নোবেল বিজয়ী ভারতীয় অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন মনে করেন, ভারতীয় অর্থনীতি দ্রুত শক্তিশালী হচ্ছে। সেই তুলনায় বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে। কিন্তু এর পরও কিছু কিছু বিষয়ে ভারতের চেয়ে সাফল্য দেখিয়েছে বাংলাদেশ। যেমন—গরিব মানুষের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত শৌচাগার ও স্বাস্থ্যসুবিধা, শিক্ষাসুবিধা, নারীর ক্ষমতায়ন, মাতৃ ও শিশুমৃত্যু এবং জন্মহার কমানো।
বাঙালি অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন তাঁর নতুন বই অ্যান আনসার্টন গ্লোরি-তে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন।
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের দীর্ঘদিনের সহকর্মী জ্যঁ দ্রেজের সঙ্গে যৌথভাবে বইটি লিখেছেন তিনি। এতে ভারতের অর্থনৈতিক অগ্রগতি এবং এর সঙ্গে আর্থসামাজিক উন্নয়নের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেছেন লেখকেরা। বইটি নিয়ে অমর্ত্য সেনের সঙ্গে কথা বলেছে ব্রিটেনের দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকা। এ নিয়ে গত মঙ্গলবার পত্রিকাটিতে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।
অমর্ত্য সেন বলেন, ‘ভারতের জনসংখ্যার অর্ধেকের জন্য কোনো শৌচাগার নেই।
নয়াদিল্লিতে যখন বড় বড় অট্টালিকা তৈরি করা হচ্ছে, তখন সেখানে ব্যাপক পরিকল্পনা করা হয়। কিন্তু কাজের লোকদের জন্য শৌচাগার ব্যবস্থা নিয়ে কোনো পরিকল্পনা থাকে না। শ্রেণী, গোত্র ও লিঙ্গ মিলিয়ে এটি একটি ব্যাপক বৈষম্য। এটা খুবই বেদনাদায়ক। ’ তিনি বলেন, ‘সেই তুলনায় ভারতের চেয়ে বাংলাদেশ অনেক গরিব।
কিন্তু সেখানে শৌচাগার সুবিধা নেই মাত্র ৮ শতাংশ মানুষের। ’ এটাকে ‘ভারতের ত্রুটিপূর্ণ উন্নয়ন’ বলে অভিহিত করেন অমর্ত্য।
উন্নয়নের অন্যান্য প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের তুলনা করে অমর্ত্য সেন বলেন, ‘আমাদের মনে হয়, বাংলাদেশের সঙ্গে তুলনা করলে ভারতের নীতিনির্ধারকেরা বিব্রত বোধ করবেন। কিন্তু ভারতের চেয়ে অনেক গরিব হওয়া সত্ত্বেও উন্নয়নের বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে গেছে। যেমন—গড় আয়ু, শিশুদের টিকাদান ও শিশুমৃত্যু কমানো।
’
বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়নেরও প্রশংসা করেন অমর্ত্য সেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের এই সাফল্য সম্ভব হয়েছে শুধু সরকারি নীতি নির্ধারণের মাধ্যমে নয়; বরং এ ক্ষেত্রে ব্র্যাক ও গ্রামীণ ব্যাংকের মতো বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) ভূমিকা আছে। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের সাফল্য চমকে দেওয়ার মতো। উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে জন্মহার, আর শিক্ষায় স্কুলে যাওয়ার দিক দিয়ে ছেলেদের ছাড়িয়ে গেছে মেয়েরা। এসবই বাংলাদেশ করেছে।
অথচ তাদের মাথাপিছু আয় ভারতের অর্ধেক। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।