আধুনিক জীবনব্যবস্থার চাপে শৈশব হারিয়ে যাচ্ছে শিশুদের। শিশুবিষয়ক নানাবিধ বিজ্ঞাপন, কম্পিউটারভিত্তিক খেলা, পরীক্ষানির্ভর শিক্ষাব্যবস্থা ও শিশুদের প্রতি যত্ন-আত্তির ঘাটতি_এ সব মিলিয়ে ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে শৈশব। ব্রিটেনের এই 'খুব বেশি, খুব শিগগির' সংস্কৃতির 'নেতিবাচক' দিকটি বিবেচনায় নিয়ে তা থেকে উত্তরণে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। দেশটির ২২৮ শিক্ষাবিদ, শিক্ষক, লেখক ও উন্নয়নকর্মীর একটি দল দৈনিক টেলিগ্রাফ পত্রিকায় প্রকাশিত একটি চিঠিতে শৈশব নিয়ে এ উদ্বেগ ও তা প্রতিকারের আহ্বান জানিয়েছেন। শিশুদের উদ্দেশে তৈরি সব ধরনের বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ করা, তাদের জন্য খেলাধুলানির্ভর পাঠ্যসূচি প্রণয়নসহ পর্দানির্ভর অর্থাৎ টেলিভিশন, কম্পিউটার ইত্যাদিতে বিনোদনের ভয়াবহতা সম্পর্কে জনসচেতনতামূলক প্রচারণার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
পাশাপাশি শিশুদের শৈশবকে ঠিকভাবে গড়ে তোলার ব্যবস্থা করতে না পারায় রাজনীতিকদেরও সমালোচনা করেছেন বিশিষ্টজনরা। গত সপ্তাহে ব্রিটেনে শিশুদের শৈশব নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। তাতে প্রচুর পরিমাণ খেলনা ও বিনোদনমূলক জিনিসের ফাঁদে শিশুদের জীবন আটকা পড়েছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। এ জন্য ব্রিটিশ মা-বাবাদের অভিযুক্ত করেছে বিশ্ব সংস্থাটি। তারা বলছে, সন্তানদের সঙ্গে মা-বাবা বেশি সময় কাটান না।
শিশুদের এ ফাঁদে পড়া অবস্থাকে 'আরোপিত ভোগবাদের' চক্র বলে অভিহিত করেছে তারা।
চিঠিতে বলা হয়েছে, 'যদিও মা-বাবারা সন্তানদের শৈশব নষ্ট হওয়া নিয়ে উদ্বিগ্ন। তবুও ২০০৬ সাল থেকে এ প্রবণতা চলমান। পড়ালেখা করার মতো বয়স হওয়ার অনেক আগে থেকেই শিশুদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। ' 'এখন এ অবস্থা থেকে কাজে নেমে পড়ার সময় এসেছে' বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রাথমিক স্তরে প্রথম বছরের শেষে শুধু পড়ার ওপর শিশুদের (মৌখিক) পরীক্ষা চালুর পরিকল্পনা আছে বর্তমান সরকারের। এ পরিকল্পনার সমালোচনা করে সাধারণ পড়ালেখার পরিবর্তে পাঁচ বছরের শিশুদের পুরো এক বছরের জন্য খেলাধুলানির্ভর পাঠসূচি প্রণয়নের ওপর জোর দিয়েছে গ্রুপটি।
ব্রিটেনের বিশিষ্টজনদের এ চিঠিতে উল্লেখ করা 'খুব বেশি, খুব শীঘ্র' (টু মাচ, টু সুন) সংস্কৃতির নামের একটি বইও বাজারে রয়েছে। এর ২৩টি রচনায় শিশুদের খুব তাড়াতাড়ি পড়ালেখার মধ্যে ঠেলে দেওয়া এবং তাদের শৈশব নষ্ট হওয়ার ব্যাপারে আলোকপাত করা হয়েছে। ইনস্টিটিউট ফর নিউরো-ফিজিওলজিক্যাল সাইকোলজির পরিচালক স্যালি গোডার্ড বি্লথ এক গবেষণায় দেখিয়েছেন, অধিকাংশ সময় বসে থাকার অভ্যাসের কারণে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শিশু পাঁচ বছরে স্কুলের জন্য উপযুক্ত হয় না।
তিনি বলেন, 'শিশুরা কম্পিউটার বা টেলিভিশনের সামনে বেশি সময় কাটাচ্ছে। এর মানে তাদের বাইরে যাওয়া ও খেলাধুলার সুযোগ কম পাচ্ছে। ফলে তারা অনুসন্ধানী হচ্ছে না, ঝুঁকি নিতেও শিখছে না। '
তথ্যসূত্র-
Click This Link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।