এই গল্প টা আমি যখন আমি ষষ্ঠ শ্রেণী তে পড়ি তখন লিখেছিলাম। তখন কল্পনার রাজ্যে অনেক অদ্ভুত জিনিষ চিন্তা করতাম। আশা করি গল্প টা ভাল লাগবে।
দলনেতা আলুর মন খুব খারাপ। কারন তাদের পাশের বাড়িতে বেগুন তার দল নিয়ে থাকতে এসেছে।
বেগুন গুলা কে তার একদম ই সহ্য হচ্ছে না। সকাল থেকে ই একটা পিচ্চি বেগুন তাদের দিক এ অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। আলুদের সেনাপতি গিয়ে একটা ধমক দিল। বেগুন টা রাগ করে তার মার কাছে বিচার দিল। বেগুন এর মা দলনেতা কে নালিশ করল।
প্রথম দিন ই এভাবে আলু দের সাথে ঝগড়া হয়ে যাবে এটা বেগুন ভাবে নি। বেগুন দের দলনেতা গেল আলু দের সাথে কথা বলতে।
বেগুনঃ এই জমির মালিক আমাদের কে এই জমি তে এক সাথে পাশাপাশি চাষ করতেছে। আমাদের তো এভাবে ঝগড়া করা ঠিক না।
আলুঃ এত দিন এই জায়গায় আমরা থাকতাম।
তোমরা হঠাৎ করে এসে আমাদের এখানে থাকবা এটা আমরা মেনে নিব না।
বেগুনঃ মেনে না নিলে ও থাকতে হবে। কারন মালিক আমাদের কে এখানেএনেছে। কিছু করার নেই।
আলুঃ তাহলে আমাদের কথা মত চলতে হবে সবাইকে।
আমি হব নেতা।
বেগুনঃ এটা সম্ভব না। আমরা কেন তোমাদের কথা মত চলব।
আলুঃ তাহলে আমাদের মধ্যে বন্ধুত্ব সম্ভব না।
পরের দিন থেকে আলু দের মনে হতে লাগল মালিক এখন তাদের থেকে বেশি বেগুন দের কে বেশি যত্ন করে।
আলু রা বুদ্ধি করতে লাগল কিভাবে বেগুন দের কে সরান যায়। আলু গুলা সুযোগ পেলেই বেগুন দের জায়গা টা নষ্ট করে দেয়। তাদের বড় হতে দেয় না। আর কিছু হলেই ঝগড়া শুরু হয়ে যায়।
বেগুন চাষ করার আগে জলিল মিয়ার মন খুব ভাল ছিল।
এক ই সাথে বেগুন আর আলু চাষ করবে। তবে বেগুন গুলা কোনো ভাবে ভালো হচ্ছে না। দিন দিন শুধু হতাশ হতে লাগল সে। তার সংসার এ টাকা দরকার। মোড়ল এর পাওনা টাকা ফেরত না দিলে মোড়ল পুরা জমি টাই নিয়ে যাবে।
মন খারাপ করে জলিল মিয়া জমির পাশে বসে থাকে। এদিকে এক দিন মোড়ল পান চিবাইতে চিবাইতে তার জমির কাছে এল। পিছন থেকে তার চাকর মাথায় ছাতা ধরে রেখেছে।
মোড়লঃ কি গো জলিল, আমার টাকা টা তো ফেরত দিলা না। আর তোমার জমির অবস্থা তো খুব ই খারাপ।
আগে ই বলসিলাম এই জমি টা আমাকে দিয়ে দাও, আমি এখানে বাড়ি বানাব।
জলিলঃ সম্বল বলতে খালি এই জমি টাই আছে। এটা দিয়ে দিলে বাঁচবো কিভাবে। এই জমি আমি দিতে পারব না।
মোড়লঃ যদি জমি দিতে না চাও তাইলে আমার পাওনা টাকা ফেরত দাও।
জলিলঃ আমি তো সেই চেষ্টাই করতেছি। আমাকে সময় দেন। সবজি উঠলে সে গুলা বিক্রি করে টাকা দিয়ে দিব।
মোড়ল একটা দুষ্টু হাসি দিল।
মোড়লঃ অনেক সময় দিছি।
এক মাস এর মধ্যে টাকা ফেরত না পাইলে তোমার জমি আমার।
মোড়ল চলে যাবার পর জলিল এর খুব কান্না আসল। এই দিক এ আলু আর বেগুন এর দল সব শুনতেছিল। সামনে যে তাদের কপালে কি বিপদ আসতেছে এটা ও বুঝতে পারল। শেষ পর্যন্ত আলু রা বেগুন দের কে ডাকল।
আলুঃ এত দিন আমরা যা করেছি সব ই ভুল ছিল। এখন আমাদের সামনে অনেক বিপদ। এখন যদি আমরা এক না হই তাহলে আমরা এক সাথে সবাই শেষ হয়ে যাব।
আলু দের এত দিন পরে ভাল বুদ্ধি হয়েছে দেখে বেগুন মুচকি মুচকি হাসল।
বেগুনঃ তোমরা যা করেছ তা আসলে ই ভুল ছিল।
তবে তোমরা যদি সত্যি ই চাও তাইলে আমরা বন্ধু হতে পারি। আমরা এক সাথে বন্ধুর মত থাকব।
সবাই রাজি হল। এরপর থেকে জলিল মিয়ার জমি তে আলু আর বেগুন ভরে গেল। জলিল মিয়া তো খুব ই খুশি মনে সে গুলা বিক্রি করে মোড়ল কে টাকা দিয়ে দিল।
জলিল মিয়ার দুঃখ ও শেষ হয়ে গেল। আর এই ভাবে আলু আর বেগুন দের মধ্যে বন্ধুত্ব ও হয়ে গেল। শুধু মাত্র বন্ধুত্বের কারন এ সবাই সুখি হল।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।