর সেটা মনে হয় নতুন করে বলার কিছু নাই।
মুনতা-আরেকজন অমায়িক লোক। মুনতা ভাইকে মনে হয় আমি আগেও কোথাও দেখছি!
Neelpoddo-কখনও দেখা না হলেও যোগাযোগ ছিলো।
দারুন ডায়নামিক একজন মানুষ এবং প্রচারবিমুখ বলেই মনে হলো।
তন্ময় ফেরদৌস- সুইট বয় উইথ সুইট স্মাইল! আমার একটা বন্ধু আছে হবুহু তন্ময় ভাইয়ের মত দেখতে। এ কথা বলার পর তন্ময় ভাই জানালো সবাই নাকি তাকে দেখলে একই কথা বলে। সবারই পরিচিত কারো না কারো সঙ্গে তন্ময় ভাইয়ের চেহারায় মিল আছে।
দিপ- আগামী দিনের কান্ডারী।
সবার কথা খুব মনোযোগ দিয়ে শুনছিলো। সবার কাছ থেকেই সিনেমা বানানোর কলাকৌশল নিয়ে নিচ্ছিলো জ্ঞান। চলচ্চিত্র বানানোর স্বপ্নে বিভোর এই বালকের জন্য শুভকামনা।
নবিতা-প্রথম পরিচয়। ব্লগে এখনও সেফ হননি।
শুভকামনা থাকলো তার জন্য। আড্ডা নিয়ে একটি রম্যব্লগ লিখছেন। অপেক্ষায় আছি....
আরজু পনি-আপুর সঙ্গে খুব একটা কথা না হলেও তাকে ভালো লেগেছে। কারন তিনি খুব মিশুক। ছটফটেও বটে।
ব্লগ আর ফেসবুকে তার লেখা দেখে যেমন একটা ধারনা পাওয়া যায় তিনি হবহু সেরকমই।
ইউসুফ খান- অনেক দেরিতে এসেছিলেন। খুবই লাজুক প্রকৃতির। সবার সঙ্গেই পরিচিত হয়ে কথা বলতে কেমন যেন লজ্জা পাচ্ছিলেন। ব্লগে দুর্দান্ত সব পোস্ট দেন তিনি।
বাস্তবে এতটা লাজুক হবেন আশা করিনাই।
শিপু ভাই- ব্যাপক জোশিলা মনে হইছে আমার দেশী ভাইরে। আপনার অফিসে আইতাছি একদিন। আড্ডামু।
মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম- হিংসা! হিংসা! এত ঘুরাঘুরি ঠিকনা।
অ.ট. (আমি আমার সিভি নিয়া আইতাচি )
স্বর্ণমৃগ-ধীর-স্থির একজন মানুষ। ইনিও কথা কম বলেন।
শাহেদ খান- আমার ক্যাম্পাসের বড় ভাই। অনেক মোটা হয়ে গেছেন
রেজওয়ান মাহবুব তানিম- আমার স্কুল ফ্রেন্ড। এবারের বইমেলায় কবিতার বই প্রকাশিত হচ্ছে এই কবির।
দূর্যোধন- কে বেশি রহস্যময় চরিত্র! ফিফা না দূর্যোধন??
আড্ডায় আলোচনার কেন্দ্রে থাকা এই ব্লগার এলেন, দেখলেন এবং কিছু বুঝে উঠার আগেই চলে গেলেন। ভারিক্কী চালের একজনকে দেখবো বলে আশা করেছিলাম। কিন্তু আবরও তারুন্যেরই জয় দেখলাম!
মজার ব্যাপার নাফিজ আর দারাশিকো ভাই অথৈ সাগর-কে দূর্যোধন ভেবে সন্দেহ করছিলেন। মোটামুটি পরিকল্পনাও হয়ে গিয়েছিলো অথৈ সাগর-কে গিয়ে সবাই মিলে ধরবো। তার আগেই সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে দূর্যোধন মহাশয় উপস্থিত হয়ে আমাদের পরিকল্পনায় পানি ঢেলে দিলেন।
(বিয়াফক আফসুসের ইমো হইবে)
আরো পরিচয় হলো গুরুজী, নাহোল, আর.এইচ.সুমন, রাষ্ট্রপ্রধান, সাকিন-উল-ইভান, ছোটমির্জা, রাজসোহান, জাহাজী পোলা, আব্দুল্লাহ আল মনসুর, নষ্টকবি, মিরাজ ইজ,ফয়সাল তূর্য, ইশতিয়াক আহমেদ চয়ন, তীর্থক হাসান রুবেল, নিশাচর ভবঘুরে সহ অনেকের সঙ্গে।
সহচর আর আমি চানাচুর নিয়ে ঘুরলেও আমার ছবি কেউ তুইলা দিলো না।
(ব্যাপক কান্দনের ইমো হইবে)
আহাদিল- আমার এই বড় বইনটা আড্ডায় আসছিলো কিন্তু আমি পরিচিত হতে পারি নাই, কথাও বলতে পারিনাই তার আগেই চইলা গেলো
যাদেরকে মিস করেছি-
শেখ আমিনুল ইসলাম, সৌম্য, বিপ্লবী স্বপ্ন, মেঘদূত, রাইসুল জুহালা
এবং ফিফা
আমার কাছে আড্ডার একটাই ছবি আছে সেটাই দিলাম-
সবশেষে এবারের আড্ডা নিয়ে একটা কথাই বলতে চাই-
তৃষ্ণা মিটলেও তৃপ্তি মেটেনি। তাই অতিস্বত্ত্বর আরেকটা আড্ডা চাই। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।