মৃত্তিকার বাঁ হাতের তালুতে একটি তিল আছে। হাসলে যেখানে টোল পরে ঠিক তার নিচে আরো একটি তিল। তিলে তিলে তিলোত্তমা মৃত্তিকাকে ঘুমের রাজ্যে দেখলে সবচেয়ে পবিত্র মনে হয়।
"এই, ওঠো, দেখে যাও বারান্দায়...", বলতে বলতে বারান্দার দিকে চলতে থাকে পরিবারের ব্যস্ততম মানবী কিন্তু। এমন বর্ষণমুখর রাতের আধারিতে সুনসান নীরবতা ভেঙ্গে কিন্তু টিপটিপ করে পড়ন্ত জলকণা ছুঁয়ে গায়ে মাখে।
জলের সঙ্গে জলের কণার মিতালীর গভীরতা ভেবে তন্ময় হয়ে যাওয়া পঞ্চাদশী দিক ভুল করে চেয়ে থাকে জ্যোৎস্নায় জেগে থাকা মেঘের দিকে।
কী করে জানলে আমি মেঘ হয়ে ভেসে বেড়াচ্ছি?
বা রে, আমি বুঝি তোমার সুর শুনতে পাই না?
শহীদ মিনারের সামনের কদম গাছটির ডাল থেকে পাশের গাছের ডালে লাফ দিতে গিয়ে ঘাসের ওপর পড়ে যায় মিতুলের প্রিয় প্রাণী কাঠবিড়াল।
মৃত্তিকা, তুমি আমাকে একটি কাঠবিড়াল এনে দিবে?
পাগলি।
কি? এনে দিবে না?
না তো বলিনি। সময় দাও, এনে দেব, খাগড়াছড়ি থেকে, ওখানে নাকি কিনতে পাওয়া যায়।
তুমি অনেক ভালো।
পাম্প দেয়া বাদ দাও, নাও কদম ফুল।
সেতুর ছবি স্নেলের বইয়ের ভাঁজে রেখে লুকিয়ে লুকিয়ে না দেখলে রাতে ঘুম আসে না মৃত্তিকার।
বায়োক্যামিস্ট্রির প্রশ্নপত্র পেয়েছ?
না।
আমার কাছে আছে, নিবে?
না।
সুপ্রভাত।
সুপ্রভাত? রাত বারটা বাজে, মাথা ঠিক আছে, না কি গেছে? আমি আসব দুয়েকটা স্ক্রু টাইট করে দিতে?
তোমার সঙ্গে আর পারি না।
বাড়িতে শুয়ে বসে আর সময় কাটে না কিন্তুর। আজকাল মৃত্তিকা কেমন হয়ে গেছে, ফোন দিলে প্রথমে কোন এক মেয়ে ধরে, পরে বাবা ধরে। ভোর পাঁচটা।
এখন কি ফোন দেয়া ঠিক হবে?
হ্যালো, মৃত্তিকা?
না, আমি মিতুল। আপনি?
এটা তো মৃত্তিকার নাম্বার, আপনার কাছে এলো কি করে?
ও আমাকে এটা উপহার দিয়েছে। আপনি কে মাসখানেক ধরে এখানে খোঁজ নিচ্ছেন? জানেন না ও তো ২২ আগস্ট মারা গেছে?
কি? আপনি কী বলছেন?
সিলেট থেকে বাসা ফেরার আগে সে আমাকে এই সিমটা দিয়ে যায়। তারপর যাত্রাপথে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের মজলিশপুরে যাত্রীবাহী বাস ও মালবাহী ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে.........কেন আপনি পত্রিকায় পড়েন নি?
অনেক কষ্ট করে খাগড়াছড়ি থেকে কাঠবিড়ালি এনেছে কিন্তু মিতুলকে উপহার দেওয়ার জন্য। সারাদিনের অনেকবার চেষ্টা চালানোর পর এখন ভোর পাঁচটা।
মৃত্তিকার নাম্বারে, মানে মিতুলের নাম্বারে ডায়াল করে কিন্তু। প্রতিবারই একই কণ্ঠ শোনা যায়, আপনি যে নাম্বারে ডায়াল করেছেন সেটি এখন ব্যস্ত আছে ,......। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।