আমি একাই পৃথিবী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম http://www.facebook.com/kalponikvalo জীবনে খুব বেশি মিছিল করিনি আমি। আমার মিছিলের অভিজ্ঞতা বলতে ক্রিকেটে বাংলাদেশ দল জিতলে উল্লসিত জনগনের চলমান আনন্দ মিছিলের সাথে দু কদম হাঁটা এবং মাঝে মাঝে 'ইইয়্যাআআআহুউউ' বলে কিছু অর্থহীন চিৎকার করা। ভাবতেই অবাক লাগে এই আমিই গতকাল হাজার মানুষের মিছিলে একের পর এক স্লোগান দিয়েছি, কখনও অন্যদের স্লোগানে কন্ঠ মিলিয়েছি, আবার কখন অন্যরা আমার স্লোগানে কণ্ঠ মিলিয়েছে। আমাদের স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়েছে রাজপথ।
প্রকম্পিত হয়েছে শাহবাগ স্কয়ার।
হ্যাঁ, আমি অস্বীকার করব না, আমি বেশ গর্বিত-ই বোধ করছি। এ যে গর্বিত হবার মতই ঘটনা। ভাবতে ভালো লাগছে একটি ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী হতে পেরেছি আমি, আমাদের এই প্রজন্ম । এই প্রতিবাদ, এই মিছিল, এই আন্দোলন সবই স্থান পাবে বাংলাদেশের ইতিহাসের নতুন পাতায়।
নব্বই এর গনঅভ্যুথান পর হতে আর কোন আন্দোলনেই গনমানুষের এতটা স্বতঃস্ফুত সম্পৃক্ততা ছিল না, অংশগ্রহন ছিল না। যে মানুষ গুলো এসেছে, তাদেরকে কেউ ভাড়া করে আনে নি, কেউ জোর করে আনে নি, প্রত্যেকে এসেছে তাদের নিজ তাগিদে। তারা কেউ পুড়িয়েছেন ঐ ঘৃন্য রাজাকারদের কুশপুত্তলিকা, কেউ বা দিয়েছেন প্রতিকী ফাঁসী। আর যারা এমন কিছু করতে পারেন নি, অন্তত তারা একবার হলেও থু থু ছিটিয়েছেন ঐ সব ঘৃন্য নরপশু রাজাকারদের প্রতি। প্রবল মিছিলে, মশালে সয়লাভ রাজপথে দেখে বুঝা যায় কতখানি ঘৃনা মানুষ পুষে রেখেছে ঐ সব ঘৃন্য রাজাকারদের প্রতি।
তাই এই জাগরন আখ্যায়িত হচ্ছে জাতির একটি ঐতিহাসিক মূহুর্তে। কিছুক্ষন আগে দেখলাম, একদল স্কুলের শিশু এই সমাবেশে যোগ দিয়েছে।
আমার গলা দিয়ে এখন শব্দ বের হতে প্রবল কষ্ট হচ্ছে। নিজের কণ্ঠ শুনে নিজেই চমকে উঠছি। মনে হচ্ছে অনেকগুলো কন্ঠ কথা বলছে।
ভালো করে খেয়াল করে শুনি, এতো সেই সব ন্যয় বিচার বঞ্চিত শহীদের কন্ঠস্বর-প্রবল অভিমানে এক সাথে বের হয়ে আসছে। তারা দাবি জানিয়ে বলছে, আমাদের কাজ আমরা করেছি, এখন তোমরা তোমাদের কাজ কর! আমাদের রক্ত বৃথা হলে হোক, দেশটাকে বাঁচাও। কলংকমুক্ত কর।
আর তাই তো আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যতই প্রবল কষ্ট হোক না কেন, আমি স্লোগান দিয়েই যাব, আজকেও দেব, আগামী কালও দেব, যতদিন না আমরা ন্যায় বিচার পাচ্ছি, আপনার আমার কণ্ঠই হবে শহীদের বেদেহী আত্মার কন্ঠ। হাজারো মানুষের স্লোগানে মুখরিত হবে রাজপথ- ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই, রাজাকারের ফাঁসি চাই।
শহীদের রক্ত বৃথা যেত দেব না, জামাত শিবির রাজাকার, এই মূর্হতে বাংলা ছাড়। রাজাকারের দুই গালে জুতা মার তালে তালে। বন্ধ কর বন্ধ কর, জামাত শিবির বন্ধ কর। কোন গোপন আঁতাত হলে, যাব জেলে জনে জনে, জেলের তালা ভাঙ্গব, রাজাকার মারব। জ্বালো জ্বালোওওওও, আগুন জ্বালো।
আপনিও যদি ইতিহাসের অংশ হতে চান, এই দূর্লভ ঐতিহাসি ঘটনার অংশ হতে চান, আপনিও যোগ দিন। রুখে দিন এই সকল চক্রান্তকে। আমাদের মা মাতৃভূমিকে যারা ধর্ষন করেছে, আর যাই হোক আমরা তাদের ক্ষমা করতে পারি না। জেগে উঠুক বাংলাদেশ! জেগে উঠার এখনই সময়।
আপনি যদি আসতে চান, আমাদের পাশে এসে দাঁড়াতে চান, তাহলে জাদুঘরের সামনের এসে দাঁড়ান।
আমরা যদিও বিচ্ছিন্ন ভাবে সবাই সকাল থেকেই থাকি কিন্তু বেলা ৩টার পরপরই আমরা সবাই সেখানে জমায়েত হই। ব্লগার হিসেবে আপনি চাইলে আপনার পরিচয় গোপন রাখতে পারেন। সামুর ব্লগার এটাই হবে আমাদের পরিচয়।
সকল রাজাকারের ফাঁসি চাই,
পক্ষ নিলে রক্ষা নাই।
ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই,
রাজাকারের ফাঁসি চাই।
এই হোক আমাদের মূল স্লোগান। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।