আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পুঁজিবাদের দাপট, অতঃপর নীরব গণমাধ্যম

www.facebook.com/hamzathefighter গণমাধ্যম = গণ মানুষের জন্য যে মাধ্যম The biases the media has are much bigger than conservative or liberal. They're about getting ratings, about making money, about doing stories that are easy to cover. -- Al Franken সাংবাদিকতা বিভাগের ছাত্র হিসেবে নিজেকে ভবিষ্যৎ সাংবাদিক ভেবে গর্ব বোধ করি। তাই যখন সাংবাদিকদের সম্পর্কে কোন কটুক্তি হয়,তা যেন আমার দিকেই অঙ্গুলি নির্দেশ করে। আজ একটি প্রেক্ষাপটে বিবেকের তাড়নায় তাড়িত হয়ে কলম হাঁকিয়ে চলছি আমার ভবিষ্যৎ ঘর গণমাধ্যম ও পরিচয় সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে। এ যেন আমার নিজেরই বিরুদ্ধে বিবেকের দংশন। গত ৩০ সেপ্টেম্বর,২০১১ তারিখ শুক্রবার রাতে পারসোনার বনানী শাখায় রূপচর্চা করতে আসা এক মহিলা চিকিৎসকের অভিযোগের পর সেখান তেকে সিসি ক্যামেরা ও হার্ডডিস্ক উদ্ধারের ঘটনায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন সুশীল সমাজ।

কোথাও বাথরুম বা ড্রেসিংরুমে সিসি ক্যামেরা স্থাপনরে বিধান না থাকলেও শুধুমাত্র ব্ল্যাকমেইলিং করার উদ্দেশ্যেই পারসোনা কর্তৃপক্ষ করেছে বলে অভিযোগ করেছেন অনেকেই। কিন্তু স্পর্শকাতর কক্ষে কিভাবে ও কেন ওই ক্যামেরা স্থাপন করা হল এ ব্যাপারে কোন সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেনি পারসোনার সত্ত্বাধিকারী বিউটিশিয়ান কানিজ আলমাস খান। সবচেয়ে বিস্ময়কর ব্যাপার হচ্ছে,বিকল্প মিডিয়া(ব্লগ,ফেজবুক) যখন এ নিয়ে সরব, মূল ধারার মিডিয়া(সংবাদপত্র,টিভি) তখন একেবারেই নীরব। খুব অল্প সংখ্যক গণমাধ্যমে খবরটি প্রকাশিত হয়েছে। অধিকাংশই নিশ্চুপ।

দেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর মধ্যে শুধুমাত্র একুশে ও মাছরাঙা টেলিভিশনে সংবাদটি প্রচারিত হয়। কিন্তু এরপর আর কোন আপডেট বা ফলোআপ প্রচার করা হয়নি। বাকি ১৭টি বেসরকারি চ্যানেলে এ প্রসঙ্গে কোন খবর প্রচারিত হয়নি। বিটিভির কথা তো বাদই দিলাম। শীর্ষস্থানীয় দৈনিকগুলোর মধ্যে ঘটনার পরের দিন অর্থাৎ ১অক্টোবর,২০১১ তারিখ শনিবার দৈনিক নয়া দিগন্ত,যুগান্তর,সমকাল,সকালের খবর,ইত্তেফাক ছাড়া অধিকাংশ পত্রিকাই খবরটি এড়িয়ে যায়।

নয়া দিগন্তে খবরটি ছাপা হয় ১৫ নম্বর পাতার সপ্তম কলামের একেবারে শেষে,যার পরিসর ছিল ৩.২ কলাম ইঞ্চি। ফলে খবরটি যথাযথ সংবাদমূল্য পায়নি। এছাড়া খুবই দায়সারাভাবে সংবাদটি উপস্থাপিত হয়। অন্যান্য সংবাদপত্রের মধ্যে বাংলাদেশ প্রতিদিন ও ইনকিলাবে ২ তারিখে এবং কালের কন্ঠে ৩ তারিখে সংবাদটি আসে। স্থানীয় মিডিয়া ঘুমিয়ে থাকলেও বিশ্ব মিডিয়ায় কিন্তু ঠিকই উঠে আসে পারসোনার অপকর্মের খবর।

বিবিসির গতকাল রাত সাড়ে দশটার সংবাদে খবরটি প্রচার করা হয়। কিন্তু কেন এই নীরবতা?যেখানে আমাদের দেশের মিডিয়াগুলো তিলকে তাল করতে ওস্তাদ,সেখানে এত বড় একটি ঘটনার কি কোন সংবাদমূল্য নেই?নাকি এর অন্তরালে কাজ করছে অন্য কিছু? প্রথম আলো যখন বলে,"বদলে যাও,বদলে দাও",তখন তারা কি নিজেদের বদলাতে পেরেছে?Daily Star যখন বলে "Your right to know",তখন তারা কি জানাতে পেরেছে এত বড় একটি জনগুরুত্বপূর্ণ খবর?"জনগণের মুখপাত্র" স্লোগান নিয়ে সংবাদ কি পেরেছে জনগণের সত্যিকারের প্রতিনিধি হতে?"অবিরাম বাংলার মুখ" যাদের স্লোগান,সেই এটিএন কেন পারলো না বাংলা মায়ের মুখে বাস করা এই জীবাণুগুলোর নোংরা রূপ ধরতে? এনটিভি কেন পারলো না "সময়ের সাথে আগামীর পথে" মানুষকে সচেতন করার জন্য সত্যটি তুলে ধরতে?"হৃদয়ে বাংলাদেশ" স্লেগান নিয়ে চ্যানেল আই কেন পারলো না প্রকাশ করতে বাংলার হৃদয়ে বসত গড়া এই জঞ্জালগুলোর মুখচ্ছবি ?গণমানুষের জন্য যে মাধ্যম,সেই গণমাধ্যম কি সত্যিই পারছে গণমানুষের কথা তুলে ধরতে?নাকি গণমাধ্যমের দামি জমিন শুধুই পুঁজিপতিদের জন্য?গনমানুষ কেবলই বলীর পাঁঠা। তবে কি পুঁজিবাদের কাছে watchdog আজ tamedog(পোষা কুকুর) -এ পরিণত হয়েছে? সাংবাদিকতা বিভাগের ছাত্র হিসেবে আমি লজ্জিত, শঙ্কিত। জানি না এই লজ্জা আমার সাংবাদিক ভাইদের কতখানি স্পর্শ করেছে । তথ্যসূত্র :সিসিটিভি ক্যামেরা বিতর্ক ইনকিলাব,২/১০/১১ ইনকিলাব,৩/১০/১১ পারসোনা স্ক্যান্ডাল নিউজ অন মাছরাঙা টিভি সমকাল,১/১০/১১ ইত্তেফাক,৩০/৯/১১ ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.