আর কদিন পর শুরু হচ্ছে ফিফা কনফেডারেশনস কাপ। ফিফার কনফেডারেশনগুলোর লড়াই। মহাদেশীয় মহাযুদ্ধ। একই সঙ্গে এটি বিশ্বকাপের মহড়া টুর্নামেন্টও। ফিফা কনফেডারেশনস কাপের দলগুলো নিয়ে শুরু হয়েছে আমাদের নতুন ধারাবাহিক।
আজ তৃতীয় পর্বে থাকছে ইউরো রানার্সআপ ইতালিকে নিয়ে বিশেষ ফিচার:
কনফেডারেশনস কাপে খেলার সুযোগ পায় ফিফার ছয় কনফেডারেশনের ছয় চ্যাম্পিয়ন, বিশ্বকাপজয়ী দল, সেই সঙ্গে স্বাগতিক দেশ। কিন্তু এর কোনো শর্তই পূরণ করতে পারেনি ইতালি। তাহলে কীভাবে খেলছে ইতালি? প্রশ্ন ওঠাই স্বাভাবিক। বিশ্বকাপের আগেই ‘মিনি বিশ্বকাপে’র স্বাদ নেওয়ার দুর্লভ এই সুযোগ পাওয়ার জন্য ইতালি ধন্যবাদ জানাতে পারে স্পেনকে। স্পেন একই সঙ্গে ইউরো ও বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ায় ইউরোর রানার্সআপ ইতালিকে সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
সুযোগটা যেভাবেই আসুক না কেন, লক্ষ্য একটাই—ফিফা কনফেডারেশনস কাপ জয়। সেটা কি পারবে সিজারে প্রানদেল্লির ইতালি?
বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ইতালির শুরুটা হয়েছিল দুর্দান্ত। প্রথম পাঁচ ম্যাচের চারটিতে জয়। নভেম্বরের পর থেকে অবশ্য সময়টা ভালো কাটছে না ইতালির। তবে যা-ই হোক, চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইতালি বিশ্বকাপের টিকিট পাবে না, এটা ভাবা কষ্টকরই।
ব্রাজিল বিশ্বকাপে খেলার আগে সেই দেশের স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের মহড়া টুর্নামেন্ট খেলার সুযোগ পাওয়াটা তাদের জন্য নিঃসন্দেহে বোনাস।
ফিফা কনফেডারেশনস কাপে এর আগে মাত্র একবারই খেলেছে ইতালি। ২০০৬ বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুবাদে গতবারের টুর্নামেন্টটিতে। ২০০৯ সালের সেই আসরে অবশ্য অভিজ্ঞতাটা সুখকর ছিল না। তিন ম্যাচের মাত্র একটিতে জেতায় বাদ পড়েছিল প্রথম রাউন্ডেই।
দ্বিতীয় অভিযান দোরগোড়ায়। ‘এ’ গ্রুপে ইতালির প্রতিপক্ষ স্বাগতিক ব্রাজিল ছাড়াও মেক্সিকো ও জাপান। এখান থেকে দুটি দল খেলবে সেমিফাইনালে। ইতালির শেষ চারে ওঠার সম্ভাবনা যথেষ্টই উজ্জ্বল।
ইতালি দল হিসেবেও বেশ শক্তিশালী।
২০০৬ বিশ্বকাপজয়ী গোলরক্ষক জিয়ানলুইজি বুফন আছেন দলের নেতৃত্বে। আছেন মারিও বালোতেল্লি, আন্তোনিও কাসানো, আন্দ্রে পিরলোর মতো তারকা। তরুণ স্ট্রাইকার স্টেফেন এল শারাউয়ি চমক দেখাতে পারেন। প্রতিপক্ষের জন্য ভয়ংকর হয়ে দেখা দিতে পারেন মার্কিন বংশোদ্ভূত ফরোয়ার্ড জিওসেপ্পে রসি। মিডফিল্ডার থিয়াগো মোত্তাও ভালো কিছু করতে পারেন।
সব মিলিয়ে এবার কনফেডারেশনস কাপ জয়ের আশা করতেই পারে ইতালি।
ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন হিসেবে ২০১০ বিশ্বকাপে অংশ নিয়ে ভরাডুবি হয়েছিল ইতালির। বাদ পড়েছিল প্রথম রাউন্ডেই। বিধ্বস্ত প্লেনটাকে আবার ওড়ানোর দায়িত্ব নেন প্রানদেল্লি। এর পর থেকেই দলে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছেন ইতালীয় এই কোচ।
দল থেকে ‘বুড়ো’দের বিতাড়িত করেছেন। সুযোগ দিচ্ছেন তরুণদের। প্রানদেল্লি বলে যাচ্ছেন, পছন্দের একাদশ এখনো খুঁজে পাননি।
এসব কারণে অবশ্য প্রায়ই নিন্দুকদের নিন্দা শুনতে হয় তাঁকে। তবে এসবে কান দেওয়ার পাত্র তিনি নন।
নিজের কৌশল প্রয়োগ করেই ইতালিকে সোনালি অতীতে ফিরিয়ে নিতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ প্রানদেল্লি, ‘বলা হচ্ছে, আমরা দলে খুব বেশি পরিবর্তন এনেছি। কিন্তু মূল কথাটা হলো, মানসম্মত ফুটবল খেলতে হবে। নিজেদের স্বকীয়তাটা ফিরে পেতে হবে আমাদের। ’
দলটাকে যে আবার সাজিয়ে তুলেছেন, গত ইউরো তারই প্রমাণ। অনেককেই চমকে দিয়ে ইতালিকে নিয়ে গিয়েছেন ফাইনালে।
অবিশ্বাস্য স্পেনের কাছে অবশ্য পেরে ওঠা হয়নি। তবে ইউরোর দ্বিতীয় সেরা দল হওয়াটাও কম কিসে!
এবার কনফেডারেশনস কাপটা জিততে পারলে প্রানদেল্লির জন্য তা হবে আরও একধাপ এগিয়ে যাওয়া। ইতালির ওপর চোখ রাখতে তাই ভুলবেন না। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।