আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মুশফিকুর রহিম: আত্মঘাতী অভিমান ও চরিত্র বিরুদ্ধ পরাজয় বরণ

i`m what i`m. সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে গত রাত থেকেই শুধুই দীর্ঘশ্বাস। হাহাকার থেকে থেকে শুনা যাচ্ছে। বাংলাদেশের ক্রিকেটের পাঁজরটাই বুঝি ভেঙ্গে চুড়ে একাকার। একটা আবেগী ঘোষণাই মূহুর্তে থমকে দিলো হেফাজত ইসলাম বিতর্ক, গণ জাগরণের জাগরণী। সামাজিক মাধ্যম তো বটেই।

বিসিবি কার্যালয়ে সকাল থেকে পাহাড়া দিয়ে রাখা গণমাধ্যমকর্মীরাও দেখলেন সব বড় চুপচাপ। প্রধান কর্তা আসেননি। তাকে পাকড়াও করতে বেক্সিমকো অফিসে হাজির হয়েছিলেন কয়েকজন সাংবাদিক। তিনি না পারতে শেষ পর্যন্ত প্রতিক্রয়া দিলেন। 'মুশফিকুর রহিমকে গতরাতেই আমি ফোন দিয়েছিলাম।

দুটো কারণ বললো। অবশ্য গলা ভেঙ্গে যাচ্ছিল ওর। কান্না আটকাতে চেষ্টা করেছে বারবার। প্রথম কারণ দলকে নেতৃত্ব দিতে পারছে না। দ্বিতীয় কারণ, টিম ওয়ার্কটা ঠিক হচ্ছে না।

ও আসলেই মুখোমুখি কথাতে আরো পরিষ্কার হওয়া যাবে আসলে কি ঘটেছে যাতে করে এমন সিদ্ধান্ত নিতে হবে!' অনেক যোগ-বিয়োগ শুরু হয়ে গেলো সঙ্গে সঙ্গে। টিম ওয়ার্ক হচ্ছে না মানে কি? এই দলটাই তো দল হিসেবে শ্রীলঙ্কার মাটিতে গিয়ে স্বাগতিকদের না ঘোল খাইয়ে দিয়ে আসলো ক`দিন আগে? কিছু কথা থাকে যা বলা হয় অফিসিয়াল। আর কিছু আনঅফিসিয়াল। এর মধ্যে খুঁজতে খুঁজতে পাওয়া গেলো কিছু টুকরো তথ্য। জোড়া লাগালে অনেক বড় মানে বের হয়।

যদি কেউ চান তবে সেগুলোর মানে না বের করলেও পারেন! তবে তৃতীয় ওয়ানেডে নয়। ঘটনার শুরু দ্বিতীয় ওয়ানডেতে। মুশফিক আউট হয়ে আসার পর খুব কেতাবী ওই ব্যাটসম্যানকে বলেছিলেন ইনিংসের শেষ পর্যন্ত খেলে আসতে। সে ব্যাটসম্যান তার কথা না রেখে ঊধ্বমুখী শটে আউট হয়ে যখন প‌্যাভিলিয়নে ফিরেছন,তখন মুশফিক প‌্যাডও ঠিকমত খুলতে পারেননি! এরপর তো তৃতীয় ওয়ানডে। অনেক চেষ্টা চরিত্র করে একটা বড় জুটির দিকে এগুচ্ছিল বংলাদেশ।

মুশফিক তখন সঙ্গের ব্যাটসম্যানের্ উদ্দেশ্যে বললেন,১০০ বল খেলে ফিফটি কর। কেনা প্রব্লেম নাই। খালি মনে রাখিস তুই ৪০ ওভার খেললে আমরা ম্যাচটা জিতবো। বিধি বাম। পেল্লাই শট খেলতে গিয়ে সেই ব্যাটসম্যান আউট ধৈয্যচ্যুতি হলো অধিনায়কের।

কেনো খেললি ওই শট?উত্তর_ আমি ওভাবেই খেলি। মনে তো হলো তুমি আজ প্রথম আমার ব্যাটিঙ দেখলে! মুশফিকের মুখে উত্তর ছিল না। সে মূহুর্তেই হ্যাঁ সে মূহুর্তেই সিদ্ধান্ত নেন তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে জিতলে এক কথা। আর হারলে অধিনায়কত্ব আর নয়। মুশফিকের আত্মঘাতী এই অভিমান ভরা সরে দাঁড়ানোর পেছনে এই দুটি ঘটনা হয়তো নিয়ামক বিশেষ।

থাকতে পারে আরো বিশেষ কিছু। আমি যদ্দূর জানি বিসিবি দল গঠনে এখন হস্তক্ষেপ করে না। যার প্রমাণ নিজ এলাকার ছেলে ইনজুরি থেকে সদ্য সেরে ওঠা শফিউলকে যখন মুশফিকের চাহিদায় দ্বিতীয় টেস্টের সময় ডেকে নেয়া হয়। সুতরাং বিসিবির ওপরের মহলে কোন সমস্যা নেই। তবে? চটকদার হতে পারে,দেশ প্রেম নিয়ে কথা উঠতে পারে।

কিন্তু একটা ফিসফিসানি উঠেই গেছে। সিনিয়র কয়েক ক্রিকেটার না কি মুশফিকের কথা ঠিকমত শুনতে চান না। তালিকাটা আরেকটু সংক্ষিপ্ত করা হলো। নেমে আসলো তিন জনে। যারা ক্রিকেট অনুসরণ করেন এ দেশের তাদের পক্ষে এই হিসেব মেলানো কঠিন হবে না এটা আমিও জানি।

কিন্তু এই কথা না শুনার বদভ্যাসের জন্য মুশফিকের মত একজন জেদী ক্রিকেটারের নেতৃত্ব ছাড়তে হবে? এ কেমন কথা? যাকে নিয়ে সবাই গর্ব করে, যাকে সবাই বলে এমন অধিনায়ক এর আগে বাঙলাদেশ পায়নি,তিনিই অভিমান ভরে নিজেকে সরিয়ে নেবেন? এই মুশফিকই না খাদের কিনারে দাঁড়ানো দলকে টেনে দাঁড় করিয়ে দেন ভারতের বিপক্ষে এশিয়া কাপে ইরফান পাঠানকে স্কোয়ার লেগ দিয়ে দু ছক্কায়! এই মুশফিকই না জিম্বাবুয়েতে দাঁড়িয়ে বলে দেন, ওরা আমাদের অনুশীলনের পর্যাপ্ত সুবিধা দেয়নি। আমাদের দেশেও তো আসবে তাই না? হিসেব মেলাতে গিয়ে এখানে বিভ্রান্ত হতে হয়। দ্বিতীয় টেস্টের জয়ের পর, প্রথম ওয়ানডের বড় জয়। বাংলাদেশ দলটাকে কতটা না একজোট হয়ে খেলছিল? দুটো ম্যাচে সিরিজ হারের লজ্জা আছে নি:সন্দেহে। সেটা জিম্বাবুয়ে বলেই হয়তো বেশি।

কিন্তু বোর্ড সভাপতিকে দ্বিতীয় বলা কারণটা বুঝে ওঠা যাচ্ছে না। `টিম ওয়ার্কটা ভালো মত হচ্ছে না। ' ১৪ জনের দলের এগারো জন মাঠে নামেন। সেটাকে একসুতোয় গেঁথে তোলার দায়িত্বটা অধিনায়কেরই। কিন্তু কেউ যদি সেই মালা না হয়ে কাঁটা হতে চান তবে অভিমানের কি আছে? অতীত তো বলে তাদের কাজটাই সেরকম।

শ্রীলঙ্কায় কাঁটাযুক্ত কেউ ছিল না বলেই কি তবে ওই সাফল্য? বিসিবির মুখপাত্র জালাল ইউনুসও ইনিয়ে বিনিয়ে মোটামুটি একমত। `আমার কেনো যেনো মনে হচ্ছে সমস্যা আছে। কিন্তু ম্যানেজার রিপোর্ট না পেয়ে কিছু বলা ঠিক হবে না। ' আর মুশফিক? পুরো দেশের হৃদকম্পন কমিয়ে দিয়ে এরকম আত্মত্যাগে হাততালি ও সাধুবাদ পেয়ে কি আবেগে আবারো ভাসছেন? যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়ে গেলে জীবন বাঁচে ঠিকই,কিন্তু কাপুরুষের তকমা লেগে যায়। কখনো কখনো আত্মত্যাগও মনে হয় বড় স্বার্থপরতা।

আবেগাক্রান্ত মুশফিককে এ কথা কে বোঝাবে? ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৩ বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.