ঊষর মরুর ধূষর বুকে একটি যদি শহর গড় , একটি হৃদয় সুখী করা তাহার চাইতে অনেক বড় । মুহূর্তের আবেদন গুলি আমাদের কত অসহায় করে তোলে , এর মধ্যে নাই কোন লজ্জা , আমরা নিশ্চিন্তে একজনের সামনে নিজের হৃদয় টা খুলে রাখি , যখন আকাঙ্খার দহনে , না ছুতে পাওয়ার হা হা কারে বুকটা দুমড়ে মুচড়ে কচলাতে থাকে তখন বোল তো দেখি , নিজের আত্ম সমালোচনা করতে হলে আমরা কজন পারবো এই কষ্টটা বুকে ধরে বলতে যে , না , তোমার জন্য আমার কসট হয়না ।
নীলা জানালার বাইরে এক দৃষ্টে তাকিয়ে কি যেন দেখছিল আর ভাবছিল কথা গুলো । আসিফ ঘুমাচ্ছে । ক্লান্ত, সারাদিনের অফিস সেরে বাশায় ফিরেই একটা গোসল দিল।
রাতে খাবার শেষে বিছানায় শরীর ছরিয়ে দিতেই ঘুমিয়ে গেল । তেমন একটা কথা হলনা নীলা আর আসিফের । নিলা বার বার আসিফের দিকে তাকাচ্ছিল ,একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে আবার সে জানালার বাইরে উপড়ে আকাশটায় চোখ রাখে । হটাত হটাত কেমন যেন কষ্ট হতে লাগলো । যখনি কষ্টটা গ্রাস করছিলুর পুরো মস্তিস্ক ঠিক তখনি আসিফ ওর কাঁধে হাত রেখে ডাকে ,এই নিলা , ঘুমাচ্ছ নাকি ? নীলা সাথে সাথে আসিফের দিকে তাকায় আর কি যে ওঁর হল ভেউ ভেউ করে কেদে ফেলল।
আসিফ বার বার জিজ্ঞেস করছিলো কি হয়েছে কেন কাঁদছ ? আসিফ বুজতেই পারলনা নিলা কেন অমন করছে ! নিলা সুধু আসিফের দিকে চেয়ে বলল কেন আমায় ধরে রাখার মতকিছু করনা?কেন আমায় বোঝাও না আমি তোমার কিছু হই ? কেন আমি তোমাকে পাইনা ? কেন আমাকে হারাবার ভয় নাই তোমার ? আমাকে ফেরাও তুমি আমাকে বাঁচাও , আমি কষ্টে আছি ।
আসিফ অবাক হয়ে নীলার দিকে চেয়ে রইল , নিলা কেঁদে চলেছে । আসিফের সাহস হলনা নীলাকে আর কিছু জিজ্ঞেস করার । সে চুপ করে নিলার কেদে যাওয়া দেখতে লাগলো অসহায়ের মতো । অন্ধকার সেই ঘরটিতে জলজেন্ত দুজন মানুশ কিন্তু একটা নিঃশ্বাসের শব্দও আর হল না !
নীলা উঠে বারান্দায় গেল ।
রোলিং চেয়ার টায় নিজেকে ছেরে দিলো । চুপ চাপ কি যে ভাবছিল , না না কথা মনে আসছিলো ,কোন ভাবেই নিজেকে শান্ত করতে পারছিল না। বার বার একটা নাম তার বুক কাপাচ্ছিল , বার বার মনে হচ্ছিল ও কি ঘুমাচ্ছে না কি আমারি মত করে রাতের আকাশে কাউকে খুজছে ? অস্থিরতা কোন ভাবেই কটছিলনা । যদি কাল কথা না হয় , যদি সত্যি মোবাইল টা বন্ধ থাকে । ভয়ে ভয়ে কেমন যে করছিলো ।
রাত টা নীলার কাছে বিশাল মনে হতে লাগলো । অপেক্ষা করছিলো কখন সকাল হবে , এই অস্থিরতার একটাই কারন আজ অর্ণবের সাথে তার কথা হয়নি । অর্ণব খুব সকালে একটা মেসেজ দিলো মোবাইলে , নীলা ক্ষমা করো আমায় , আমি যাচ্ছি তোমার কাছে আর ফিরবনা , আমায় ভুল বুঝনা আমাকে পালাতেই হবে নইলে যে অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যাবে । ভাল থেক তুমি , সংসারে নিজেকে বিলিয়ে দাও , ওখানেই সুখ খুজে নাও , আমায় নিয়ে ভেবনা , আমায় খুজনা আমি হারাই নি আমি পালিয়ে গেলাম তোমার সুখের জন্য ।
তখন থেকে নীলা আর নীলার মাঝে নাই , সকাল থেকে অর্ণবের সাথে কোন কথা হয়নি, কিছুতেই নীলা স্থির থাকতে পারছিলনা ।
রাতটা নীলার কাছে অসহনীয় লাগতে লাগলো,
এই মুহুরতে সামাজিকতা , লোকলজ্জা ,মান অপমান , সব কিছু কেমন তুচ্ছ মনে হল , মনে হলো ওগুলোর কনো মূল্য নেই যদিনা অর্ণব না থাকে , কেমন যেন হয়ে গেছে নিলা , কি নাই তার , টাকা , সম্মান, ফুট ফুটে দুটি বাচ্চা , আসিফের মতো একজন স্বামী যার খুব ভাল একটা পরিচিতি আছে সমাজে , দেখতে মেয়েদের স্বপ্ন পুরুষ বলা যয় । তাহলে কিসের অভাব নীলার ?
কিসের টানে সে মাইল মাইল দূরে থাকা অর্ণবের জন্য পাগল হয়ে উঠে ! এসব কথা নীলাকে ভাঙ্গা গড়ার মধ্যে পিষে যাচ্ছিল । নীলা অনুভব করল না অর্ণবের জন্য তার এই মন পোড়া সুধু বন্দুত্ত নয় তার চাইতে অনেক অনেক বেশি আপন । নীলা বুজল সে অর্ণবকে ভালোবেসে ফেলেছে , এ কি সর্বনাশ হোল তার ! তাহলে কি অর্ণবও ? এই জন্যই কি অর্ণব নীলার কাছ থেকে পালিয়ে যেতে চাইলো ?
নিলার খুব জানতে ইচ্ছে হল অর্ণবের সেই না বলা কথাটি , কখনো কি অর্ণব বলবে নীলা তুমি আমার প্রেম , তা হোকনা এক মুহূর্তের , ভাবতে ভাবতে নীলার চোখের অশ্রু গুলো ওর গাল হয়ে এসে ঠোঁট ছুলো ,তখনি অশ্রুর মরন হোল নীলার একটি কথায় , অর্ণব ফেরো আমার কাছে আমার হয়ে , তোমায় ছাড়া আমার চলবে না , আমি তোমায় ভালোবাসি , ঠিক তোমার মতো করে, যেমন তুমি চাও ...। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।