আধুনিকতার শ্রেণীবিভাগঃ আধুনিকতার চারটি শ্রেণী রয়েছে সেগুলো হল
ক, ঐতিহাসিক আধুনিকতা
খ, শৈল্পিক আধুনিকতা
গ, দার্শনিক আধুনিকতা
ঘ, সামাজিক আধুনিকতা
ক, ঐতিহাসিক আধুনিকতাঃ
ঐতিহাসিক আধুনিকতার মূল বিষয় হল প্রকৃতির কাছ থেকে মানুষের দাশত্ত্ব মোচন। একটি সার্বজনীন জ্ঞান ব্যপ্তির মধ্যদিয়ে মানুষ তার বংশগত প্রথা অতিক্রম করতে চেষ্টা করে। এ প্রসঙ্গে রক্ষণশীল দার্শনিক রবার্ট স্পেমাবে অনুসারী পেটার কস্লোভস্কি বলেন “ঐতিহ্যগত ভাবে ব্যক্তির মধ্যে চেতনা প্রকাশিত হয় এবং ইতিহাসে সেটা ধৃতহয়। আর এভাবেই একতি সামগ্রিকতার সৃষ্টি হয়। ”
ব্যক্তির মধ্যে সৃজণশীলতার প্রকাশ ঘটে যার ফলে সৃষ্টি হয় নতুন নতুন যন্ত্রের যা পূর্ববর্তী কর্মকান্ডের পরিবর্তন ঘটিয়ে নতুন কর্মপন্থার সৃষ্টি করে।
এসবই ঘটেছে জ্ঞানগত পরিবর্তনের ফলে এবং এটি ইতিহাসে স্থান করবেই।
এই চেতনা বা জ্ঞান বিশ্ব বর্ণনার সাথে জড়িত এবং এটি সত্যিই প্রশংসনীয়। কিন্তু এই বিশ্ববর্ণনা রৈখিক ও অবিচ্ছিন্ন এই রৈখিকতা বিজ্ঞানের জ্ঞানচর্চার একটি প্রাচিন বৈশিষ্ট্য।
যেমনঃ
Straightway -রৈখিক
২+২=৪
নিয়মানুবর্তী
খ, শৈল্পিক আধুনিকতাঃ
শৈল্পিক আধুনিকতার মূল বৈশিষ্ট হল প্রাচীন এবং মধ্যযুগের শিল্পকর্মকে বাতিল ঘোষণা করা। প্রাচীন এবং মধ্যযুগের পৌরানিক বিষয়গুলো শৈল্পিক আধুনিকতা বর্জন করে নতুন সৃজণশীল শিল্প কর্ম নির্মান করা হয়।
শৈল্পিক নতুনত্ত্বের আবির্ভাব ঘটে সর্ব প্রথম ১৬৮৭ সালে। যেমন Querelle des anciens et des moderne তাছাড়া শৈল্পিক আধুনিকতা নান্দনিক আধুনিকতার জন্ম দেয় যেমন Beaute relatif. শৈল্পিক আধুনিকতায় যেমন দ্বান্দ্বিকতা রয়েছে তেমনি আপেক্ষিকতার মাপকাঠি গ্রহণ করা হয়েছে। দ্বান্দ্বিকতা হল সময় উপযোগী শিল্পকর্ম তৈরি করা। এটা ছাড়া বিকাশ বোঝা যায় না। কবি হোয়েল ডারলিন বলেন পরিবর্তন করতে হবে কিন্তু ঐতিহ্যকে ভুলে গেলে চলবেনা।
অর্থাৎ তিনি দ্বান্দ্বিকতাকে স্বীকার করেছেন। আর আধুনিক শিল্পকর্ম আপেক্ষিক হবার আন্যতম কারণ হল ঐতিহ্যগত মাপকাঠি হারিয়ে যাওয়া। অর্থাৎ এখানে আর মধ্যযুগের মত দেব দেবী ভিত্তিক শিল্পকর্ম চর্চা হয়না বরং বিভিন্ন বিষয়ে শিল্পকর্ম করা হয়। এজন্য আধুনিকতার শিল্পকর্মের পরিধি ব্যপকতর হয়ে উঠছে। আধুনিক শিল্পকর্মকে Paradigm আকারে সংরক্ষণ করা হয়।
যেমনঃ
গ, দার্শনিক আধুনিকতাঃ
দার্শনিক আধুনিকতায় আনেক বিষয়ের মধ্যে ব্যক্তি বিবেচনার বিষয়টার উপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে এই বিষয়টা ডেকার্ট থেকে হেগেল পর্যন্ত দার্শঅনিক আলোচনায় স্থান পেয়েছে। ডেকার্ট বলেন “আমি চিন্তা করি, সুতারাং আমি অস্তিত্বশীল(Cogito engo sum)” এই উক্তির দ্বারা তিনি ব্যক্তিসার্বিকতার অস্তিত্ব প্রমান করেছেন। হিউম ব্যক্তি মনকে অভিজজতার গুচ্ছ বা বান্ডিল বলে বর্ণনা করেছেন। কান্ট ব্যক্তির যুক্তিবিদ্ধির সীমানা পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে আলোচনা করেছেন। ইউর্গেন হাবার্মাস ব্যক্তি সম্পর্কে আলোচনা করেছেন তার “Zum philosophischen diskuns den moderne” গ্রন্থে হেগেলের কাছে আত্নচেতনার সংবিধানই ছিল আধুনিকতার কেন্দ্রবিন্দু।
সরেন কিয়র্কেগাড ও কার্ল মার্ক্স কে হেগেলের উত্তর সূরী হিসাবে বর্ণনা করা যায়।
ঘ, সামাজিক আধুনিকতাঃ
সামাজিক আধুনিকতার ব্যনারে বিভিন্ন আদর্শ ও মানদন্ড আছে। এখানে আমরা Max Weber এর আলোচনা তুলে ধরব। Max Weber সামাজিক নীতিবিজ্ঞানের সাথে আধুনিকতার প্রচলিত রীতিনীতির একটি সঠিক মূল্যান করেছেন, যা এক কথায় একটি বিরাট বিপ্লবের সূচক। প্রটেষ্টানিক নীতিবিদ্যানের সামান্তবাদের ঐতিহ্যগত পরাতত্ত্ব ভিত্তিক নীতিবিজ্ঞানের বিলুপ্তি ঘটায়।
ভেবারের মতে মানুষ কান্ডজ্ঞানহীন পুজিবাদী আকাঙ্ক্ষার প্রয়জনিয়তা হিসাবে নিজস্ব মনোনিত ধর্মকে সামাজিক বাধ্যবাধকতায় পরিনত করে।
Max Weber তার “Protestantische Eathik undden geist des kapilalismus”গ্রন্থে দেখানোর চেষ্টা করেছেন যে প্রটেষ্টানিক নীতিবিদ্যানের উপর পূঁজি তৈরীকারী শ্রেণী ও সম্পত্তির মালিক সম্প্রদায়ের ব্যপক প্রভাব ছিল। তার মতে উদ্দেশ্যবাদী ধর্মমতের দ্বারা অর্থনৈতিক অধিপত্য বৃদ্ধি পায় এবং অতি দ্রূত এর প্রভাব বিস্তৃত হয়। এর মাধ্যমেই সমাজে একটি নতুন নীতিবিজ্ঞানের সৃষ্টি হয়।
পরিশেষে বলা যায় আধুনিকতার পরিমন্ডলে মানুষ আন্তঃসৃষ্ট যুক্তিবুদ্ধিকে হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করতে শিখেছে।
শুধুতাই নয় মানুষ পূরান সংস্কার ও ভয় থেকে মুক্ত হয়েছে এবং সম্পুর্ণ বাস্তব এবং বস্তুগত উদ্দেশ্য গুলো মানুষ হাসিল করেছে। সর্বপরি আধুনিক মানব জীবনে এনেছে বিস্তৃত পরিবর্তন। এই পরিবর্তন কখনও নেতিবাচক আচার কখন ইতিবাচকতা যাই থাক না কেন এটা মানব জীবনে এনেছে কাঙ্খিত প্রয়জনীয় বৈচিত্রতা। তাই মহাবিশ্বের ইতিহাসে আধুনিকতা চির স্মরনিয় হয়ে থাকবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।