আমার ব্লগে স্বাগতম বেশ কিছুদিন আগে কথা হচ্ছিল কতিপয় বাংলাদেশির সাথে। তারা সবাই হজ্জ করে এসেছেন। হজ্জ্ব ও সৌদিআরব দেশটির মাহাত্ম্য বর্ণনা করছিলেন। তারা সৌদিআরবের প্রতি এতটাই মুগ্ধ যে, নবীজীর দেশের কোনরকম বদনাম গ্রহণ করতে নারাজ। তারা বলছেন, মক্কায় নাকি সবাই স্বর্ণের দোকান খোলা রেখে নামাজে চলে যায়, কিছুই হয় না।
এবার তারা তুলনা দিলেন আমেরিকার সাথে। আমেরিকাতে কি এটা সম্ভব?
নাহ, আমেরিকাতে এটা সম্ভব নয়। শতভাগ সৎ মানুষ পৃথিবীতে একজন পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ। সততার সীমা থাকে। কেউ হয়তবা একশত টাকাতেই বিক্রি হয়ে যায়, আবার কাউকে কেনার জন্য এক কোটি টাকা লাগতে পারে।
এক কোটি টাকায় নাহলে অংকটা বাড়িয়ে দিন, বিক্রি হবেই।
অনেকেই আমার সাথে দ্বিমত থাকতে পারেন। কিন্তু প্রমাণ পাওয়া দুষ্কর। মানুষের বৈশিষ্ট্যই হচ্ছে যে, মানুষ নিষিদ্ধ কাজটা বা যেটা করা বারণ সেটা করতে চাইবে। এজন্যই তৈরি হয় আইন।
আইনের মাধ্যমে সুষম সমাজ ব্যবস্থা তৈরি ও রক্ষা করা হয়। আমেরিকাতে সবাই আইন মেনে চলে। আইনের ফাঁক পেলে অন্য সব দেশের মত আমেরিকাতেও আইন অমান্য করা হয়। সাধারণ একটা উদাহরণ দিই। এখানে অনেককেই সাবওয়ে ট্রেনে আশেপাশে কেউ না থাকলে টোকেন না দিয়ে স্টেশনে ঢুকে পড়তে দেখেছি।
তবে আমেরিকাতে কারো কল্লা ধড় থেকে নামিয়ে দেয় না। এখানে আসামীকে নিজের পক্ষে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয় এবং আসামী দোষী প্রমাণ হলেও জনসম্মুখে আসামীর গর্দান থেকে মাথা কেটে নেওয়া হয় না।
পৃথিবীর সবচেয়ে বর্বরোচিত কাজ সৌদি আরবে চলছে আর সেই বর্বরতার শিকার হল আমার দেশের মানুষ। আমরা কিছুই করতে পারছি না। কষ্ট হচ্ছে, ক্ষোভ হচ্ছে, ভেঙ্গে-চুরে জ্বালিয়ে দিতে ইচ্ছে করছে কিন্তু কিছুই করতে পারছি না।
আমাদের প্রধানমন্ত্রী বিশ্বশান্তির মডেল উপস্থাপন করলেন আর তার শান্তির মডেলকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে সৌদিআরব সবচেয়ে বর্বরোচিত কাজটি করে দেখাল। নাহ, আমাদের রাষ্ট্রপ্রধান, আমলা, কূটনৈতিকগণ কিছুই করতে পারেন না, পারবেন না। দরকার নেই তাদের কিছু করার কারণ ইতোমধ্যে অনলাইন, ব্লগ, সামাজিক ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিশ্বকে বর্বরতার বিরুদ্ধে জাগিয়ে তোলার দায়িত্বটি সাধারণ জনগণ নিজেরাই হাতে নিয়েছে। আর কী করা যায়?
চলুন আমরা বাংলাদেশে অবস্থানকারী বাংলাদেশিরা এবং পৃথিবীর সমস্ত জায়গায় বসবাসকারী বাংলাদেশিরা সৌদিআরবে হজ্জ বর্জন করি (অন্ততঃপক্ষে এ বছরটি); বর্বর, পিশাচদের দেশে কিসের হজ্জ? চলুন, সৌদিআরব থেকে সকল বাংলাদেশিকে ফিরিয়ে আনি। না খেয়ে থাকব, তবু পিশাচের দেশে কাজ করবোনা।
চলুন, আমরা আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে সৌদি আরবের সাথে সকল সম্পর্ক ছিন্ন করতে বলি। বর্বর, পিশাচদের সাথে কিসের সম্পর্ক? চলুন শুরুটা আমরা করি। আমাদের দেখে পৃথিবীর বাকী দেশগুলোও জেগে উঠবে।
চলুন জেগে উঠি পৈশাচিকতার বিরুদ্ধে। জেগে উঠুক বিশ্ববাসী বর্বরতার বিরুদ্ধে।
সঞ্চয় রহমান
অক্টোবর ১০, ২০১
ভিডিওঃ
আরো একটি লিংক
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।