যুদ্ধাপরাধীর বিচার ও জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবী করছি বাংলাদেশে কি ঘটেছিল অক্টোবরের ২৭/২৮ তারিখে সেটা সরাসরি টিভিতে দেখা সম্ভব হয়নি। পরে ইউটিউবের সুবাদে তিনটা টিভি চ্যানেলের পূর্ন নিউজ এবং কিছু ক্লিপ দেখা সম্ভব হয়েছে। সত্যই ভয়াবহ - মাটিতে পড়ে থাকা একজন মানুষকে কিছু মানুষ মারছে - আনেকটা সাপ মারার মতো। এটা যদি বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থার প্রতিনিধিত্বকারী দৃশ্য হয় তবে সমাজবিজ্ঞানী আর মনোবিজ্ঞানীদের এখনই সজাগ হওয়ার সময়।
প্রায় একই রকম একটা দৃশ্য দেখেছিলাম কয়েক বছর আগে।
যেই দৃশ্যের বর্ণনা আছে মনিকা আলীর “ব্রীকলেইন” নামক উপন্যাসে। সেখানে পাঁচজন ছিনতাইকারীকে তিনটা মোটর সাইকেল সহ মতিঝিলি ধরে ফেলা হয়। পরে ওদের পিটিয়ে মেরে মোটর সাইকেল সহ আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়। দৃশ্যটা উপভোগ করে হাজার হাজার মানুষ। অন্যদিকে প্রতিদিন RAB নাম একটা ঘাতক বাহিনী বিনাবিচারে মানুষহত্যার একটা গল্পের পুনরাবৃত্তিসহ খবর মানুষ বেশ আনন্দের সাথে পড়ে।
সেখানে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে পিটিয়ে মারাটা কি বিশেষ কোন সামাজিক বিকৃতির নিদর্শন কিনা সেটা সমাজবিজ্ঞানীরাই ভাল বলতে পারবেন।
তবে একজন সাধারন মানুষ হিসাবে কিছু প্রশ্নের উত্তর পাবার আশায় অপেক্ষায় আছি। ২৬ তারিখে যখন জলিল-ভুইয়া সংলাপ ব্যর্থ হয় তখন ১৪ দল বিক্ষোভ কর্মসূচী ঘোষনা করে। পাল্টা কর্মসূচী হিসাবে সমাবেশের ঘোষনা দেয় সেদিনের সরকারী জোট। কিন্তু পরের দিনের দৃশ্যে কিছু অসংগতি লক্ষ্য করা যায় -
১) জামাত-বিএনপি জোটের বড় শরীক বিএনপিকে কার্যত মাঠে দেখা যায়নি।
শুধু মাত্র জামাত তাদের সর্বশক্তি নিয়োগকরে বাইতুল মোকাররম এবং পল্টন এলাকা দখল রাখতে। সেখানে জামাতের নেতাদের কর্মীদের শহীদ অথবা গাজী হবার আহ্বান জানানোর মতো দৃশ্য দেখা যায়।
২) ১৪ দলের কর্মসূচির মূল কেন্ত্র বংগবন্ধু এভিনিউ এবং মুক্তাংগন আর পল্টনের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টিকারী ডিভিইডারগুলি কে সরিয়ে নিলো। হঠাৎ করে পুলিশইবা উধাও হলো কেন?
৩) দীর্ঘ চার ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষ চলাকালে মানুষের জীবন থেকে পল্টনের দখল রক্ষাই পুলিশের মুল কাজ হলো কিভাবে?
৪) ফখরুদ্দিন সরকারের উপদেষ্টা ও তৎকালীন ডিআইজি আনোয়ারুল ইকবাল যখন পুলিশের মানুষের জীবন রক্ষায় বর্থ্যতার কারনে যখন সংশ্লিষ্টদের শোকজ করেন তখন কেন তাকে ডিআইজি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হলো?আরো দশটা রাজনৈতিক হত্যাকান্ডে মতো হয়তো এই হত্যাকান্ডগুলোও বিনা বিচারে হারিয়ে যাবে। কিন্তু “লগিবৈঠার” এই তান্ডব আর যেই ভুলুক না কেন, জামাত-শিবির দুস্বপ্নের মতো দীর্ঘদিন মনে রাখবে।
একদিকে নেতাদের শহীদ বা গাজী হওয়ার আহ্বান - অন্যদিকে বিরোধী কর্মীদের লগি-বৈঠা। তারমধ্যে অনেকে শহীদ হয়ে বেহেস্ত নিশ্চিত করতে পেরেছেন কিনা বলা যাচ্ছে না কিন্তু বিএনপি-জামাতের রাজনৈতিক কৌশলকে একটা বুষ্ট দিতে স্বক্ষম হয়েছে বটে। যার ফলে দূর্নীতির বিষয়টাকে বেশ কিছুদিন লগিবৈঠা দিয়ে মানুষের চোখের আড়ালে পাঠাতে স্বক্ষম হয়েছিলেন - যদিও শেষ রক্ষা হলো না।
দু:খজনক হলো - এখনও দেখছি কিছু মানুষ সুযোগ পেলেই সেই বিষয়টাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ব্যবহার করার চেষ্টা করছেন - এটা ঠিক না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।