সাপ বিষাক্ত হয়, এটা জানা কথা। কিছু কিছু মাছ আছে যেগুলোকে ঠিক খাওয়া যায় না, খেলে ক্ষতির সম্ভাবনা প্রচুর। কিন্তু তাই বলে সাপের মতো বিষধর মাছ। এও কী সম্ভব? অসম্ভব বলে কিছু নেই। সাগরের গভীরে বিচিত্রসব হিংস্র ও ভয়ঙ্কর প্রাণীর বসবাস।
আর এর মধ্যেই এক রকমের মাছ রয়েছে যেটি সাপের মতো বিষধর। এই মাছটির নাম ভাইপার ফিশ। এরা ডলফিনেরই সমগোত্রীয়। আর সে কারণেই এসব প্রাণী লোকসমাজে খুবই পরিচিত। ভাইপার ফিশ ডলফিন প্রজাতির হলেও লম্বা মুখ আর তীক্ষ্ন ধারালো দাঁতের জন্য সব প্রাণী থেকে একেবারেই আলাদা।
এদের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো, এই প্রজাতির প্রাণীগুলো গভীর জলে বাস করে। দ্রুত সাঁতার কাটতে পারে বলে এদের খাবার নিয়ে কোনো চিন্তা করতে হয় না। আসলে ভাইপার ফিশের গঠনপ্রণালী অন্যান্য মাছ থেকে অনেকটাই আলাদা। লেজ থেকে মাথা পর্যন্ত উপরের অংশটা খণ্ড খণ্ড ভাগে বিভক্ত। ইচ্ছা হলেই যে কোনো দিকে বাঁক নিতে পারে, ভাঁজও করতে পারে।
এসব কারণে ভাইপার ফিশ যখন সাঁতরাতে যায়, তখন পানি আর বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না। বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, এদের চোখ মোটেও স্বাভাবিক নয়। একেক রংয়ে বদলে যায়। এদের শিকার ধরার পদ্ধতি বেশ অদ্ভুত। প্রথমে ছোট মাছগুলোকে তাড়িয়ে অন্ধকার গুহার মধ্যে ঢুকিয়ে নেয়।
অন্ধকারে অন্যান্য মাছ যখন কিছুই দেখে না, তখন ভাইপার নিজের চোখের রং একের পর এক বদলাতে থাকে। এতে ছোট ছোট মাছ বিভ্রান্তির মধ্যে পড়ে এবং প্রচণ্ড ভয় পেতে থাকে। ভাইপার পরে ধারালো দাঁত দিয়ে চেপে ধরে রাখে। বড় পেট হওয়ায় ক্ষুধাও লাগে বেশি। তাই সারাক্ষণ থাকে শিকারের ধান্দায়।
হিংস্র ও ভয়ঙ্কর হলেও এদের উচ্চতা কিন্তু মোটেও বেশি নয়। মাত্র ১০-১২ ইঞ্চি। নারী ভাইপার বছরে একবার প্রচুর পরিমাণ ডিম ছাড়ে এবং এটা জানুয়ারি থেকে মার্চের মধ্যে। ডিম ফুটে যে বাচ্চা বের হয়, তার উচ্চতা ৬ মিলিমিটারের কম নয়। এদের আয়ুও খুব কম, মাত্র ১৫-২০ বছর।
তবে কমপক্ষে ৯০০ ফুট গভীর পানিতে বাস করার কারণে ভাইপার নিয়ে তেমন একটা গবেষণা হয়নি। এসব কারণে গভীর সাগরজলে এখনো নিশ্চিন্তে বসবাস করতে পারছে এরা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।