তবে তাই হোক, ক্লান্তিহীন তিল তিল আরোহনে সত্য হোক বিক্খুব্ধ এই জীবন _____
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে বন্ধুর অভাব নেই। কিন্তু তা কতটা স্রেফ কাজের খাতিরে আর কতটা অন্তরের টানে, বোঝা মুশকিল। খাঁটি বন্ধুত্ব হলো তাই, যা একজনের সঙ্গে আরেক-জনকে বেঁধে ফেলে সুখ-দুঃখ আর আনন্দ-বেদনার অদৃশ্য এক টানে। আর এই অদৃশ্য টানের মূলে রয়েছে এক জিনের কারসাজি। ওই জিনই দু’জন মানুষকে একে অন্যের প্রতি আকৃষ্ট হতে সাহায্য করে।
যেখানে ওই জিনের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই, সেখানে পরস্পরের বন্ধুত্ব স্রেফ কেজো আনুষ্ঠানিকতা। প্রয়োজন ফুরোলে কিংবা স্বার্থে আঘাত পড়লে বন্ধুত্বের এ নড়বড়ে ভিত ধসে পড়ে। আর জিনঘটিত যে বন্ধুত্ব, তার আকর্ষণ ছিন্ন করার মতো শক্তি নেই স্বার্থ কিংবা বঞ্চনাবোধের মতো পার্থিব কোনো নিয়ামকের। অন্তত যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকরা সেরকমই বলেছেন।
তারা বলেছেন, দু’জনের বন্ধুত্ব তৈরি হওয়ার মূলে যে জিন কাজ করে তারা সেটি খুঁজে বের করতে পেরেছেন।
দু’জন মানুষের মধ্যে ওই জিন যদি সমানভাবে সক্রিয় হয়, তবেই তাদের মধ্যে বন্ধুত্বটা প্রাকৃতিকভাবেই সম্পন্ন হয়ে যায়। আর ভিন্ন জিনওয়ালা দু’জন মানুষ নিতান্ত কাছাকাছি এলেও তাদের মধ্যে মনের মিলটা শেষ পর্যন্ত গড়ে ওঠে না এবং শেষ পর্যন্ত দু’জন আলাদা হয়ে যায়। দুটি ভিন্ন ভিন্ন গবেষণার ফলাফল থেকে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত নিয়ে এ বিষয়ে বিশদ বর্ণনা করা হয়েছে প্রসিডিংস অব দ্য ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব সায়েন্স নামের সাময়িকীতে।
দীর্ঘ সময় ধরে চলা ন্যাশনাল লঙ্গিচিউডিনাল স্টাডি অব অ্যাডোলেসেন্ট হেলথ ও ফ্রেমিংহ্যাম হার্ট স্টাডি নামের দুটো গবেষণাকর্মে বন্ধুদের মধ্যেকার জিনগুলো বিশ্লেষণ করে তাদের মধ্যেকার বন্ধুত্বের সূত্র আবিষ্কার করেছেন। আর ওই সূত্রের মূলে রয়েছে ওই জিনই।
একই রকম জিনের উপস্থিতি দেখে গবেষকরা নিশ্চিত হয়েছেন যে, পরস্পরের প্রতি প্রবল টানের মূলে ওরাই কাজ করছে।
এই দুটো জিন হচ্ছে ডিআরডি২ এবং সিওয়াইপি২এ৬। একটি জিন বহনকারী ভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে তাই তাদের বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে খুব সহজেই। গবেষণার পরিচালক ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার প্রফেসর জেমস ফাওলার বলেন, আমরা কাউকে দেখে মুগ্ধ হই। ভাবি, লোকটা আমার বন্ধু হলে ভালো হতো।
আবার কাউকে কাউকে প্রথম দর্শনেই অপছন্দ করে ফেলি। ব্যাপারটা আসলে ভাবনা-চিন্তা ছাড়াই হয়ে যায়। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, ওই জিনগুলোই একে অন্যকে ভালোবাসা বা ঘৃণার পেছনে কাজ করে। ’
তিনি বলেন, এই অনুভূতিটা যে কেন হয়, তা বুঝতে পারি না। তবে এখন মনে হচ্ছে, ওই জিনগুলোই হয়তো এর মূলে কাজ করছে।
সুত্র
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।