স্বৈরশাসক গাদ্দাফির পতন হয়েছে, লিবিয়ার জনগণের ভাগ্যের কি পরিবর্তন আসবে??? জীবন যাত্রার মান বাড়বে নাকি আরেক ইরাক বা আফগানিস্তান এ পরিনত হবে???
গাদ্দাফির কিছু ভালো দিক ছিল কিনা খুজে বার করি... লিবিয়ার জনগণ কেমন ছিল তার শাসন আমল এ???
আরব বসন্তের নবজাগরণে তিউনিসিয়া, মিসরের স্বৈরশাসকদের পর ক্ষমতাচ্যুত হয়েছেন লৌহমানব মুয়াম্মার গাদ্দাফিও। দীর্ঘ ৪২ বছর তেলসমৃদ্ধ লিবিয়াশাসন শেষে বিদ্রোহী জনতার হাতে নির্মমভাবে প্রাণও দিয়েছেন তিনি। নিজ দেশের অধিবাসীদের নির্বিচারে হত্যা, নিপীড়নের জন্য অনেকেরই নিন্দার মুখে পড়েছিলেন গাদ্দাফি। দীর্ঘদিনের শাসনামলে কখনোই পশ্চিমা বিশ্বের আনুগত্য স্বীকার না করার কারণে তাঁর শাসনের অবসানকে অভিনন্দনই জানিয়েছে জাতিসংঘসহ সমগ্র পুঁজিবাদী বিশ্ব। কিন্তু এতকিছুর পরও গাদ্দাফি একজন শাসক হিসেবে তাঁর দেশের অধিবাসীদের জন্য যেসব সুযোগ-সুবিধার বন্দোবস্ত করেছিলেন, তা কোনোভাবেই অস্বীকার করা যাবে না।
নাগরিক জীবনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে জনগণকে অনেক সহায়তা দেওয়া হতো গাদ্দাফি সরকারের আমলে। বলা যায়, প্রায় রাজার হালেই ছিলের গাদ্দাফির প্রজারা। আধুনিক সময়ের নগরজীবনের অন্যতম প্রধান চাহিদা বিদ্যুত্। আর লিবিয়ার জনগণ সেই বিদ্যুত্ ব্যবহার করত পুরোপুরি বিনামূল্যে। সরকারনিয়ন্ত্রিত ব্যাংকগুলো থেকে বিনা সুদে ঋণ দেওয়া হতো নাগরিকদের।
তেলসমৃদ্ধ দেশটির তেল বিক্রি করে যে টাকা আয় হতো, তা সরাসরি পাঠিয়ে দেওয়া হতো লিবিয়ার সব জনগণের ব্যাংক হিসাবে। গাড়ি কেনার সময় লিবিয়ার নাগরিককে গাড়ির মূল্যের অর্ধেক সরকার থেকে ভর্তুকি দেওয়া হতো। তেলসমৃদ্ধ লিবিয়ায় প্রতি লিটার পেট্রলের মূল্য ছিল মাত্র ০.১৪ ডলার। মাত্র ০.১৫ ডলারে পাওয়া যেত ৪০ স্লাইসের বড় রুটি।
গাদ্দাফি সরকারের ৫০ হাজার ডলার সহায়তা পৌঁছে যেত প্রতিটি নববিবাহিত দম্পতির কাছে।
যেন তাঁরা বাড়ি কিনে স্বাচ্ছন্দ্যে তাঁদের নতুন জীবন শুরু করতে পারেন। সন্তান জন্ম দেওয়ার পরও লিবীয় মায়েরা সরকারের কাছ থেকে পেতেন পাঁচ হাজার ডলার করে। পড়াশোনা বা চিকিত্সাসেবার জন্য কেউ বিদেশে গেলে তাঁকে মাসে দুই হাজার ৩০০ ডলার দেওয়া হতো সরকারের তরফ থেকে।
গাদ্দাফি ক্ষমতায় আসার আগে লিবিয়ায় স্বাক্ষরতার হার ছিল মাত্র ২৫ শতাংশ। শিক্ষাখাতে বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি দিয়ে সেই সংখ্যাটা ৮৩ শতাংশে নিয়ে গিয়েছিলেন গাদ্দাফি।
পুরোপুরি বিনামূল্যে শিক্ষা ও চিকিত্সাসেবা পেত লিবিয়ার জনগণ। সেখানকার ২৫ শতাংশ মানুষের বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি আছে। পড়াশোনা শেষ করে কেউ যদি চাকরি না পেত, তাহলে বেকার থাকা অবস্থায় সরকারের কাছ থেকে ভাতাও পেত তারা।
কৃষিখাত উন্নয়নের ক্ষেত্রেও বিশাল অবদান ছিল মুয়াম্মার গাদ্দাফির। কৃষিকাজকে পেশা হিসেবে নিতে ইচ্ছুক লিবিয়ার জনগণকে জমি, খামারবাড়ী, বীজ ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি দেওয়া হতো সরকারের পক্ষ থেকে।
সবই বিনামূল্যে।
গাদ্দাফির লিবিয়ার কোনো বৈদেশিক ঋণ তো ছিলই না, বরং বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ ছিল ১৫০ বিলিয়ন ডলার।
সূত্র: খারিয়ান টাইমস।
লিংক ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।