I Am, The Bangladeshi Think Tank
লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে আজ বাংলাদেশ একটি স্বাধীন রাষ্ট্র। কিন্তু আমরা রাজনৈতিক স্বাধীনতা লাভ করেও আজও অর্থনৈতিক স্বাধীনতাকে অর্জন করতে পারিনি। এর মূলে রয়েছে শাসক বর্গের অপরিণামদর্শী এবং দেশবিরোধী অবস্থান। এদেশের রাজনৈতিক নেতা-নেত্রী নিজেকে সামন্ত প্রভুর অবস্থানে কল্পনা করেন।
এক সময়ে এ দেশের বিশ্বাসঘাতকরা ছিল স্বাধীনতার বিপক্ষে; তাদেরকে আমরা স্বাধীনতা অর্জনের মধ্যেদিয়ে পরাজিত করেছি।
যদিও আজকের দিনেও তাদের সাম্প্রদায়িক অপতৎপরতা চলে আসছে, কিন্তু তা এদেশের জনতা কখনো মেনে নেয়নি। এমনকি এ দেশের সাধারণ মানুষ সেই স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিকে কখনোই মাথাচাড়া দিয়ে দাড়াতে দেবে না। কিন্তু আজ আরও একদল মানুষ এ দেশের মানুষের সার্বভৌম ক্ষমতাকে অস্বীকার করে দেশ বিরোধী অবস্থান নিয়েছে। আর সবচেয়ে বিষ্ময়কর কথা যে, বর্তমানে ব্যক্তি স্বার্থে এক হয়েছে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি বলে দাবিদার কতিপয় গোষ্ঠি এবং তাদের সাথে রয়েছে স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তি। অর্থাৎ এক্ষেত্রে প্রমাণিত হয়েছে যে, স্বাধীনতার পূর্বে যারা দাবী করেছিল তারা স্বাধীনতার পক্ষে তারা আসলে জনগণের সাথে ধোঁকাবাজি করেছে।
আসলে তাদের ভেতর ক্ষমতার মোহ আর বিদেশী শক্তির প্রতিই ছিল অকুন্ঠ সমর্থন।
সুতরাং আমাদের প্রকাশ্য শত্রুর পাশাপাশি এখন বন্ধুবেশে গোপন শত্রুর মোকাবেলা করতে হচ্ছে। কিন্তু এই সব অপ্রকাশ্য শত্রুকে চিহ্নিত করা আমাদের জন্য খুব কঠিন কাজ নয়। কিন্তু এদের মোকাবেলার জন্য আমাদের রয়েছে সঠিক তথ্যের অভাব। কারণ, সঠিক তথ্যই আমাদেরকে নিজের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে জয়ী করে তুলবে।
কেননা সত্যিকার সফলতার পেছনে সঠিক সিদ্ধান্তই অর্ধেক পথ এগিয়ে নেয়।
আমরা জানি যে এদেশের অধিকাংশ মানুষ দারিদ্র সীমার নীচে বাস করলেও আমাদের রয়েছে প্রচুর সম্ভাবনা। আমাদের দেশের যে প্রাকৃতিক সম্পদ রয়েছে তা দিয়ে এদেশকে আমরা পৃথিবীর অন্যতম সমৃদ্ধ দেশ গড়ে তুলতে পারি। কিন্তু সেই সম্পদকে সঠিক পরিকল্পনার মধ্যে দিয়ে আমাদের নিজেদের প্রয়োজনে কাজে লাগাতে হবে।
কিন্তু কি হচ্ছে? কেন আমরা আমাদের সম্পদকে জাতীয় প্রয়োজনে কাজে লাগাতে ব্যর্থ হচ্ছি? এর সঠিক কারণ অনুসন্ধান করা কি আমাদের সচেতন নাগরিকদের কর্তব্য নয়?
স্বাধীনতার পুর্বে আমাদের দাবী কি ছিল? আমরা ছিলাম চরম বৈষম্যপূর্ণ একটা অবস্থায়।
আমাদের এদেশের সম্পদ লুটে নিয়ে পশ্চিম পাকিস্তানিরা তাদের ভান্ডার পূর্ণ করতো। অপর দিকে এদেশের জনতার ভাগ্যে ছিল শূণ্যতা। পাকিস্তান আমলে উচ্চ পর্যায়ে চাকরির সুযোগ ছিল এদেশের সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে, প্রশাসন ছিল জনগণকে শোষনের যন্ত্র। এদেশের মানুষকে শোষণ করে পশ্চিম পাকিস্তানের শাসক ঐ ভূখন্ডে গড়ে তুলেছিল সম্পদের পাহাড়। এই বৈষম্যপূর্ণ অচলাবস্থার বিরুদ্ধে এবং সব রকম শাসন-শোষণের বিরুদ্ধে এদেশের মানুষ স্বাধীনতা অর্জনের জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়ে মুক্তিযুদ্ধ করেছে।
কিন্তু বাংলাদেশ রাষ্ট্র গঠিত হবার পর আমরা কি জনগণের সত্যিকার স্বাধীনতা পেয়েছি?
আজ বিদেশী শাসকের বদলে একদল দেশী শাসকবর্গ তৈরী হয়ে গেছে। জনগণ এবং শাসকবর্গ দুটি আলাদা শ্রেণি হয়ে গেছি। যেন একদল সামন্ত প্রভু বা রাজা এবং অন্যদল প্রজা-সাধারণ। শাসকশ্রেণি ভাবছে এ দেশের মালিকানা তাদের এমন কি দেশের জনগণও তাদের সম্পত্তি। তাই দেখা যায় পাকিস্তাল আমলে যেমন এদেশের জনতা শোষিত হতো আজও তেমনি শোষিত হচ্ছে।
জনগণের সত্যিকার স্বাধীনতা ভূলন্ঠিত; তাদের আশা আকাঙ্খা আজও ধরা ছোয়ার বাইরে।
দেশের জাতীয় সম্পদের সত্যিকার মালিকানা দেশের জনগণের। কিন্তু অবস্থা এমন দাড়িয়েছে যে মনে হয় সেগুলো শাসকবর্গের বাপ-দাদার ব্যক্তিগত সম্পদ। দেশের রক্ষাকর্তারা সেগুলো বিক্রি করে দিচ্ছে নামমাত্র মূল্যে। এখন জনগণের কি করা উচিত? স্বাধীনতা অর্জনের জন্য যেমন ঐক্যবদ্ধ জনতা মুক্তিসংগ্রাম করেছে, তেমনিভাবে আবারও ঐক্যবদ্ধ হতে হবে আমাদের।
এবার নতুন বিশ্বাসঘাতক আমাদের সামনে, এরাই এখন নব্য রাজাকার; এদের দেশ নেই, এদের জাতীয়তাবোধ একেবারে শূণ্য, এদের কোন অধিকারও নেই জাতীয় সম্পদ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার। এ সিদ্ধান্ত তো নেবে এদেশের জনগণ। তাই এদের প্রতিরোধ করার সময় এখনই।
আমাদের কি করা প্রয়োজন?
দেশবিরোধী চুক্তির বিরুদ্ধে যে আন্দোলন শুরু হয়েছে, দেশের জাতীয় সম্পদ রক্ষার জন্য যে ঐক্য প্রয়োজন তা আমাদের সকল দলমতের উর্ধে উঠে একত্র হতে হবে। এ ক্ষেত্রে দেশের স্বার্থ আগে দেখতে হবে।
কে কোন দলের , কার রাজনৈতিক আদর্শকে মেনে নিতে পারিনি, অথবা কোন ব্যক্তি বা কোন দলীয় পরিচয়কে মূখ্য না ভেবে শুধুমাত্র দেশের জন্য আসুন আমরা একত্র হই। মতাদর্শের যে পারস্পারিক বিরোধিতাকে এই মুহুর্তে উহ্য রেখে আসুন একত্র হই। যে কোন রাজনৈতিক পরিচয় আমাদের এ দেশের স্বার্থেই। তাই প্রথমে আমাদের প্রয়োজন দেশের জাতীয় স্বার্বভৌমত্ত্বের নিরাপত্তা সমুন্নত রাখা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।