আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কথামালার গুচ্ছ গুচ্ছ মেঘ - ৫

মনের জানালায় দাঁড়িয়ে ভাবনাগুলোর মিলিয়ে যাওয়া দেখি। গুচ্ছ গুচ্ছ মেঘ হয়ে, ঐ দূর দিগন্ত পানে...

রোদন-ভরা এ বসন্ত সখী কখনো আসে নি বুঝি আগে। মোর বিরহবেদনা রাঙালো কিংশুকরক্তিমরাগে। কুঞ্জদ্বারে বনমল্লিকা সেজেছে পরিয়া নব পত্রালিকা, সারা দিন-রজনী অনিমিখা কার পথ চেয়ে জাগে। দক্ষিণসমীরে দূর গগনে একেলা বিরহী গাহে বুঝি গো কুঞ্জবনে মোর মুকুল যত আবরণবন্ধন ছিঁড়িতে চাহে।

আমি এ প্রাণের রুদ্ধ দ্বারে ব্যাকুল কর হানি বারে বারে, দেওয়া হল না যে আপনারে এই ব্যথা মনে লাগে। । রোদনভরা এ বসন্ত ... বৈশাখের প্রথম দিনটি শব্দে বন্দী করার বাসনা নিয়ে লিখতে বসেছিলাম। লেখার মত তেমন আহামরী কিছু যে ঘটেছে তা নয় আবার হ্যাঁ ও বটে। সকালে উঠে শুনছিলাম "রোদন ভরা এ বসন্ত"।

হঠাৎ এ গানটা কেন ঠিক বলতে পারবোনা। শুনতে শুনতে মনে হচ্ছিল ঠিকই আছে। আমার বিরহ বেদনা রাঙানো, রোদনে ভরা এমন বসন্ত এমন করে আগে কবে এসেছে। পঞ্জিকার খাতা ধরে আজ পহেলা বৈশাখ বটে কিন্তু এইখানে বসন্ত তার রঙতুলি নিয়ে মাত্রই এসেছে। গাছে গাছে শাখা পল্লবকে সে সাজাচ্ছে নতুন নতুন রঙ দিয়ে।

সকালে নির্মেঘ নীলাকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে মনে হচ্ছিল স্বর্গের দেবদেবতারা রথে চেপে এদিক সেদিক ছুটে বেড়িয়ে আনন্দ উৎসবে মেতে রয়েছে। এমন নীল আকাশ সচরাচর চোখে পড়েনা। প্রাণেশ্বরকে নতুন আরেকটি দিন দেখার সুযোগ করে দেয়ার জন্য প্রণতি জানিয়ে দিনের শুরু করলাম। বেশ কয়েকটা sms পেয়েছি বাংলাদেশ থেকে। তার মাঝে সুন্দর আগামী দিনের বারতা ছিল।

ছিল শুভেচ্ছাবাণী। আনন্দচিত্তে সবকটির প্রতিউত্তর দিলাম। এরপর ইন্দ্রানী, মিতা হক, পাপিয়া, বন্যা, শ্রীকান্ত সবাইকে নতুন বছরের আগমনী গান গাইতে কানে লাগিয়ে দিয়ে ধীরে ধীরে কাজে চলে গেলাম। মাধবীলতা কে দেখলাম আজ অনেকদিন বাদে। বরাবরের মতোই চলনে বলনে যেন অধরা কোন সুর বইয়ে বেড়াচ্ছে।

অধরাই বটে! নতুন একটা ল্যাপ্টপ পেলাম। বেশ উৎফুল্লই লাগছিল পুরানোটা থেকে নতুনটাতে ফাইল কপি করতে, সফটওয়ারস গুলো নতুন করে ইন্সটল করতে। ঘাটতে ঘাটতে এমন কিছু ছবি, ফাইল বেরুচ্ছিল যেগুলো আমার মুখে থেকে থেকে হাসি এনে দিচ্ছিল। আবিষ্কার করে বসলাম যে নতুন ল্যাপ্টপটায় ওয়েব ক্যাম বিল্ট ইন করা আছে। কলিগদের সাথে মজা করছিলাম এই বলে যে, আমাদের কাজের উপর নজরদারী করতেই এই ক্যামেরা সহ নতুন ল্যাপ্টপ বিলিয়ে বেড়াচ্ছে।

ফেরার পথে কিছু সবজী কিনতে গেলাম। গিয়ে দেখি, ওমা সেকি কান্ড। চারিদিকে বাঙালী দেশী পোশাকে গিজগিজ করছে। শাড়ী পড়া বঙ্গ ললনারা দিকে দিকে হেটে বেড়াচ্ছে। আজ যে উৎসবের দিন সেটি সেখানে যেয়ে নতুন করে যেন উপলব্ধি করলাম।

যে পথে বাজার করতে যাচ্ছিলাম দেখি অনুষ্টানের কেন্দ্রস্থল সেদিকেই। ফ্রী খাবার বিতরণ চলছে তাই ভীড় সেদিকেই। কয়েকজনের বক্সের দিকে চোখ পড়তে মনে হলে যেন পান্তা ভাত। এক মাকে বলতে শুনলাম তার পিচ্চিকে জোর করে পান্তা গিলাচ্ছে এই বলে, "এইটা আমাদের সংস্কৃতি বাবা, খাও"। বেশ একটা মেলা মেলা ভাব চারদিকে।

গানবাজনা কানে এল। এক জায়গায় দেখি মঞ্চও করা হয়েছে। ভীড় ঠেলে ঠেলে সবজী কিনে যে পথে এসেছি সে পথে না গিয়ে অন্য পথ ধরে সন্ধ্যার রুপে মুগ্ধ হতে হতে বাসায় ফিরে চললাম। সন্ধ্যাটাও গোধূলী দিয়ে সেজেছিল আহাউহু করারি মতোন।


সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।