"ব্লগকে সিরিয়াসলি নেবার কিছু নেই"...গরীব স্ক্রীপ্ট রাইটার
একসময় টিভি দেখার বিশাল নেশা ছিল আমার। টিভি না দেখলে আমার মুড খারাপ থাকতো। নাটক, সিনেমা মিউজিক ভিডিও, খেলা, রিয়েলিটি শো থেকে শুরু করে সবই দেখতাম। যদি ডিশের লাইন না থাকতো তবে বিটিভি দেখতাম.....লাল গোলাপ নামে একটা প্রোগ্রাম হতো একসময় দেখে খুব মজা পেতাম। যেমন একবার ওখানে দেখাচ্ছে ছোট চায়ের দোকানে ৬টাকা দামের ডিম কিভাবে ভাজা হয় আর ফাইভ স্টার হোটেলে ৪৫০টাকার ডিম কিভাবে ভাজা হয়।
আর গেস্টকে যাবার সময় একটা লাল গোলাপ হাতে ধরায় দিতো। আবার রোজার রোজা বা ঈদে চাঁদ উঠেছে কিনা তা দেখার জন্য সে আমলে বিটিভি ছিল একচ্ছত্র কর্তৃত্বের অধিকারী। রোজার চাঁদ উঠলে ঘোষিকা গুলোর মাথায় আচল আর ঈদের চাঁদ উঠলে মাথায় আর আচল নাই।
একবার টিভি দেখতে দেখতে মাথা ব্যথাও শুরু হয়েছিল। সারাদিন টিভি দেখি তাই চোখে ও মাথায় ব্যথা হচ্ছিল।
২দিন অফ ছিলাম আবার যা তাই। টিভিতে কিছু না হলেও ঝিরঝির দেখতাম টিভি খুলে।
কয়েকবছর আগের কথা যখন সনি টিভিতে ফেইম গুরুকুল দেখাতো। আমি আর আমার বান্ধবী ছিলাম ওই শো এর একনিষ্ঠ দর্শক। কারো বাসায় কারেন্ট নাই তো প্রোগ্রামের পর ফোন করে কি হল!! রাত ১/২টার দিকে পুনঃপ্রচার হতো আমাদের সকালে ক্লাস থাকলেও না দেখে ছাড়তাম না।
কিন্তু এভাবেও সব প্রোগ্রাম দেখতে পারছিলাম না। তখন লোডশেডিং বেড়ে গেছিল। তারপর কে বাদ পড়ল এটা দেখার জন্য একদিন সনি টিভির ওয়েবসাইটে গেলাম। ওখানে দেখলাম সিটিজেন হয়ে ব্লগিং করা যায়। ওই প্রোগ্রামে আমরা কাজি বলতে ভুট হয়ে পড়তাম আর কাজির অনেক দুশমন ছিল।
তাই সনি টিভির ওই সাইট দিযেই শুরু করেছিলাম আমার ব্লগ জীবন।
হিন্দি সিরিয়াল আমার বিনোদনে অনেক বড় ভূমিকা রাখে। কিছুদিন আগে একটা সিরিয়ালে দেখেছিলাম এক ছেলে ফ্রড এক মেয়ের সাথে এনগেজেমন্ট ভেঙ্গে যাওয়ায় ২/৩বার আত্নহত্যা করতে গেল। একমাস যেতে পরলো না এই ছেলে অন্য মেয়ের সাথে ফোনে কথা বলে আর ওরেএএ প্রেম!! প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে। কারো সাথে কথা বলে আর সাথে নিজের মোবাইলটার দিকে তাকায় প্রেম প্রেম ভঙ্গিতে....আর আবহাওয়া সঙ্গীত হচ্ছে লাললাললাললালা....
যাই হোক যে কথা বলছিলাম সনি টিভিতে ব্লগিং শুরু করলাম আমরা ২ বান্ধবী।
মজা ই পেলাম তারপর ফেইম গুরুকুল শেষ হয়ে গেল। আমাদের সনি টিভির ব্লগিং ও শেষ হল। এরপর একদিন প্রথম আলোতে দেখলাম বাংলাতে ব্লগিং করা যায় এখন। আমার মনে হল একটা হিন্দি বা ইংলিশে ব্লগিং করেই যদি অত মজা হয় তাহলে বাংলায় না জানি কি হবে!! এবং দেখলামও এখানে মজা অনেক বেশি।
দেড় বছর হল ব্লগে এসেছি যদিও প্রথমে খালি পড়তাম সে আমলে পড়ার মত তেমন কিছু খুব কম পেতাম।
পিডিএফ ফরমাটে কপি করার একটা অপশন ছিল, ওভাবে অনেক পোস্ট কপি করে রাখতাম অবসরে পড়তাম। পড়ার মত পোস্ট কমই পেতাম তারপর একসময় রেজিস্ট্রেশন করলাম, হাবিজাবি লিখে মজা পেতাম এবং এখনও পাই । লিখতাম আর কত জনে কত কথা শোনাতো, সেজন্য রেগুলার হতাম না।
গত বছর যখন সব ইউনিভার্সিটিগুলো বন্ধ করে দিল তখন আমাদের কেবল থার্ড ইয়ারের ফাইন্যাল পরীক্ষা শেষ হয়েছে। আমাদের একটা সমস্যার জন্য ইউনিভার্সিটি খোলা খুব দরকার ছিল।
আবার টিভিতেও সবকিছু দেখানো বন্ধ করে দিল, তখন ব্লগে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। এরপর ওইখানে ২/১ কথা কাটাকাটি শুরু হল এবং জবাব না দিয়ে শান্তি পাচ্ছিলাম তারপর সবাইকে জবাব দিতে দিতে একসময় ব্লগিং নেশায় পৌছে গেছে। এখন চাইলেও ছাড়তে পারি না
এর মধ্যে অনেককে দেখলাম আসলো গেল, প্রথম প্রথম যখন কেউ ব্লগ থেকে চলে যায় তার কমেন্টগুলো মনে হয় প্রতিটা পোস্টে খুব মিস করি। একসময় নতুন কেউ ওই স্থানটা নেয় একসময় সেও চলে যায় এভাবেই আবার নতুন কারো কমেন্টের আশা করি .....এভাবেই চলে যাচ্ছে আমার ব্লগিং জীবন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।