অবশেষে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বচনে ডা: সেলিনা হায়ৎ আইভীর জয় হলো। আইভীর এই জয়ের মধ্যে দিয়ে শেষ হলো প্রথমবারের মত নারায়নগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন ২০১১। বিএনপি প্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকার শেষ মুহূর্তে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলে নির্বাচন ত্রিমুখী না হয়ে দ্বিমুখী হয়ে পড়ে।
সে যাই হোক, নারায়ণগঞ্জবাসী এই ভোট বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে বুঝিয়ে দিলো তারা গুণ্ডা, মাস্তান, ভূমি-দস্যু, চাঁদাবাজ, ছিনতাই কারীদের হাতে জিম্মি হয়ে থাকতে চান না।
যে কারণে আইভির পক্ষে এই বিশাল জনসমর্থন।
অন্যদিকে শাসক আওয়ামীলীগ শামীম ওসমানকে সমর্থন দিয়ে জানিয়ে দিলেন, তারা সন্ত্রাসী মাস্তান চক্রের কাছে জিম্মি। বিএনপি তার দলীয় প্রার্থীর প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে জানিয়ে দিলো, তারা নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করার মত কাজ করতে পিছপা হবে না।
সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অরাজনৈতিক নির্বাচন হলেও এটি এখন আর তা নেই। রাজনৈতিক দলের সক্রিয় হস্তক্ষেপে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দল গুলো যেভাবে এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তাদের সমর্থিত মেয়র প্রার্থীদের প্রকাশ্যে এবং প্রাইভেট মিডিয়াতে সমর্থন করে গেলো।
জানিনা এটি নির্বাচন কমিশনের তৈরি কত ধারার বিধান লঙ্ঘিত হলো।
নির্বাচন কমিশন বলেছিলও মেয়র প্রার্থীরা কোনও রাজনৈতিক দলের পরিচয়ে নির্বাচন করতে পারবে না। পারবে না পোস্টারে রাজনৈতিক দলের নেতা নেত্রীর ছবি ব্যবহার করতে। কিন্তু সেটি রক্ষা করা গেলো কই। রাজনৈতিক দলের নেতারা সভা সেমিনার সাংবাদিক সম্মেলন করে বলতে শুরু করলেন অমুক আমাদের দলের প্রার্থী অমুক তাদের দলের প্রার্থী।
এখন নির্বাচন শেষ। ফলাফল ঘোষিত হয়েছে।
নির্বাচনী আইন কানুন ভঙ্গ করার জন্য এখন নির্বাচন কমিশনের উচিত বৃহৎ রাজনৈতিক দল গুলোর বিরুদ্ধে একটি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া। এটি নিতে পারলে আগামীতে যেসব সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন হবে। সেগুলো প্রকৃত অর্থেই অরাজনৈতিক নির্বাচন হবে।
ইভিএম নিয়ে ভোটারদের মধ্যে দেখা গেলো মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ কেউ একে বলেছেন ভালো। আবার কেউ কেউ বলেছেন খারাপ। অশিক্ষিত বয়স্ক ভোটাররা ঠিক মত ইভিএম এ ভোট দিতে পারেননি। অন্যদিকে তরুণ যুবারা ও মহিলারা তাড়াতাড়ি ভোট দিয়ে বাড়ি চলে গেছেন।
ইভিএম নিয়ে সমাজের ওই শ্রেণীর লোকদের সাথে বিশেষ কর্মশালা করার উদ্যোগ নিতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। এবং এটি সম্পন্ন হতে হবে আগামী সংসদ নির্বাচনের আগেই। সরকারী ও বেসরকারি ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যম গুলোতে ইভিএম এ ভোট দেওয়া সম্পর্কে ব্যাপক প্রচারণা চালাতে হবে। দৈনিক গুলোকেও এ ব্যাপারে এগিয়ে আসতে হবে।
প্রযুক্তি কখনও ভুল তথ্য দেয় না।
কিন্তু এটি যারা নিয়ন্ত্রণ করেন তারা একে দিয়ে ভুল কাজ করাতে পারেন। এটা শুধু ইভিএমের ক্ষেত্রেই না। ডিজিটাল প্রযুক্তির যে কোনও বস্তুর ক্ষেত্রেই এটি প্রযোজ্য। ছবি যুক্ত ভোটার তালিকা থাকলেও একজনের ভোট আরেক জন দিয়ে চলে গেছে। কীভাবে এটি হলো তা তদন্ত করা দরকার।
পোলিং এজেন্টদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। কোনও কোনও জায়গায় ঢুকতে দিলেও তাদের আবার বের করে দেওয়া হয়েছে এ অভিযোগ গুলো মিডিয়াতে এসেছে। তাই ভোট শান্তিপূর্ণ গোলযোগ বিহীন হলেও, শতভাগ সুষ্ঠু হয়েছে বলা যায় না। নির্বাচন কমিশনকে এসব বিষয়ে ভেবে দেখতে হবে। তা না হলে আগামীতে এসব ঘটনা আরও বাড়বে।
সূত্র হতে পড়তে চাইলে এই লিংকে ক্লিক করুন। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।