আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ধর্ম ব্যবসার নানা রূপ

আমি নাস্তিক। নাস্তিকতা আমার বিশ্বাস । ভগবান যেহেতু বিশ্বাস করিনা তাই অনেক কিছু অনেক সহজেই বলতে পারি। তবে আমার অবিশ্বাস দিয়ে আমি কাউকে প্রভাবিত করতে চাই না। তাছাড়া আমি জানি যাদের বিশ্বাস আকাশ সম তাদের বিশ্বাস আমার সামান্য কিছু অবিশ্বাসী কথাই কোনদিন নড়ে উঠবে না ।

কাউকে নড়ানো এই লেখার কোন উদ্দেশ্য নয় । মত প্রকাশের স্বাধীনতা সবার আছে । সে মত আপনার ভাল লাগুক আর না লাগুক । ভালো লাগলে পড়তে পারেন আর না লাগলে বাদ দিতে পারেন । ধর্মের ভালো খারাপ বিচার করা নিয়ে এই লেখা নয়।

সে কথা না হয় আর একদিন বলব । তবে লেখার খাতিরে একটু ভূমিকা আনতে হচ্ছে। ধর্মের সত্য অসত্য নিয়ে যুক্তি তর্কের শেষ নেই। শুধু এতটুক বলি পৃথিবীর সব ধর্ম চেয়েছে মানুষ কে সুন্দর করতে, মানুষ কে সুখী করতে , পৃথিবীকে শান্ত রাখতে । কিন্তু যুগে যুগে কিছু ভণ্ড ধর্মের এই ভালো দিক কে ব্যবহার করে নিজেদের স্বার্থ উদ্দার করে নিয়েছে।

যে যেভাবে পেরেছে মানুষের এই দুর্বল দিকটি ব্যবহার করে টাকা রোজগার করতে চেয়েছে । ধর্মের বইগুলুতে যাই লেখা থাকুক না কেন ভণ্ডরা নিজেদের প্রয়োজনে সেগুলুকে একটু পরিমার্জন, পরিবর্ধন করে সুবিধা মত তৈরি করে নিয়েছে। মানুষের এই দুর্বল দিক কে কিভাবে ধ্বংসাত্মক কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে তা যদি একবার ভাবা হয় তবে রীতিমত শিহরে উঠতে হয়। ধর্মের অপবাখ্যা কুবাখ্যা দিয়ে জঙ্গি সংগঠন গড়ে উঠে সারা পৃথিবী অস্থির করে তুলছে। ধর্ম কে নিয়ে অসৎ রাজনীতি করছে ভারতের নরেন্দ্র মোদী।

আমি নিজ চোখে দেখেছি মন্দির বানানোর কথা বলে কিভাবে ঘরে ঘরে টাকা তোলা হয় । যদিও এরা সবাই একটা সিনডিকেট এর অংশ। ধর্মকে নিয়ে বানিজ্য করছে দেশের সব বড় বড় পেপারগুলো । প্রায় সময় কোন না কোন ভণ্ড তান্ত্রিক সাধকের বিজ্ঞাপন ছাপানো হয়। যাবতীয় সমস্যার সমাধান তাদের কাছে।

এতই যদি ক্ষমতা তবে দেশটার এত্ত গুলো সমস্যা কেন একটু সমাধান করে দেয়না? কেন একটু আমাদের দুই নেত্রীর মাথাই সুবুদ্ধি এনে দেয় না!!কেন আমাদের যোগাযোগ মন্ত্রী আবুল হোসেন কে একটু চিন্তা ভাবনা করে আসল ব্যাপারটা জেনে একটু গুছিয়ে কথা বলতে শিখিয়ে দেয়না!!কেন একটু অর্থ অসুখ সারিয়ে দেয়না আমাদের রাজনীতিবিদদের। এইবার একটা মজার ঘটনা বলি। এখন প্রতিদিন রাত সাড়ে বারটায় Z-Bangla তে অনেকক্ষণ ধরে একটা মা লক্ষীর একটা বিজ্ঞাপন দেয় । সেখানে বলা হয় যদি মা লক্ষীর কৃপা না থাকে তবে আপনি যতই চেষ্টা করেন না কেন কোনদিন অর্থ লাভ হবেনা। ধর্মীয় দিক থেকে এইরকম একটা কথা বলা আছে এইটা সত্য।

কিন্তু সমস্যা হলো পরের কথা গুলোতে। পরে বলা হয় যে উনারা সোনা দিয়ে লক্ষীর দুই পা,এক লকেট আরও কিছু জিনিস দিয়ে একটা লক্ষীর আসন তৈরি করেছে যেটা আপনি কিনে নিয়ে আপনার ঠাকুর ঘরের সামনে রাখলে আপনি অবশ্য লক্ষীর কৃপা পাবেন এবং প্রচুর ধন সম্পদের মালিক হবেন। উনারা এই আসনটি রেখে ধনী হয়ে যাওয়া অনেক মানুষের উদাহরণ দেখায়। মা লক্ষীর কৃপা পাওয়ার জন্য ধর্মে উনার পুজা করার কথা বলা আছে। কিন্তু এই রকম সোনার তৈরি আসন কিনে নিয়ে কৃপা পাওয়ার কথা তো কথাও বলা হনি।

আর আসনটা সোনা দিয়ে বানাতে হচ্ছে কেন ? মানুষ যেন সহজে কিনতে পারে তার জন্য লোহা বা কাঠ দিয়ে তো তৈরি করা তো যেত। এইটা হলো বানিজ্য। মানুষের ধর্মীয় দুর্বলতাকে ব্যবহার করে ঠকানো হচ্ছে। আদতে এইরকম কৃপা প্রাপ্ত কোনও আসন নেই। একশ্রেনীর সোনা ব্যবসায়ী ধর্মকে নিয়ে এইরকম বানিজ্য করছে।

আর এই ব্যবসাকে সাহায্য করছে TV channel গুলো। তারাও ঐ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে একটা অংশ নিবে। যদি ব্যাপার টা সত্য হতো তাহলে তো লাভের শেষ নেই। আমাদের পানি সম্পদ মন্ত্রী রমেশ সেন ঐ লক্ষীর আসন এনে দেশের সম্পদ বাড়িয়ে যেতেন শুধু। কারো ধর্মীয় বিশ্বাস নিয়ে আমার কোনও আপত্তি নেই।

কিন্তু সেই বিশ্বাস যেন অন্ধবিশ্বাস না হয়। ধর্মের নাম বলে কোনও প্রতারক যেন আমাদের ঠকিয়ে না যেতে পারে। (শুভাশীষ ত্রিপাটি। ০৪-১১-১১) ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.