মেহেদী হাসান খান শিশুটি এখন আর কাঁদছে না, কাঁদবে কি করে তার এখন আর কাঁদার মত শক্তি ও নেই , গত এক ঘণ্টা ধরে সে তার নিজের বাসায় হাত পা বাধা অবস্তায় মেঝে তে পড়ে আছে, সে যাতে চিৎকার করতে না পারে সে জন্য সামনে সোফায় বসে থাকা মানুষ টা তার মুখে রুমাল গুজে রেখেছে ।
অথচ তার আজকের দিনটি কি সুন্দর ভাবেই না শুরু হয়েছিলো, সকালে ঘুম ভেঙ্গেছিল মামনির আলতো হাতের স্পর্শে , দুপুর টা কেটেছিল তার প্রিয় টেডি বিয়ারটির সাথে খুনসুটি করে,
বিকেল বেলা ঘুম থেকে উঠে সে দেখে বাসায় তার আম্মু ভাইয়া কেউ নেই, শুধু এই মানুষ টা সোফায় বসে টিভি দেখছে।
মানুষটা কিছুটা অস্থির হয়ে আছে,গতকাল সন্ধ্যায় জুয়ার টেবিলে সে অনেক টাকা হেরেছে, আরও অনেকে তার কাছে টাকা পাওনা আছে বলে সে আজকে জুয়ার আসরে যেতে পারছে না,
বাসায় তার সময় কাটছে না, এদিকে শিশু টা ঘুম থেকে উঠে আম্মু আম্মু বলে কাঁদছে
শিশুটির মা তার বড় ছেলে কে নিয়ে ডাক্তারের কাছে গেছে । বাসায় ফিরতে আরও ঘণ্টা দুয়েক লাগবে,
এদিকে শিশুটার কান্না তার অস্থিরতা আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।
সে শিশুটা কে জোরে ধমক দিল তাতেও মন ভরল না দেখে শিশুটা কে ধাক্কা দিয়ে মেঝেতে ফেলে দিল ।
মানুষটা অনুভব করলো শিশু টা কে কষ্ট দিতে তার ভালো লাগছে। মানুষটা খুব সাবধানে শিশুটার উপর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন চালাতে লাগলো যাতে শিশুটার শরীরে তার কোন চিহ্ন ফুটে না ওঠে।
শিশুটি ভয়ে চিৎকার করে কাঁদছে কিন্তু তার কান্না কেউ শুনতে পাচ্ছে না।
মানুষটা শিশুটাকে একবার শূন্যে ছুড়ে দিচ্ছে আবার ধরছে ।
মানুষটা এখন রান্না ঘর থেকে একটা ছুরি নিয়ে এসে শিশুটার চোখে সামনে ঘুরাচ্ছে , শরীরে ,গলায় ছুরির অংশ বুলাচ্ছে, চোখ রাঙ্গাছে মিটিমিটি হাসছে।
শিশুটি ভয়ে আর কষ্টে ছটফট করছে...
তার কান্না মাখা ছটফটানি মানুষ টা যেন আরও উত্তেজিত করে তুলছে, সে এখন শিশুটির গালে আলতো করে চড় মারছে, কান টানছে । শিশুটির নরম ছোট্ট হাত দুটি তার শক্ত কঠিন হাত দ্বারা মুচড়ে দিচ্ছে।
মানুষটা জানে শিশুটির তেলাপোকা ভীতি প্রবল। তাই সে এখন শিশুটির সাথে তেলাপোকা নিয়ে খেলা করছে।
শিশুটির ভয় মাখানো চিৎকার তাকে ব্যাপক আনন্দ দিচ্ছে।
মানুষটা ক্লান্ত হয়ে এখন আবার টিভি দেখতে বসেছে, শিশুটির কান্না মাখা চিৎকার যাতে তার টিভি দেখায় ব্যাঘাত না করে সেজন্য সে শিশুটি কে হাত পা বেঁধে মুখে রুমাল গুজে মেঝেতে ফেলে রেখেছে......হিন্দি গানের তালে তালে মানুষটা এখন কিছুটা মাথাও দোলাচ্ছে।
শিশুটির মা বাসায় ফিরেছে, শিশুটি তার মায়ের বুকে ঝাঁপিয়ে পড়ে চিৎকার করে কাঁদছে,
সে তার দেড় বছরের সমস্ত ভাষাজ্ঞান দিয়ে তার মা কে বুঝাতে চেষ্টা করছে , সামনে দাঁড়িয়ে থাকা এই মানুষ টা তার সাথে এতক্ষণ কি করেছে, কিন্তু মা তার বুঝতে পারছে না, সে বলছেঃ আহারে আমার সোনা মানিক টা, আম্মুকে ছাড়া খুব কষ্ট হয়েছে না? কি হয়েছে আব্বু বকা দিছে? কাঁদে না আমার সোনামণি।
মানুষ টা এখনও তার দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি করে হাসছে। তার হাসিটি শিশুটার কষ্ট আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে, কষ্টে তার ছোট্ট বুক টা ফেটে যাচ্ছে... কিন্তু সে শত চেষ্টা করে ও কাউকে কিছু বুঝাতে পারছে না। আহারে কষ্ট, কি যে কষ্ট সেটা... ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।