আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গোয়েন্দা ঝাকানাকা ও বিউটি পার্লার( আনিস কার্লমার্ক্সের সাজগোজের )রহস্য--লিখেছেন হিমু

তাশফী মাহমুদ গোয়েন্দা ঝাকানাকা ও বিউটি পার্লার রহস্য লিখেছেন হিমু (তারিখ: শুক্র, ০৭ অক্টো ২০১১, ০১:১৫ AM) (এত মজা লাগলো যে শেয়ার না করে পারলাম না ) ১, ঝাকানাকা সচরাচর যা করেন, তা-ই করলেন। একটি ভুরু আরেকটি থেকে ইঞ্চি দুয়েক ওপরে তুলে ফেললেন। কীভাবে, সে এক রহস্য। বোধ করি আরিজোনার মরুভূমিতে লী মেজরসের কাছে মাসদুয়েক ভুরুকুংফু শিক্ষারই ফল। পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের দারোগা কিংকর্তব্যবিমূঢ় চৌধারি সেই একখানা উত্তোলিত ভুরুর ঘায়ে ঘায়েল হয়ে বললেন, "স্যার, আমাদের সোর্স মোটামুটি পাকা খবর এনেছে।

বদরু বিটকেলটা একটা ব্যাটাছেলেদের বিউটি পার্লারে গিয়ে সেঁধিয়েছে। আমরা আশপাশটা জোর কর্ডন করে ফেলেছি স্যার। ছাদের ওপরেও লোক নজর রাখছে। বদরুর সাধ্য নেই এবার সটকায়!" ঝাকানাকা একটা রূপার কাঠিদানি থেকে একটা প্লাস্টিকের আগায় তুলো জড়ানো কানকাঠি তুলে চোখ বুঁজে কান চুলকাতে চুলকাতে বললেন, "সব পাকা আসলে পাকা নয়। মাঝেমধ্যে কাঁচা জিনিসের ওপর নাহক কেমিক্যাল চড়িয়ে সেটাকে পাকানো হয়।

যেমন ধরুন, কলা। মধুপুরে গেলে দেখবেন কলা পাকানোর ইন্ডাস্ট্রি গড়ে উঠেছে। সেখানে মুখে গামছা আর কাঁধে সিলিণ্ডার নিয়ে দিনমান নিতান্ত কাঁচা কলার কাঁদিতে কেমিক্যালের কলঙ্ক ছিটিয়ে চলছে লোকে। আপনার সোর্সের পাকা খবর কি নিজে থেকেই পেকেছে, নাকি কোনো আলকেমির বিটলেমিতে পেকেছে?" কিংকু চৌধারি মুষড়ে পড়ে বললেন, "স্যার, নিজে থেকে পেকে ওঠা, নাকি গায়ের জোরে পাকানো, সেটা দেখার মতো পাকা চোখ তো আমার নেই। আমি তো এখনও নিতান্ত কচি!" ঝাকানাকা বিস্ফারিত চোখে কিংকু চৌধারিকে আপাদমস্তক একবার দেখে নিয়ে বললেন, "ওহ! তো আমাকে কি যেতেই হবে? মুখে বললে চলবে না?" কিংকু চৌধারি হাতের লাঠিটা দাঁতে কামড়াচ্ছিলো, সে চমকে উঠে বললো, "সে কী স্যার! খবরটা যদি সত্যি হয়, তাহলে? কোনোভাবে যদি আটক বদরু পালিয়ে যায়? বহু কষ্টে ছয়টি মাস তার পেছনে টিকটিকি লেলিয়ে শেষমেশ একটা খবর পাওয়া গেছে স্যার ... আপনি না গেলে যদি সে পালায়, তবে তো বড় কেলেঙ্কারি হবে!" ঝাকানাকা বিরক্ত হয়ে বললেন, "চলুন তাহলে, লুঙ্গি পরেই যাই।

কাপড় পাল্টে প্যান্ট পরতে আলসেমি লাগছে। " কিংকু চৌধারি ইতস্তত করে বললো, "কিন্তু স্যার ... যদি বদরু সত্যিই ওখানে থেকে থাকে, আর যদি মনে করুন কোনো কারণে আপনাকে ধরুন গিয়ে বড় কোনো অ্যাকশনে যেতে হয় ... সমস্যা হবে না?" ঝাকানাকা গোঁফে তা দিয়ে বললেন, "আমার লুঙ্গির গিঁট সুইস ব্যাঙ্কের লকারের তালার মতো জনাব কিংকু! সামান্য বদরুকে দরকার পড়লে দুয়েকটা কাম্পুচিয়ার কুংফু প্যাঁচে ফেলে আলুভর্তা বানাতে গিয়ে যদি এই গিঁট খুলে যায়, তাহলে ক্যাম্নে কী?" ২. জ্যামে কাটানো এক ঘন্টা সময় ঝাকানাকা মন দিয়ে কিংকু চৌধারির কথা শুনলেন। বদরুর খবর জুগিয়েছে এক ধুরন্ধর ইনফরমার। দীর্ঘ ছ'টি মাস সাধনা করে অবশেষে সে বদরুর খোঁজ পেয়েছে। তার কথামতো, আজ বদরু একেবারে কোটটাই পরে কর্পোরেট কর্তাদের মতো চেহারা বানিয়ে ঢুকেছে বনানীর এক ব্যাটাছেলেদের বিউটি পার্লারে।

"নাম কী ঐ বিউটি পার্লারের?" ঝাকানাকা শুধালেন। "খুবই নামকরা বিউটি পার্লার স্যার। গোটা বাংলাদেশে তাদের শাখা প্রশাখা ছড়ানো। ছেলে মেয়ে সকলেই তাদের বিউটি পার্লারে গিয়ে সাজগোজ করে, শরীর ম্যাসাজ করায়, হাতের পায়ের নখ ঘষামাজা করে। তারা না থাকলে গোটা বাংলাদেশই আজ কুচ্ছিত রোমশ শূর্পনখা দিয়ে ভরে যেতো স্যার!" কিংকু চৌধারি উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে বলে।

ঝাকানাকা আবার জিজ্ঞাসা করেন, "নাম কী?" কিংকু গদগদ গলায় বলে, "লালিমা পাল, স্যার! ওদের স্লোগান শুনেছেন নিশ্চয়ই রেডিও টিভিতে, আপনার লালিমা আমরা পালি?" ঝাকানাকা নড়েচড়ে বসে বলেন, "ঐ যে আনিস কার্লমার্ক্সের সাজগোজের দোকান? সে তো বেশ কেষ্টুবিষ্টু লোক। সারাক্ষণই হিল্লিদিল্লি করে বেড়ায়, বড়বড় লোকজনের সাথে ওঠবোস করে। ব্যাটার সাথে বদরুর কোনো গোপন লেনদেন নেই তো আবার?" কিংকু চৌধারি চমকে উঠে বললেন, "সে কী বলছেন স্যার! আনিস কার্লমার্ক্সের সাথে কেন বদরুর বিজনেস থাকবে?" ঝাকানাকা বললেন, "হুমমম! তা আমি তো জানতাম আনিস কার্লমার্ক্সের ক্লায়েন্ট সব মেয়েরা। বদরু সেখানে ঢুকলো কী করে?" কিংকু চৌধারি বললো, "না স্যার, বনানীর এই ব্রাঞ্চটা ছেলেদের জন্যে। এটার নাম আসলে লালিমা পাল (পুং) ।

" ঝাকানাকা আড়চোখে কিংকুকে এক ঝলক দেখে নিয়ে বললেন, "আপনি খুব খোঁজ খবর রাখেন দেখি! আপনারও যাতায়াত আছে নাকি ওখানে?" কিংকু হেঁ হেঁ করে হেসে বললো, "মাঝেমধ্যে যাই স্যার, ফেসিয়াল করাতে। চোরছ্যাঁচ্চড় পিটিয়ে যখন গা হাত পা ব্যথা হয়ে যায়, তখন স্পা করাতে যাই স্যার। বড় আরাম!" ঝাকানাকা গোঁফে তা দিয়ে বললেন, "হুমমমমম! তা বদরুর ছদ্মবেশের কোনো ছবি তুলতে পারেনি আপনার টিকটিকি?" কিংকু চৌধারি বললো, "ছবি সে তোলার মওকা পায়নি স্যার। বদরুর অটোরিকশার ড্রাইভার সেজে বসেছিলো তো, তাই। অটোরিকশা চালাতে চালাতে প্যাসেঞ্জারের ছবি তোলার মতো এলেমদার টিকটিকি সে নয় স্যার।

তাছাড়া, বদরু নাকি কোথাও ঢোকে এক চেহারা নিয়ে, বেরোয় অন্য চেহারা নিয়ে। ছবি তুলেই বা লাভ কী বলুন?" ঝাকানাকা বললেন, "আপনারা কর্ডন করছেন কীভাবে?" কিংকু চৌধারি সগর্বে বললেন, "এলিমেন্টারি, স্যার! বাইরের লোককে ভেতরে ঢুকতে দিচ্ছি না, আর ভেতরের লোককে বাইরে বেরোতে দিচ্ছি না!" ঝাকানাকা বললেন, "এ নিয়ে গণ্ডগোল হবে না?" কিংকু চৌধারি বললেন, "কড়া হুকুম দিয়ে এসেছি স্যার। বাইরে থেকে কেউ গিয়ানজাম করলেই লাঠিপেটা করতে বলেছি। আর ভেতর থেকে কেউ জোর করে বেরোতে চাইলে রাবার বুলেট মেরে বসিয়ে দেয়া হবে। " ঝাকানাকা বললেন, "তার মানে ভেতর একগাদা লোকের মধ্যে বদরু গা ঢাকা দিয়ে আছে?" কিংকু চৌধারি উৎফুল্ল গলায় বললো, "ঠিক তাই স্যার ... যদি খবরটা পাকা হয়!" ৩. লালিমা পাল (পুং) এর সামনে গাড়ি থেকে নেমে ঝাকানাকা দেখলেন, বিরাট শোরগোল হচ্ছে।

কঠোর চেহারার এক ঝাঁক পুলিশ লালিমা পাল (পুং) এর তিনতলা কমপ্লেক্স ঘেরাও করে রেখেছে, আর বাইরে স্লোগান দিচ্ছে হরেক রকম চেহারার লোক। ভিড় ঠেলে এগিয়ে ঝাকানাকা গর্জে উঠলেন, "হচ্ছে কী এখানে? এতো হাউকাউ কীসের?" সুবেশী এক মাঝবয়েসী লোক বললেন, "ফ্যাসিবাদী পুলিশ আমাদের পার্লারে ঢুকতে দিচ্ছে না! এদিকে রাত ন'টায় আমার একটা দাওয়াত আছে! ফেসিয়াল করাতে না পারলে কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে!" ঝাকানাকা বললেন, "আপনারা কি জানেন না, ভেতরে বাংলাদেশের সবচে বড় বিটকেল বদরু খাঁ আছে? তাকে পাকড়াও করার আগ পর্যন্ত এই পার্লার অফ লিমিটস! আপনারা অন্য কোথাও সাজগোজ করুনগে যান!" এক তরুণ ফুঁপিয়ে উঠে বললো, "আমার আজ স্পা করানোর কথা! প্রতি ওয়েন্সডে স্পা করাতে না পারলে আমার ডোপামিন ব্যালান্সে সমস্যা হয়!" ঝাকানাকা বললেন, "বটে? ডোপামিন দিচ্ছি রোসো! য়্যাই কে আছেন, এই ছিঁচকাঁদুনেগুলোর পেছনে দ্যান তো এক পশলা ডলা!" এক কনস্টেবল লাঠি উঁচাতেই লোকজনের ভিড় চটজলদি পাতলা হয়ে গেলো। ঝাকানাকা গটগটিয়ে পার্লারের ভেতরে ঢুকে পড়লেন। পার্লারের ভেতরে এক উত্তেজনাময় পরিস্থিতি। চার পাঁচজন লোক সেখানে মারমুখো চেহারা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে তোয়ালে পরে, তাদের সামনে কাঁচুমাচু হয়ে দাঁড়িয়ে এক স্যুটপরা টেকো ভদ্রলোক, আর গালে হাত দিয়ে হাপুস কাঁদছে সিকিউরিটির উর্দি পরা এক তরুণ।

ঝাকানাকা বাজখাঁই গলায় বললেন, "কী ব্যাপার? এতো হট্টগোল কীসের? আর এ কী, আপনারা নেংটো কেন? জামাকাপড় কই?" তোয়ালে পরা এক গুঁফো যুবক গর্জে উঠলো, "আপনিই বা কে? এখানে কী চান?" কিংকু চৌধারি এগিয়ে গিয়ে হাতের বেত একবার বাতাসে ঘুরিয়ে বললেন, "ইনি গোয়েন্দা ঝাকানাকা। আমি দারোগা কিংকু চৌধারি। আর এটা আমার হাতের বেত, এখনও এর কোনো নাম রাখিনি। এখন সবাই চুপ। আমরা জিজ্ঞেস করবো, আপনারা উত্তর দেবেন।

বাড়তি কথা বললে ধরে হাজতে নিয়ে অ্যায়সা প্যাঁদান প্যাঁদাবো যে এক মাস এইখেনে পড়ে পড়ে মাসাঝ করাতে হবে দুই শিফটে। " গুঁফো যুবক ঢোঁক গিলে চুপ করে গেলো। মাঝবয়সী এক হাফটেকো ভদ্রলোক তোয়ালের গিঁট এক হাতে ধরে রেখে অন্যহাত আকাশের দিকে উঁচিয়ে ফুঁপিয়ে উঠলেন, "খসে পড়বে! লালিমা পাল পুঙের ইঁটকাঠ সব খসে পড়বে! আল্লার গজব পড়বে! লা'নত পড়বে!" ঝাকানাকা বললেন, "কী হয়েছে?" হাফটেকো ভদ্রলোক বললেন, "গোয়েন্দা সাহেব, দেখুন এদের কাণ্ড! এদের কাছে আমরা আসি একটু সেবা নিয়ে চাঙা হতে, আর এরা কিনা ঘরে লুকানো ক্যামেরা দিয়ে আমাদের নেংটুস ছবি তুলে রাখে!" ঝাকানাকা ভুরু কুঁচকে তাকালেন স্যুটপরা ফুলটেকো ভদ্রলোকের দিকে ফিরে বললেন, "আপনিই কি ম্যানেজার?" ভদ্রলোক ফ্যাকাসে মুখে মাথা নেড়ে বললেন, "হ্যাঁ!" ঝাকানাকা বললেন, "ব্যাপার কী? নেংটুস ছবির কথা শুনছি যে?" ভদ্রলোক বললেন, "ইয়ে, এটা এটা ভুল বোঝাবুঝি আসলে ...। " ঝাঁকড়া চুলের বাবরী দোলানো এক মহান তোয়ালেপরা যুবক গর্জে উঠলো, "সিসিটিভি ফিট করে আমাদের নেংটুপুটুস অবস্থা ভিডিও করে রাখিস, আবার বলছিস ভুল বোঝাবুঝি? তবে রে!" হাবিলদার-ছাঁট দেয়া এক প্রৌঢ় দুই হাতে তোয়ালে আঁকড়ে ধরে হুঙ্কার দিলেন, "পুরা বাড়ি জ্বালায়া দিবাম!" চুলে ঝুঁটিবাঁধা এক চশমাপরা তরুণ সন্তর্পণে এগিয়ে এসে করমর্দন করলো ঝাকানাকার সাথে। "আমি আপনার খুব ফ্যান! আপনার সব গল্প পড়েছি স্যার! আপনি পেঁদিয়ে যতগুলো রহস্যের গিঁট ছাড়িয়েছেন, প্রত্যেকটাই আমার প্রায় মুখস্থ স্যার! প্লিজ, এদের একটু কড়কে দিন।

ঐ যে মঙ্গোলিয়ার মরুভূমিতে তাতারদের কাছে শেখা তাতারী চিমটি, ওটা একটু মেরে দিন স্যার এই বদমাশদের! এরা স্যার স্পা এর ঘরে ক্যামেরা লুকিয়ে রেখে মক্কেলদের নেংটু ছবি তুলে রাখে!" ঝাকানাকা গোঁফে তা দিয়ে বললেন, "ঐ সিকিউরিটির জামা পরা ছোকরা কাঁদছে কেন?" ফুলটেকো ম্যানেজার গুঁফো যুবককে দেখিয়ে বললেন, "স্যার, এই যে ইনিই কাশেমকে শুধুশুধু বিনা উস্কানিতে চটকানা মেরেছেন স্যার!" গুঁফো যুবক আবারও গর্জে উঠলো, "এই হতভাগা রিসেপশনে বসে বসে লুকিয়ে লুকিয়ে ক্যামেরা দিয়ে আমাদের নেংটুপুটুস ছবি তুলে রাখবে আর আমি চটকানা মারবো না তো কী মারবো? কোলে তুলে থুতনি নেড়ে দেবো?" ঝাকানাকা কিংকু চৌধারিকে বললেন, "ভেতরটা সার্চ করে ফেলুন এক রাউণ্ড। আমি দেখছি এদিকে। " কিংকু চৌধারি বেত দুলিয়ে চলে গেলেন পার্লারের ভেতরে। হাফটেকো ভদ্রলোক বললেন, "গোয়েন্দা সাহেব, আপনি এক্ষুণি এদের অ্যারেস্ট করুন। এদের নামে য়্যায়সা কড়া মামলা দেবো যে সারাটা জীবন জেলের নুডলস খেতে হবে!" ঝাঁকড়া চুলের যুবক বললো, "জেলে নুডলস খেতে দেয় নাকি?" হাফটেকো ভদ্রলোক থতমত খেয়ে বললেন, "দেয় না?" বাটিছাঁট প্রৌঢ় বললেন, "জেলে রুটি খেতে দেয় রে ভাই, রুটি! গমের চোকলাশুদ্ধু রুটি! লোহার মতো শক্ত!" ঝুঁটিবাঁধা তরুণ বললো, "আপনি কী করে জানেন?" বাটিছাঁট প্রৌঢ় চুপ করে গেলেন।

কিংকু চৌধারি মুশকো এক লোকের কানে ধরে বেরিয়ে এলেন একটা ঘর থেকে। "স্যার, এ হচ্ছে এখানকার মালিশক, এর নাম কোবরা। দারুণ মাসাঝ করতে পারে স্যার। শরীরটা একদম চনমনা হয়ে যায়। কোমায় চলে যাওয়া রোগীকেও কোবরা মাসাঝ করে চাঙা করে তুলেছে স্যার!" কোবরা ভ্যাবলা চোখে আশপাশটা দেখে বললো, "স্যার আমি এইসবের মধ্যে নাই।

মালিশ করি বেতন নেই। এরচে বেশি কিছু আমি জানি না। " ঝাকানাকা ইঙ্গিতে কিংকুকে কাছে ডেকে ফিসফিস করে বললেন, "ম্যানেজার আর সিকিউরিটির লোক দু'টোকে চেনেন?" কিংকু চৌধারি ফিসফিস করে বললেন, "চিনি তো স্যার! দুইজনই অনেকদিন ধরে চাকরি করছে এখানে। " ঝাকানাকা বললেন, "আর কোবরাকে যে চেনেন তা তো দেখতেই পাচ্ছি। তারমানে বাকি পাঁচজনের মধ্যে একজন বদরু।

" কিংকু কড়া চোখে পাঁচ তোয়ালে পরা মূর্তিকে দেখে নিয়ে বললো, "এক রাউণ্ড প্যাঁদাবো নাকি স্যার?" ঝাকানাকা বললেন, "মনে হয় না তার দরকার পড়বে। দাঁড়ান দেখছি। " পার্লারের দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকলেন সফেদ পাঞ্জাবি পায়জামা আর মাথায় ফুন্নি টুপি পরা এক ভদ্রলোক। মুখে মেহেদীরাঙানো দাড়ি, হাতে পলা বসানো আংটি আর তসবি। তার পেছন পেছন ঘরে ঢুকলো জিন্স আর গেঞ্জি পরা এক যুবক।

"সালাম আলাইকুম। আমি আনিস কার্লমার্ক্স। " ঝাকানাকার দিকে হাত বাড়িয়ে দিলেন তিনি। "আর এই যে, এ হচ্ছে দৈনিক কচুবনের সাংবাদিক, নিখিল মন্তাজ। নিখিল, খাতাকলম খুলে কাজে লেগে যান।

" ঝাকানাকা গম্ভীর গলায় বললেন, "আপনার প্রতিষ্ঠানে গোপন ক্যামেরার অপব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে, জানেন?" আনিস কার্লমার্ক্স দুঃখিত কণ্ঠে বললেন, "এটা আসলে ভুল বোঝাবুঝি। " গুঁফো যুবক এগিয়ে গিয়ে রিসেপশনের ওপর থেকে একটা সিডি খামচা দিয়ে তুলে নিয়ে ওপরে উঁচিয়ে ধরে চেঁচিয়ে বলরো, "এই সিডি ভর্তি আমাদের নেংটুস অবস্থায় জামা পাল্টানোর ভিডিও, আর আপনি বলছেন ভুল বোঝাবুঝি?" কিংকু চৌধারি বললেন, "হুমমম?" আনিস কার্লমার্ক্স বললেন, "না না জেন্টলমেন, আপনারা ভুল বুঝছেন। এই ক্যামেরা সিকিউরিটির জন্যে বসানো হয়েছে। সেদিন আমাদের এই ব্রাঞ্চ থেকে কে বা কাহারা ফার্স্ট ন্যাশনাল আরব এক্সপ্রেস ব্যাঙ্কের সিওও-র আন্ডারওয়্যার চুরি করে পালিয়েছে। আমি থানায় ডায়রি করেছি, কিন্তু পুলিশ আজ পর্যন্ত ঐ জাঙ্গিয়া উদ্ধার করতে পারেনি।

আমি নিরুপায়। আপনাদের জাঙ্গিয়ার নিরাপত্তা দেয়া আমার কর্তব্য, নাহলে আমার রোজগার হালাল হবে কী করে? সেজন্যেই এই ক্যামেরা বসানো। প্লিজ ভুল বুঝবেন না। " কিংকু চৌধারি নিচু গলায় ঝাকানাকাকে বললেন, "ফ্রান্সের গোঁগোঁ কোম্পানির জাঙ্গিয়া স্যার, একেবারে লোগো বসানো আসল জিনিস। ব্যাঙ্কার ভদ্রলোক নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ঐ জাঙ্গিয়ার ছবি প্রোফাইল পিকচার হিসেবে ব্যবহার করেন।

বড় শখের জিনিস! উনি এই জাঙ্গিয়া উদ্ধারের জন্যে উপরমহলে জোর হুড়ো দিয়েছেন, একেবারে মন্ত্রী পর্যন্ত। সিআইডি তদন্ত করছে স্যার, শুনেছি এফবিআইও আসতে পারে। " ঝাকানাকা বললেন, "হুমমম!" ঝাঁকড়া চুলের বাবরী যুবক দাঁত খিঁচিয়ে বললো, "জাঙ্গিয়ার নিরাপত্তা দিতে গিয়ে জাঙ্গিয়ার আশপাশের সবকিছুর নিরাপত্তার যে চৌদ্দটা বাজিয়ে দিলেন, তার কী হবে? এইসব ফালতু কথা মানি না, মানবো না!" আনিস কার্লমার্ক্স দুই হাত তুলে বললেন, "জেন্টলমেন! আসুন এই ভুল বোঝাবুঝি আর না বাড়াই। দিন, সিডিটা কাশেমকে দিন, ও এটাকে ফেলে দেবে ডাস্টবিনে। আর আসুন, আমরা আমার রুমে গিয়ে বসি, একটু কফিটফি খাই, একটু আলাপ করি নিজেদের মধ্যে।

লেটস সেটল দিস ইস্যু অ্যামিকেবলি। আমরা সবাই এখানে ভিক্টিম। আমি নিশ্চয়তা দিচ্ছি, আমাদের আলাপ শেষ হবার পর আমরা সবাই একমত হবো যে এটা আসলে একটা দুঃখজনক ভুল বোঝাবুঝি। তাই না নিখিল?" প্যাডে কলম চালাতে চালাতে নিখিল মন্তাজ হাসিমুখে বললো, "আবাজিগস!" পাঁচ তোয়ালে পরা মক্কেলকে নিয়ে আনিস কার্লমার্ক্স নিজের অফিস রুমে চলে গেলেন। ঝাকানাকা কাশেমের হাত থেকে সিডিটা নিয়ে কম্পিউটারের সামনে বসে পড়লেন।

কাশেম কিছু বলতে গিয়েও কিংকু চৌধারির হাতে দোদুল্যমান বেতের দিকে তাকিয়ে চুপ করে গেলো। ঝাকানাকা গভীর মনোযোগে সিডিটা পুরোটা দেখলেন। মাঝখানে কয়েকবার শুধু হুমমমমম বললেন, তারপর সিডিটা ড্রাইভ থেকে বার করে কিংকু চৌধারির হাতে দিয়ে বললেন, "আপনি কি এইখানে নিয়মিত স্পা করান?" কিংকু চৌধারি মাথা নেড়ে হ্যাঁ বলতে গিয়ে থমকে গেলো, তারপর রক্তচক্ষু মেলে কাশেমের দিকে তাকিয়ে বললো, "আপনি কি বলতে চাইছেন স্যার, এরকম সিডি আরো আছে?" ঝাকানাকা হাই তুলে বললেন, "থাকতেই পারে। আর হ্যাঁ, বদরুকে ধরে ফেলেছি। " ৪. আনিস কার্লমার্ক্সের ঘর থেকে পাঁচ মক্কেলই তুষ্টমুখে বেরিয়ে এলো, তাদের প্রত্যেকেরই একটা হাত তোয়ালের নিচে।

নিখিল মন্তাজ তাদের সামনে একটা ক্যাসেট রেকর্ডার তুলে ধরলো। হাফটেকো ভদ্রলোক গলা খাঁকরে বললেন, "ইয়ে, ব্যাপারটা আসলে একটা দুঃখজনক ভুল বোঝাবুঝি। আমরা শিগগীরই একটা যৌথ বিবৃতি দিতে যাচ্ছি। " বাকি চারজন হুহুঙ্কারে সম্মতি দিলো। ঝাকানাকা এগিয়ে গিয়ে বললেন, "আপনারা আবার ঐ অফিস ঘরে গিয়ে বসুন দেখি।

কথা আছে। " আনিস কার্লমার্ক্স এগিয়ে এসে অমায়িক ভঙ্গিতে বললেন, "গোয়েন্দা সাহেব, তার কি আর দরকার আছে? এনাদের ছেড়ে দিন। চলুন আমি আর আপনি এই ইস্যুটা ভায়ে ভায়ে মিটিয়ে ফেলি ...। " ঝাকানাকা গোঁফে তা দিয়ে বললেন, "আপনার এই পাঁচ মক্কেলের মধ্যে একজন হচ্ছে পাজির হদ্দ দাগী দস্যু বদরু খাঁ, তা ই জানেন?" আনিস কার্লমার্ক্সের চেহারাটা ফ্যাকাসে হয়ে গেলো। তিনি ঝট করে ঝাকানাকার পেছনে এসে দাঁড়িয়ে বললেন, "আমি এইসবের মধ্যে নেই।

যৌথ বিবৃতিটা সাইন হয়ে গেলেই আমি বাড়ি চলে যাবো!" গুঁফো যুবক তোয়ালের নিচ থেকে টাকার বাণ্ডিল ধরা হাত উঁচিয়ে গর্জে উঠলো, "এই অভিযোগের ভিত্তি কী?" কিংকু চৌধারি উত্তরে হাতের বেত উঁচিয়ে সবাইকে খেদিয়ে অফিস ঘরে ঢোকালেন। ঝাকানাকা অফিসরুমে ঢুকে আনিস কার্লমার্ক্সের আরামদায়ক রিভলভিং চেয়ারে বসে ডেস্কের ওপর পা তুলে বললেন, "আজ বিকেলে বদরু ছদ্মবেশে এই পার্লারে ঢোকে। উদ্দেশ্য কী তা পরিষ্কার জানি না আমরা। হয়তো আনিস কার্লমার্ক্সের সাথে গোপন মিটিং করতে। অথবা অন্য কোনো স্যাঙাতের সাথে সাক্ষাত করতে।

কিংবা নিছক কোবরার হাতে এক ঘন্টা মালিশ করাতে। কথা সেটা নয়। কথা হচ্ছে, বদরু জানতো না যে এই পার্লারের স্পা ঘরে গোপন ক্যামেরা আছে। তাই সে যথেষ্ট সাবধান হতে পারেনি। " গুঁফো, ঝাঁকড়া, হাফটেকো, বাটিছাঁট আর ঝুঁটি চুপচাপ শুনে যায় ঝাকানাকার কথা।

ঝাকানাকা বলেন, "বদরু আরো জানে না যে তার পেছনে ডানদিকে যে একটা ব্রন্টোসরাসের উল্কি আঁকা আছে, সে কথা আমরা জানি!" গুঁফো, ঝাঁকড়া, হাফটেকো, বাটিছাঁট আর ঝুঁটি, পাঁচজনই চমকে ওঠে। ঝাকানাকা মিটিমিটি হেসে বলেন, "উপস্থিত পাঁচজনই পাঁচ স্পা ঘরে ক্যামেরার কথা না জেনে নিতান্ত বেখেয়াল হয়ে তাদের জামাকাপড় পাল্টে তোয়ালে পরে মাসাঝ টেবিলের ওপর উপুড় হয়ে শুয়ে পড়েছিলো। মজার ব্যাপার হচ্ছে, এদের চারজনেরই পেছনে উল্কি আঁকা। এবং সেটা ডানদিকেই। " গুঁফো, ঝাঁকড়া, হাফটেকো, বাটিছাঁট আর ঝুঁটি, পাঁচজনই একে অন্যের দিকে তাকায় সন্দিহান চোখে।

আনিস কার্লমার্ক্স বলেন, "আর পঞ্চমজন?" ঝাকানাকা বললেন, "তার পেছনটা খুঁটিয়ে দেখার জো নেই, অতিশয় রোমশ। " নিখিল মন্তাজ নোট করতে করতে বলে, "কে সে?" গুঁফো, ঝাঁকড়া, হাফটেকো, বাটিছাঁট আর ঝুঁটি, পাঁচজনই গুঞ্জন করে ওঠে। ঝাকানাকা বললেন, "সেটা বলা ঠিক হবে না। " নিখিল মন্তাজ খসখস করে নোট করে যায়। ঝাকানাকা বলেন, "বাকি চার উল্কিওয়ালার মধ্যে একজনের পেছনে আঁকা তালগাছের উল্কি!" ঝাঁকড়া চুলের বাবরী দোলানো মহান যুবক অস্ফূট শব্দ করে ওঠে।

ঝাকানাকা বলেন, "আরেকজনের পেছনে আঁকা মড়ার খুলির উল্কি, কিন্তু খুলির জায়গায় একটা স্মাইলি দেয়া, তার নিচে দুইটা হাড্ডি কোণাকুণি!" বাটিছাঁট প্রৌঢ় বিড়বিড় করে কী যেন বলেন। ঝাকানাকা বলেন, "আরেকজনের পেছনে উল্কি মেরে লেখা, শাঙন গগনে ঘোর ঘনঘটা!" হাফটেকো ভদ্রলোক গুনগুন করে ওঠেন। ঝাকানাকা বললেন, "লাস্ট বাট নট লিস্ট, শেষজনের পেছনে একটা রাজহাঁসের উল্কি , সেটা পানিতে ভাসছে। " ঝুঁটিওয়ালা যুবক কেশে ওঠে। নিখিল মন্তাজ উজ্জ্বল মুখে গুঁফো যুবকের দিকে কলম বাগিয়ে ধরে, "আপনি! আপনার পেছন মাত্রাতিরিক্ত রোমশ! পাইছি!" গুঁফো যুবক গর্জে ওঠে, "খবরদার এ নিয়ে যদি কাগজে কিছু লিখেছেন, ধরে য়্যায়সা কিলান কিলাবো না!" ঝাকানাকা মিটিমিটি হেসে বলেন, "আপনারা বুঝতেই পারছেন, ব্রন্টোসরাসের উল্কির ওপর বদরু পরবর্তীতে কিছু এডিটিং করেছে।

কিন্তু ব্রন্টোসরাসকে কি তালগাছ বানানো যায়?" ঝাঁকড়াচুল উৎফুল্ল মুখে বলে, "কক্ষণো না!" ঝাকানাকা বলেন, "কিংবা ধরুন, ব্রন্টোসরাসকে কি স্মাইলি রজার বানানো যায়?" বাটিছাঁট খুশি খুশি গলায় বলে, "একদমই না!" ঝাকানাকা বলেন, "ব্রন্টোসরাসের ছবি থেকে "শাঙন গগনে ঘোর ঘনঘটা" টেক্সট কি বানানো সম্ভব?" হাফটেকো বলে, "কোয়াইট ইম্পসিবল!" ঝাকানাকা এবার উঠে দাঁড়িয়ে বলেন, "কিন্তু ... একটা ব্রন্টোসরাসের ছবিতে একটু তুলি চালিয়ে সেটার গায়ে একটা ডানা আর নিচে ঢেউ খেলানো পানি বসিয়ে দিলেই কিন্তু সেটা রাজহাঁস হয়ে যায়!" সবাই এবার ঘুরে তাকায় ঝুঁটিবাঁধা তরুণের দিকে। ঝুঁটিবাঁধা তরুণ কিছু বলার জন্যে মুখ খোলে, তারপর হাল ছেড়ে দেয়। এবং সব গল্পে যা ঘটে, টিংটিঙে তরুণের ছদ্মবেশ ছিঁড়ে ফুঁড়ে বেরিয়ে আসে ঝাড়া সাড়ে ছয় ফুট লম্বা এক ভীষণ মূর্তি, তারপর টেবিল ডিঙিয়ে লাফিয়ে পড়ে ঝাকানাকার ওপর। শুরু হয় মর্মান্তিক মারপিট। ঝাকানাকা এস্কিমো সিলশিকারীদের কাছে শেখা কায়দায় এক দারুণ কনুই বসিয়ে দ্যান বদরু খাঁর পিঠে, জবাবে বদরু খাঁ উত্তর কোরিয়ার এক নিনজা গ্রামে শেখা কিম-জং-ইল মার্কা একটা খামচি বসিয়ে দেয় ঝাকানাকার পেটে।

তারপর মারামারির দৃশ্যটা ঝাপসা হয়ে যায়। কিন্তু শেষরক্ষা আর হয় না শেষ পর্যন্ত। ঝাকানাকা ঝালাই লামার গুম্ফায় বসে ঝাড়া ছয় মাস ধরে শেখা বজ্রাদপি কঠোর এক কড়ে আঙুলের রদ্দা ঝাড়েন বদরুর কানের পেছনে, তারপর চোখের নিমিষে নিজের লুঙ্গি খুলে বদরুর মাথার ওপর গলিয়ে তার হাত শুদ্ধু দুটো গিঁট মেরে দ্যান। বদরু সেই বস্তাবন্ধনে আটকা পড়ে ছটফট করতে থাকে। সবাই প্রথমে চোখ বোঁজে।

কিন্তু না, লুঙ্গির নিচে ঝাকানাকা সবসময়ই একটা হাফপ্যান্ট পরেন। কিংকু চৌধারি এগিয়ে গিয়ে ফোঁসফোঁস করতে থাকে বদরুর মাথায় বেত দিয়ে কষে একটা বাড়ি মারেন। বদরু ধুপ করে মেঝেতে পড়ে যায়। আনিস কার্লমার্ক্স সুগন্ধী রুমাল বার করে কপালের ঘাম মোছেন। তারপর বলেন, "ইয়ে, গোয়েন্দা সাহেব, বদরু আমার পাঁচ লক্ষ টাকার একটা বাণ্ডিল চুরি করেছে, ওটা আমি ফেরত চাই!" নিখিল মন্তাজ মোবাইলে ফোন করে কাকে যেন, তারপর ফিসফাস করে কী যেন বলতে থাকে।

ঝাকানাকা বলেন, "কিংকু সাহেব, বদরু আর এই সিডি, দুটোই আপনার জিম্মায় রইলো। " আনিস কার্লমার্ক্স অমায়িক হেসে বললেন, "খামাখা এই ভারি জিনিসটা টানাহ্যাঁচড়া করে কী লাভ গোয়েন্দা সাহেব? কত বড় বড় জেনারেল, অ্যাডমিরাল, এয়ার মার্শাল আমার এই লালিমা পাল পুঙে বছরের পর বছর ধরে ফেসিয়াল করাচ্ছে, জানেন? কেবিনেটের প্রায় সব মন্ত্রীর শালাসম্বুন্ধীরা আমার মক্কেল। কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালোবাসে?" হাফটেকো ভদ্রলোক বলেন, "বদরুর ভাগের টাকাটা আমাদের মধ্যে ভাগ করে দিতে হবে, নাহলে আমরা যৌথ বিবৃতি র‍্যাটিফাই করবো না!" গুঁফো, ঝাঁকড়া আর বাঁটিছাঁট টেবিল চাপড়ে তাকে সমর্থন করে। আনিস কার্লমার্ক্স বলেন, "জেন্টলমেন! প্লিজ! লোভ করবেন না! অতি লোভে তাঁতী নষ্ট কিন্তু! খুউপ খিয়াল কইরা!" নিখিল মন্তাজ ফোন রেখে হাসিমুখে বলে, "বদি ভাইয়ের সাথে আলাপ করলাম। বদি ভাই বলেছেন, মানুষ যদি নিজের পেছনে উল্কি আঁকতে চায়, সেটা তার সংবিধানসম্মত অধিকার।

এতে আপত্তির কোনো সুযোগ নেই। তাই আমি অফিসে ফিরে গিয়ে নিউজ পাঠিয়ে দিচ্ছি যে লালিমা পাল পুঙের ক্যামেরায় আপত্তিকর কিছু পাওয়া যায়নি। আর আপনি", গুঁফোর দিকে কলম তাক করে সে, "রোমশ ইস্যুতে আপনার সাথে আমার আলাদা আলাপ আছে। " গুঁফো যুবক ফোঁসফোঁস করে শুধু। কিংকু বিষণ্ণমুখে এসে ঝাকানাকাকে ফিসফিস করে বলে, "স্যার, এই বেটা কার্লমার্ক্সের কেমন কানেকশন দেখলেন? আবার সঙ্গে আছে কচুবন সম্পাদক বদি ভাই! মনে হয় বেটা পার পেয়ে যাবে!" ঝাকানাকা অজ্ঞান বদরুর বস্তার দিকে তাকিয়ে বললেন, "হ্যাঁ, মাঝেমধ্যে আসল পাজির হদ্দটাকে পিটিয়ে সোজা করা যায় না।

আর এরাই ব্রন্টোসরাসকে রাজহাঁস বানিয়ে পার পেয়ে যায়!" ঝাকানাকার একটা ফেসবুক পেজ আছে। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.