চুমকি, তুই ভালো আছিস কি খারাপ আছিস জানা হয়নি অনেক দিন। অথচ প্রতি বেলায়-ই তোর খবর নিতে ইচ্ছে হয়। দূরত্বের ছুতো আর নানা অকাজের জন্য আর হয়ে ওঠে না। কতো দিন হলো তোর সাথে কথা হয় না। কথা জমে জমে পাহাড় হয়ে গেছে।
তুইতো জানিস আমার মনের মধ্যে উদ্ভাবিত সব ফসল বিক্রির ক্রেতা এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি। বছর বছর করে এখন অভ্যন্তরীণ কোলোস্টরোল ভরে গেছে। আর আমি হাপাচ্ছি দৌড়ে পালানো সিংহের মতোন। যার গর্জন আছে কিন্তু ধ্বংসের দূঃসাহস ফুড়াচ্ছে ক্রমশ।
কি শুনছিস তো! না বিরক্তি চেপে যাচ্ছে কান বরাবর।
আসলে কি জানিস এই দূমূল্যের বাজারে ধৈর্যশীল শ্রোতা পাওয়া দূস্কর। সবাই ব্যস্ত, কারো হয় না কারো কথা শোনার অথবা কারো দীর্ঘশ্বাসের হাওয়া দিয়ে নষ্ট করতে চায় না সুখের হেঁসেলে রান্না হওয়া সুস্বাদু উৎসব। তারপর শোন- ইদানীং আমি ক্রমশই হারাচ্ছি- জানিনা সত্যিই একদিন হারিয়ে যাবো কিনা। কোন কাজই করতে পারি না হয়তো অকাজও নয়। তারপরও পরগাছার মতো অসহ্য এই বেঁচে থাকা।
জানিস এতো কিছুর মধ্যেও একটা ছবি আঁকি-অদৃশ্য দেয়ালে- যেখানে কোন কিছুরই ঘাটতি নেই। যে ছবিটাকে ইচ্ছে হলেই পুজো করা যায়, ভালোবাসা যায়, আবার ইচ্ছে হলে প্রেমে পড়া যায়।
আবার একটা কবিতার খসড়া করছি যার জন্মটাই আসলে একটা কবিতা হয়ে। যাকে নতুন করে অলংকারিত করার কিছু নেই।
জানিস-মাঝে মাঝে মনে হয় হেরে গেছি, নিজের কাছে যে হেরে যায় সেতো আর দাঁড়াতে পারে না।
উল্টো হয়ে চলতে পারেনা। তবে আমার চলা কি থেমে যাচ্ছে! গন্তব্যহীন পথিকের মতো অন্ধ, আতুর হয়ে দাঁড়িয়ে থেকেই বা কি লাভ বল !
তবে ইদানীং প্রচুর গান শনছি, কাঁচা -পাকা সব। সবগুলোতেই আমার কন্ঠ মিলে যায়- না পাওয়ার উৎসবে। চিৎকার দিতে পারি না হো হো করে হাসতে পারি না। তাই গুম হয়েই থাকতে হয়।
দেয়ালে টিকটিকির সঙ্গম দৃশ্য দেখতে হয়। অদৃশ্য তীব্রতা দেখতে হয়।
জানিস গতো ৩০ জুলাই মনির জন্মদিন ছিল। এতোদিন পরও এটা ভুলতে পারিনি। ম্যাসেজ পাঠালাম- কয়েক বছর , মনে হলো কয়েক শতাব্দী পর আবার কথা হলো।
কিন্তু আমার মতো অসহয় মানুষের প্রতি তার রাগ এখনো বিন্দুমাত্র কমেনি। আচ্ছাÑ অসহয়, ক্ষয়ে যাওয়া, হারিয়ে যাওয়া মানুষের প্রতি অভিমান করে কি লাভ বল! পুরাতর প্রশ্নটা আবার নতুন করে করলো আমি তাকে ভালোবাসি কেনো। আমি জবাব দিতে পারিনি। বলতে পারিনি আমি তাকে ভালোবাসি কেনো। আসলে আমিতো জানিনা- আমি মনিকে ভালোবাসি কেনো... কবিতাÑ আমার কবিতাকে ভালোবাসি কেনো...
জানিস গ্রামে থাকতে আমি মঞ্চ নাটক করতাম।
হাঁ নায়ক চরিত্রেই। আমার মুখে একবারও মেকাপ লাগাতে দেয়নি নির্দেশক। শুধু চরিত্রের কারনে দাড়ি, গোফ লাগাতে হতো। দর্শকদের কতো হাততালিÑ গদবাধা ডায়লগ বলে বোকা বানাতাম দর্শকদের। এখন প্রতিনিয়ত নিজের কাছে নিজে অভিনয় করছি, নিজেকে নিজে ঠকাচ্ছি।
কখনো শয়তান হয়ে, মানুষ হয়ে, ফেরেস্তা হয়ে। জানিস কাল রাতে হঠাৎ বুকে ব্যথা শুরু হলো। যদিও ব্যথাটা পুরানো তবে অনেক দিন এরকম হয়নি। মনে হচ্ছিল আস্তে আস্তে ছোট হয়ে আসছে আমার পৃথিবী। নিঃশ্বাসের ব্যাপ্তী কমে আসছে।
জোছনা রাত-ছাদে গিয়ে ধূলোর মধ্যে টান হযে শুয়ে পড়লামÑতাজা অক্সিজেন নিয়ে বেঁচে থাকার লোভে! নিঃশ্বাস ভারী হয়ে আসতে লাগলো। মনে হচ্ছিলো আমার বেঁচে থাকার লোভ দেখে মাথার উপড় চাঁদটা ভেংচি কাটছে। শোয়া থেকে উঠে হাঁটলাম কিছুক্ষণ, না কোন উপশম হচ্ছে না। একবার মনে হচ্ছিলো নিচে ডোবায় ঝাপ দেই। আচ্ছা তিনতলার ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়লে কি মানুষ মারা যায়! তাও সাহস হলো না, এই সাহসের অভাবেই আমার জীবনের অপ্রাপ্তির তালিকাটা অনেক বড়।
কিন্তু কি করবো পালাতে চাইÑ আবার দেখতেও চাই- কোনোটার লোভই কম না।
এরই মধ্যে মনে হলো- কিছু দিন থেকে একটা মেয়ে আমার জন্য জীবন দিতে উঠেপড়ে লেগেছে। মনে হয় যেনো ,মনের থেকে জগতে সস্তা কিছু নেই! আমার প্রতি তার নাকি অনেক ভালোবাসা। তাকে কেনো ফোন করি নাÑতাই করলাম। বুকের ব্যথার কথা শুনে হেই হেই করে উঠলো।
কেনো ডাক্তার দেখাই নাÑ কেনো ঔষধ খাই নাÑ বাসায় কেনো কাউকে খবর দেই না। জানালো- আমার ব্যথায় তার বুকও ধড়পড় করছে। আরো কতো কি! ভালোবসলে আমার ব্যথা যদি না ঘোচে তাহলে কেমন ভালোবাসা ! এই মাঝ রাতে তার ভালোবাসা আমার বুকের ব্যথা কমাতে পারেনি সুড়সুড়ি জাগাতে পেড়েছে।
কি করছিস- রে সোনাÑ যাদের কোনো কাজ নেই তাদের বুঝি অনেক কাজ! আমার মতো অকাজের কাজীদের সংখ্যা মনে হয় নেহায়েত কমও নয়। যার দাপানীতে আমার মধ্যে ঢেউ উঠেছিল- সে চলে যাওয়ার দিন বুকের মধ্যে কিছু একটা আটকে ছিলোÑ মনে হয়নি তার পরও এতো এতো দিন বাঁচবো! এনে হয়নি জলাতঙ্কের কথা ভুলে আবার তৃষ্ণার্ত হয়ে উঠবে হৃদয়।
আবার কাঁদার জন্য ব্যাকুল হয়ে হয়ে উঠবে মন ও মনন।
জানিসতোÑবেকার সময় এক অসহয় পরিচ্ছেদ। এই পরিচ্ছেদের সব লাইন জনসম্মুখে প্রকাশ করা যায় না। এই অনাটনের মধ্যে ব্যাবহারিত মোবাইলটা চোখে আঙুল দিয়ে নিয়ে গেলো। আমি চিৎকার করতে পারি না।
জোড় করতে পারি না। তাই ধমক দিয়ে ফোন সেটটি আদায় করতে পারলাম না।
বাসায় এসে মন খারাপ করে রইলাম। অঞ্জন দত্তের গান শুনলাম। টেবিলে বসলাম না।
তাতে কি ক্ষতি হলো দেশের, নেতা নেত্রীদের, আম জনতার, মোবাইল সেট চোরের। আমি বরং অপমানিত হতে থাকলাম নিজের মধ্যে নিজে। এতা সব যন্ত্রনার অভয়ারন্যে সাঁতরে সাঁতরে মাঝে মাঝে খুব কাঁদতে ইচ্ছে হয়। মনে হয় কাঁদতে পারলেই হা হা করে হাসতে পারতাম। হতাশা আর গম্ভীরতা হলো ভাইরাসের মতো সব জায়গায় অল্পতেই ছড়িয়ে পড়ে।
জানি না এভাইরাস কবে যাবে কবে শেষ হবে আত্মহত্যার লিপ্সা।
রচনাকালঃ ১ থেকে ৯ অক্টোবর ২০১২ খ্রীঃ
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।