মনের জানালায় দাঁড়িয়ে ভাবনাগুলোর মিলিয়ে যাওয়া দেখি। গুচ্ছ গুচ্ছ মেঘ হয়ে, ঐ দূর দিগন্ত পানে... রবিঠাকুরের "ডাকঘর" পড়ছিলাম ট্রেনে বসে। অমলের কথাগুলো পড়তে পড়তে চোখদুটো ভিজে আসছিল। তার ছোট্টঘরের বাইরে সে কত না কি ভেবে রেখেছে। কবিরাজের বারণ, অমল বাইরে বেরোতে পারবেনা, তার অসুখ বেড়ে যাবে নইলে।
তার বাড়ির সামনে রাজা ডাকঘর বানিয়েছে শুনে তার স্বপ্ন রাজা তাকে চিঠি লিখবেন একদিন। সে ডাকহরকরা হতে চায়, কারণ তারা চিঠি নিয়ে কত দেশ-দেশান্তর ঘুরে বেড়াতে পারে।
জানি না কেন অমলের কথাগুলো পড়তে পড়তে আইয়ানের কথা মনে পড়ছিল। মনে হচ্ছিল বুকের মাঝখানটায় কোথাও একটা ছিদ্র হয়ে গিয়েছে। নইলে এত ব্যাথা করবে কেন!
একটা দৃশ্য ভাসছিল কল্পনায়।
আমি কোন এক রেলগাড়ীর কামরায় দরজার কাছে বসে রয়েছি। রেলগাড়ী চলছে রাতের নীরবতা কেটে কেটে। কামরায় আমি ছাড়া আরেকটি মাত্র মানুষ। কিন্তু অন্ধকার তাকে আড়াল করে রেখেছে। সামান্য কিছু ব্যাবধান দুজনের মাঝে অথচ মনে হচ্ছে মাঝখানের সেই অন্ধকার পেড়িয়ে তার কাছে যেতে পারবো সেই শক্তি এখন আমার কোথায়।
বাইরের দিকে তাকিয়ে দেখি রাতের আকাশটা তারায় তারায় ছেয়ে গিয়েছে। জোনাক পোকা উড়ে বেড়াচ্ছে থেকে থেকে ঝোপঝাড়ের ভেতর। হঠাৎ দেখি একটা ধূমকেতু, ছুটে যাচ্ছে আকাশের এ প্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে। মুহূর্তে মনে হল আড়ালের মানুষটার দিকে চেয়ে উচ্ছ্বসিত কন্ঠে বলি, "দেখো, দেখো ধূমকেতু!"। পরে মন হল, থাক।
মনে হচ্ছিল আমিও সেই ধূমকেতুটার মতই। সে যেমন ছায়াপথের গোলকধারায় ছুটে বেড়াচ্ছে আমিও তেমনি এই জীবনের রেলগাড়িতে বসে চলেছি। বসে বসে অন্ধকার আগামীর দিকে আনমনে চেয়ে ভাবছি পরের স্টেশনটা নিয়ে যাবে কোন অজানা গন্তব্যে।
একটা সুমধুর সুর ভেসে আসছিল দূরে কোথাও থেকে। সুরটা কি এইটা? হতেও পারে।
ছবিসূত্রঃ ইন্টারনেট ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।