ব্রাজিলে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের চাহিদা
ব্রাজিলের ভোক্তারা মনে করেন বাংলাদেশি তৈরি পোশাকের গুণগতমান বেশ ভালো এবং সস্তা। তাই বাংলাদেশি তৈরি পোশাকের চাহিদা রয়েছে দক্ষিণ আমেরিকার এ বিশাল দেশটিতে। তবে সেখানে পোশাক রপ্তানির সবচেয়ে বড় বাধা হল ব্রাজিলে বাংলাদেশের দূতাবাস নেই। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ সে দেশে দূতাবাস খুললেও এখন তা বন্ধ। বর্তমান বিশ্ব পরিপেক্ষিতে দুই দেশই চাইছে একে অপরের দেশে দূতাবাস খুলতে এবং এক্ষেত্রে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে জানা গেছে।
প্রায় সাড়ে বিশ কোটি মানুষের দেশ ব্রাজিলের বাজারটি বেশ বড়। বিশ্ব অর্থনীতিতে চীন ও ভারতের পর ব্রাজিল উদীয়মান শক্তি হিসেবে উঠে আসছে। তৈরি পোশাকের চাহিদাও রয়েছে ব্যাপক। বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন বুরোর (ইপিবি) তথ্য মতে, গত ২০০৮-২০০৯ অর্থবছরে নিট ও ওভেন রপ্তানি হয়েছে ৩ হাজার ৮ কোটি টাকা। ২০০৯-১০ অর্থবছরে রপ্তানি হয়েছে ৩ হাজার ৪৩৩ কোটি টাকা।
এর বিপরীতে ২০১০-১১ অর্থবছরে রপ্তানি হয়েছে ৭ হাজার ২০০ কোটি টাকা। বিশেষ করে শীতের পোশাক রপ্তানির সুযোগ রয়েছে। সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, ব্রাজিলের বাজার আরও প্রশস্ত করতে পারলে গ্যাস, বিদ্যুৎ, বাড়তি পরিবহন খরচসহ বিভিন্ন প্রতিকূলতার মধ্য দিয়েও ঘুরে দাঁড়াতে পারে বাংলাদেশের গার্মেন্ট শিল্প। ভারতের বাজারের পরে ব্রাজিলের বাজার দ্বিতীয় রপ্তানির উৎস হিসেবে কাজে লাগাতে চায় বিজিএমইএ। বর্তমান রপ্তানির দ্বিগুণ টার্গেট রয়েছে সংগঠনটির।
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, আমাদের পোশাকখাতে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। এরপরও ভালো অবস্থানে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। বিদেশে বাংলাদেশি তৈরি পোশাকের মান ভালো হওয়ায় দিন দিন এর চাহিদা বাড়ছে। এমনকি তারা নিজ দেশের পোশাকের চেয়ে কম দামে কিনতে পারছে। তিনি আরও বলেন, রপ্তানিতে বেশি ট্যাক্স দিতে হয়।
এত বেশি ট্যাক্স দেওয়ার পরও আশা করা যায় ভালো করা যাবে।
এ বিষয়ে এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী আমাদের সময়কে বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে ৯৯ শতাংশ রপ্তানি হত। কিন্তু বিশ্বমন্দায় এসব দেশের অর্থনীতি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এতে রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়বে। ব্রাজিল নতুন বাজার হওয়ায় চ্যালেঞ্জের মধ্যে টিকে থাকতে হবে।
এক্ষেত্রে গ্যাস, বিদ্যুৎ নিয়মিত করা, ডিজেল, ফার্নেস অয়েলের দাম, ব্যাংক সুদের হার কমানো প্রয়োজন। এছাড়াও চট্টগ্রাম বন্দরের ভাড়া কমানো ও মংলাকে দ্বিতীয় বন্দর হিসেবে গড়ে তোলা একান্ত প্রয়োজন বলে জানান।
বিজিএমইএ সহ-সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, বাংলাদেশের গার্মেন্ট শীতের পোশাক সোয়েটার, জ্যাকেট, সাফারি তৈরি করার পর প্রায় ৬ মাস কোনও কাজ থাকে না। জানুয়ারি, ফেব্র“য়ারি ও মার্চে শীত থাকায় এশিয়ার দেশগুলোতে এসব পোশাক রপ্তানি করা যায়। এশিয়ায় গরমের সময় দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোতে শীত থাকে, তখন শীতের পোশাক রপ্তানি করা সম্ভব।
এসব দেশে রপ্তানি করতে পারলে পুরো বছরই শ্রমিকরা কাজ করতে পারবে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে এখন অনেক খ্যাতিমান বিদেশি বায়ার আসছেন। তাদেরকে আকৃষ্ট করাতে পারলে আশা করা যায় রপ্তানি দ্বিগুণ হবে।
বিজিএমইএ সহ-সভাপতি এসএম মান্নান কচি বলেন, ব্রাজিলের বাজার ধরতে পারলে বিগত দিনের ক্ষতির অনেকটাই কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে। এদেশের তৈরি পোশাকের গুণগত মান ভালো হওয়ায় এর কদর বাড়ছে।
পাশাপাশি এক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যার কথাও বললেন ব্যবসায়ীরা
Click This Link ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।