আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বর্তমান বিচারব্যবস্থা জুয়ার আড্ডায় পরিণত হয়েছে : ড. আকবর আলী খান

১৬ অক্টোবর ( রেডিও তেহরান) : তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা আকবর আলী খান বলেছেন, ‘ব্রিটিশদের করে যাওয়া আইন এবং বর্তমান আইনের সঙ্গে আমাদের জীবনযাত্রার কোনো মিল নেই। এ ব্যবস্থায় দুই পক্ষের জেতার কোনো সুযোগ নেই। ফলে আইনের সঠিক প্রয়োগ নিয়ে সংশয় সন্দেহ রয়েই যাচ্ছে। ' তিনি বলেন, ‘ব্রিটিশদের তৈরি করা আইনের মাধ্যমে জাল দলিল করা এবং একজনকে জেলে পাঠানো সম্ভব হতো। সেই ধারাবাহিকতায় বর্তমানে আমাদের বিচারব্যবস্থা জুয়ার আড্ডায় পরিণত হয়েছে।

' আজ (রোববার) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে এথিকস ক্লাব বাংলাদেশের উদ্যোগে এক কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন। এ বিষয়ে রেডিও তেহরানকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ড. আকবর আলী খান বলেছেন, ব্রিটিশদের সঙ্গে আমাদের বিচারব্যবস্থার কোন মিল না থাকায় এদেশের বিচারব্যবস্থা কৃত্রিম হয়ে দাঁড়ায়। এর ফলে স্থানীয় মাটিতে এর শেকড় গজাতে পারেনি। ড. আকবর আলী খানের মন্তব্যের বিষয়ে বিশিষ্ট আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন রেডিও তেহরানকে বলেছেন, দেশের বিচারব্যবস্থা এখন দলীয়করণে ভরপুর। ক্ষমতাসীন সরকার নিজ দলীয় লোকজনদের বিচারাঙ্গনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদে বসিয়ে আইনকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করছে।

এমন প্রেক্ষাপটে বিচারব্যবস্থা জুয়ার আড্ডায় পরিণত হয়েছে বলে ড. আকবর আলী খান যে মন্তব্য করেছেন, তাতে প্রকৃতপক্ষেই সত্যের প্রতিফলন ঘটেছে। তিনি বলেন, বাস্তবতার সঙ্গে কোন মিল না থাকায় অপরাধ দমনে কোনো ভূমিকাই রাখতে পারছে না ব্রিটিশ আমলের প্রেক্ষাপট বিবেচনায় তৈরী করা আইনগুলো। কারণ তখন যে ধারায় যে অপরাধের শাস্তির বিধান করা ছিল,এত বছরে তা নিশ্চয়ই পাল্টে গেছে। কিন্তু অনেক আইনের ক্ষেত্রে জরিমানা কিংবা শাস্তি এখনো সেই মাত্রায়ই রয়ে গেছে। যা অপরাধ দমনে সহায়ক নয় বলেই মনে করেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন।

আইন ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক রেডিও তেহরানকে বলেছেন, সব আইনকে ঢালাওভাবে বাস্তব প্রেক্ষাপটের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়,এটা হয়ত বলা যাবে না। কারণ অনেক আইন আছে যা দু'শ' বছর আগে যে ধারায় ছিল, এখনো ঠিক তাই আছে এবং পরেও তা ঠিক থাকবে। তবে অনেকগুলো আইন এখনো আছে যা সময়ের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। তবে এজন্য বিচার অঙ্গন নয়, কলুষিত রাজনীতিকে দায়ী করেছেন ড. শাহদীন মালিক। অন্যদিকে ব্যারিস্টার রফিকুল হক রেডিও তেহরানকে বলেছেন, ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের সময়েই ব্রিটিশ আইনের অবসান হয়েছে এদেশ থেকে।

এরপরে অনেক আইন হয়েছে দেশের প্রয়োজনে। তবে কিছু আইন রয়েছে সেই পুরোনো আমলের। তার মানে এই নয় যে, দেশে এখনো ব্রিটিশ আইন দ্বারা চালিত হচ্ছে। ড. খানের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মাহবুবে আলম রেডিও তেহরানকে বলেছেন, ঢালাওভাবে সব আইনের বিরুদ্ধে মন্তব্য করা ঠিক নয়। এখানে নির্দিষ্ট করে বললে ভাল হত যে, কোন্‌ আইনটি বর্তমান বাস্তবতার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।

বিচারব্যবস্থা নিয়ে এ ধরনের মন্তব্য করলে তা দেশে অরাজকতা সৃষ্টি হতে পারে বলে মনে করেন অ্যাটর্নি জেনারেল। তিনি বলেন, এখনো যেসব পুরোনো আইন আছে প্রয়োজনে তা ধীরে ধীরে সংশোধন ও নতুন করে তৈরী করা হবে। তবে, আইনি কাঠামো দলীয়করণমুক্ত এবং সময়োপযোগী হওয়া একান্তই জরুরী বলে তিনি মন্তব্য করেন। সৌজন্যে : রেডিও তেহরান ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.