সেদিন নায়লা আর শায়লা দুজনে মিলে থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার মুভিটা দেখে এলো। মুভি শেষ হয়ে গেলেও নায়লা গ্যাঁট হয়ে বসে রইল। সিনেমা নাকি শেষ হয় নি। শেষটা না দেখে ও যাবে না। নায়লার এমন দুষ্টুমীর সাথে শায়লা খুব পরিচিত।
নায়লার যুক্তি হলো, এভাবে সিনেমা শেষ হতে পারে না। হয় তপু, নয়ত মোশাররফ করিম, যেকোন একজনকে শেষ পর্যন্ত তিশা বেছে নেবে। দুজনকেই একসাথে ঝুলন্ত রেখে সিনেমা শেষ হয় কী করে? নায়লা যতই অনুযোগ করে, শায়লা ততই তাকে বোঝায়, ব্যাপারটি ঠিক চিটিং নয়। তিশার মত অবস্থায় না পড়লে ঐ ব্যাপারটা বোঝা যাবে না। সিনেমা শেষ হয়ে গেলেও দুই বান্ধবীর মনে তার রেশ রয়ে যায় বেশ কিছু দিন।
থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার সিনেমাতে আমরা দেখি তিশা একই সাথে তপু ও মোশাররফ করিমের সাথে সম্পর্ক রাখছে। একই সাথে দুজনের সাথে সম্পর্ক রাখা (বাস্তবে এটা সাধারণত গোপনেই করা হয়) আমাদের দৃষ্টিতে অনৈতিক ও প্রতারণা। এধরনের বহুগামী আচরণের পেছনে বেশ কিছু কারণ কাজ করতে পারে। চলুন দেখা যাক কারণগুলো কী কীঃ
ব্যক্তি জন্মগতভাবেই বহুগামী চরিত্রের অধিকারী।
একজনের সাথে দীর্ঘদিন সম্পর্ক রাখার পরে একঘেঁয়েমিতে ভুগলে।
নতুন কারো সাথে সম্পর্ক করার মাধ্যমে নিজেকে স্বাধীন ভাবতে চাইলে।
সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধান্বিত হলে। যেমনটা আমরা থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার মুভিতে দেখেছি। মুভিতে তিশার ভেতরটা কখনো বলছে মোশাররফ করিম দূরে থাকুক, কিন্ত বাইরে বলছে কাছে থাকুক। আবার বাহির বলছে তপু দূরে থাকুক, কিন্তু ভেতরটা চাইছে কাছে থাকতে।
অন্য কারো সাথে সম্পর্ক রাখছে জেনেও যদি এক পক্ষ তা মেনে নিয়ে ক্ষমা করে দেয়।
প্রতিশোধপরায়নতা থেকে।
ব্যক্তি আসলেই অন্যের কাছে আকর্ষণীয় কিনা তা যাচাই করার জন্যও ভিন্ন সম্পর্কে জড়িয়ে পড়তে পারে।
লুকিয়ে অন্য একটি সম্পর্কে জড়িয়ে পড়াটা কারো কাছে থ্রিল বা মজার ব্যাপার বলেও মনে হয়।
অনেকে একই সাথে একাধিক সম্পর্ক রাখাটাকে প্রতারণা বা অনৈতিক বলে মনে করে না।
প্রেমিক/প্রেমিকাটি অন্য আরেকটি সম্পর্ক একই সাথে রাখছে, একথা জানার পরে ব্যক্তি বেশ বড় আঘাত পায়। সারাক্ষণই একটা অবিশ্বাস তার মধ্যে কাজ করে। জীবনের সবচেয়ে খারাপ সময়টার মোকাবেলা করতে হয় তাকে। এক্ষেত্রে বেশির ভাগ ব্যক্তিই সংগীর সাথে বোঝাপড়া করতে গিয়ে নিজের আবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সমর্থ হন না। সংগীর সাথে খোলামেলা আলোচনা করতে গিয়ে তার দৃষ্টিভংগীটি যদি জানতে পারেন, তবে মনের কষ্ট একটু হলেও কমতে পারে।
আবার প্রকৃত সত্য সংগীর মুখ থেকে শোনার পরে আরো বেশি কষ্টও হতে পারে। এক্ষেত্রে আপনাকেই ভেবে দেখতে হবে এমন ঘটনার পরেও আপনি এই প্রতারক ব্যক্তির সাথেই সম্পর্ক চালিয়ে যাবেন কি যাবেন না। মন থেকে সত্যিই কি পারবেন ঐ প্রেমিক বা প্রেমিকাকে ক্ষমা করে দিতে? পারবেন কি আগের মতই তার প্রতি বিশ্বাস রাখতে? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর যদি আপনি পেয়ে যান, তবে সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করবেন না। আরেকটি কথা, মানুষ কখনোই কোন ভুল সিদ্ধান্ত নেয় না। কেননা, আপনার সামনে এই মুহূর্তে যে অপশনগুলো আছে তার মধ্যে থেকে যেটা সবচেয়ে ভাল হবে সেটাই তো আপনি বেছে নিচ্ছেন।
২৯ অক্টোবর, ২০১১
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।