আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সাঈদের মৃত্যুর রাতে প্রিজন সেলে কারা ঢুকেছিল ?কেন লুঙ্গি খুলে প্যান্ট পরিয়েছিল??

হাসান সাঈদের রহস্যজনক মৃত্যুর মধ্যরাতে কারা প্রিজন সেলে প্রবেশ করেছিল। কি কারণে তারা সাঈদের কক্ষে প্রায় এক ঘন্টা সময় ব্যয় করেছিল? ওই রাতে লুঙ্গি পরিহিত সাঈদ কে প্যান্ট পরিয়েছিল কারা ? বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের প্রিজন সেলে হাসান সাঈদের রহস্যজনক মৃত্যুর পর গতকাল এমন নানা প্রশ্ন তুলেছেন নিহতের স্বজনরা। এঘটনায় কারা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করার কথা জানিয়েছেন তারা। নিহতের স্বজনদের অভিযোগ, হাসান সাঈদ স্বাভাবিকভাবে মারা যায়নি। তার মৃত্যু রহস্যজনক।

নিহতের ছোট ভাই শাওন বলেন, বিভিন্ন মাধ্যমে খোজ নিয়ে জানতে পেরেছি সোমবার দিবাগত রাত ২টার দিকে প্রিজন সেলে হাসানের কক্ষে কয়েকজন লোক প্রবেশ করেছিল। ওদের মধ্যে হাসপাতালের সুপারিনটেনডেন্ট জালাল ছিলেন। তারা প্রায় এক ঘন্টা সময় ব্যয় করে চলে যান। তারা কোন উদ্দেশ্যে সেখানে গিয়েছিলে তা পরিষ্কার নয়। সাঈদের মা কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমার ছেলে প্রিজন সেলে বন্দি ছিল।

ওই অবস্থায় কখনই প্যান্ট পড়তোনা। সবসময় লুঙ্গি পড়ে থাকতো। তার প্রশ্ন, ওই রাতে তার ছেলেকে প্যান্ট পরিয়েছিল কারা। তিনি কান্নাজড়িত কন্ঠে আরও বলেন, আমার ছেলে রুমানাকে প্রচন্ড ভালবাসতো। প্রথমদিকে স্ত্রী হিসাবে রুমানাও ভাল ছিল।

কিন্তু কানাডা যাওয়ার পরপরই সে বদলে যায়। কানাডায় ইরানি ছেলের সঙ্গে পরকীয়ার নানা মুখরোচক খবর জানতে পেরেই সে মুষড়ে পড়েছিল। তাই বলে কখনই আমার ছেলে আত্মহত্যা করতে পারেনা। চোখের সমস্যা ছাড়া কোন রোগ বালাই ছিলনা। মৃত্যুর দুদিন আগেও আমি ওর সঙ্গে কথা বলেছি।

ও নিজেই আইনজীবীর মতো বিভিন্ন জায়গায় যাওয়ার কথা বলেছিল। কার কাছে গেলে কিভাবে জামিন পাওয়া যাবে সেসব বিষয়ে দিক-নির্দেশনা দিয়েছিল। সেই ছেলে কখনই আত্মহত্যা করতে পারেনা। আমি এর বিচার চাই। স্বজনরা জানান, বিভিন্ন নারী সংগঠন ও ঢাবির কয়েকজন শিক্ষক পরিকল্পিতভাবে রুমানার চোখের সর্বশেষ পরিস্থিতির তথ্য-প্রমানাদির কাগজ পত্র সরবরাহ করেনি।

এতে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ চার্জশিট দিতে বিলম্ব করে। গত ১লা ডিসেম্বর আদালতে সাঈদের জামিনের শুনানীর সময় নারী বাদী সংগঠনের নেত্রীরা হট্টগোল করেছিলেন। এসময় বিচারপতিও তিরষ্কার করেছিলেন। বলেছিলেন, ‘এটি আদালত, নারী মঞ্চ নয়। ’ এরপর তিনি আগামী ১০ই জানুয়ারি জামিন আবেদনের শুনানীর দিন ধার্য করেছিলেন।

কিন্তু তার আগেই অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়ে সাইদ চলে গেছে। আমেরিকান প্রবাসী সাঈদের বোন সামিরা হক বলেন, কারাবিধি অনুযায়ী হাজতি বাথরুমে গেলেও তাকে অনুসরণ করার নিয়ম রয়েছে। অথচ দীর্ঘক্ষণ ধরে সাঈদ বাথরুমে পড়েছিলেন অথচ কেউ টের পেলেন না-এটা কোনভাবেই বিশ্বাসযোগ্য নয়। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, কোন উদ্দেশ্যে সাঈদের চারপাশে সব দাগী আসামী ও শীর্ষ সন্ত্রাসীদের রাখা হয়েছিল। কারা ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কে তা পরিষ্কার করতে হবে।

স্বজনরা জানান, বিডিআর বিদ্রোহ মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি ছাড়াও শীর্ষ সন্ত্রাসী অপুকে তার কাছাকাছি রাখা হয়েছিল। সাঈদের দাফন আজিমপুরে: নিহতের স্বজনরা জানান, গতকাল বাদ জোহর হাসান সাঈদের লাশ দাফন করা হয়েছে আজিমপুর কবর স্থানে। আমেরিকান প্রবাসী বোন সামিরা হকের জন্য ভাইয়ের লাশ সংরক্ষণ করা হয়েছিল। গতকাল সকালে তিনি দেশে ফেরার পর দুপুরে রাজধানীর পরীবাগ জামে মসজিদে তার নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। গত ৫ই ডিসেম্বর ভোরে কারা সাবেক পিজি হাসপাতালের প্রিজন সেলের বাথ রুম থেকে হাসান সাঈদের লাশ উদ্ধার করা হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক বিভাগের শিক্ষক ও তার স্ত্রী রুমানা মঞ্জুরকে নির্যাতনের অভিযোগে তিনি কারাবন্দি ছিলেন। গত ২৩শে নভেম্বর থেকে তিনি চোখের সমস্যায় কারা হেফাজতে পিজি হাসপাতালেন প্রিজন সেলে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। লাশ উদ্ধারের পরপরই প্রাথমিকভাবে কারাকর্তৃপক্ষ আত্মহত্যার কথা বলেছিল। পরে হৃদযন্ত্রের ক্রীড়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুর কারণ উল্লেখ করেন। অন্যদিকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রে শামীমা খন্দকার মৃত্যুকে রহস্যজনক বলে আখ্যা দেন।

পিজি হাসপাতালের অতিরিক্ত পরিচালক বলেন, এ মৃত্যুর দায়ভার কারা কর্র্তপক্ষের , হাসপাতালের নয়। তিনি বলেন, আমরা শুধু মেডিকেল সাপোর্ট দিয়েছি। কারা কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া ঢুকতেও পারিনি। মামলার প্রস্তুতি: এদিকে হাসান সাঈদের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় নিহতের স্বজনরা কারা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। নিহতের ছোট ভাই ফারুক হাসান শাওন বলেন, কারা কর্তৃপক্ষের হেফাজতেই আমার ভাইয়ের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে।

তাই প্রাথমিকভাবে তারাই দোষী। কোন চক্র কারা কর্তৃপক্ষকে ব্যাবহার করেছে না কি তারাই আমার ভাইবে হত্যা করেছে তা মামলার তদন্তেই বেরিয়ে আসবে। তিনি আরও বলেন, প্রথমে থানায় মামলা করতে যাব। থানা পুলিশ মামলা না নিলে আদালতে দায়ের করবো। উল্লেখ্য গত ৫ জুন স্বামী হাসান সাঈদের নির্মম নির্যাতনের শিকার হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রুমানা মনজুর।

ওই দিনই রুমানার বাবা মঞ্জুর হোসেন হাসান সাঈদকে আসামী করে ধানমণ্ডি থানায় একটি হত্যা চেষ্টা মামলা করেন। এরপর গত ১৫ জুন রাজধানীর উত্তর মুগদা থেকে গোয়েন্দা পুলিশ স্বামী হাসান সাইদকে গ্রেফতার করে। পরে কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠিয়ে দেয় মর্মাহত রুমানা ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১০ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.