আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হলুদ

আমি উঠে এসেছি সৎকারবিহীন হলুদ কাপুরুষতার রঙ হতে পারে, এটা শেখা হয়নি কখনই। অথচ সবক'টা প্রচ্ছন্ন বিকেল, সন্ধ্যে পরবর্তী বিষণ্ণ মফস্বল, মৃত্যুর তীব্র গন্ধ ছড়ানো হাসপাতালের বেড কিংবা ডিটারজেন্টের খালি মোড়ক আমাকে শিখিয়েছিলো অন্যকিছু। পরিষ্কার যে দেবশিশুটি নিত্য আমার অস্তিত্বে পেন্সিলে এঁকে যায়, সেদিন সহসা ইরেজার ঘষে দিলো। যখন... আমাদের ঘোলাটে এই মফস্বলের কোনো এক নিস্তেজ প্রান্তে কয়েক যুগ পুরনো পুকুরটার মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করা হলো হুট করেই। অকস্মাৎ বালু এসে তার বুক ভরে দিলে দু'রাত পরে এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদস্বরূপ সেখানে ঠোঁটপালকসমেত গজিয়ে উঠেছিল একঝাঁক চিল।

তাদের তীব্র ডানা ঝাপটানোর শব্দে ঝিমাতে থাকা ষ্ট্রিটল্যাম্প হ্যাঁচকা টানে জেগে উঠে আওড়েছিল হলদে অভিযোগ; চোখ পিটপিট করে চেয়েছিল নেশালু রাত ওতে... ভীষণ অখেলোয়াড়সুলভ, দুইশত ফুট উঁচু কংক্রীট বৃক্ষের বীজ বপনের কারিগর, চৌকোণা ছক এঁকে যাচ্ছিল ফ্লুরোসেন্ট আলোয় সেই জলাশয়ের মৃতদেহে দ্রুতবেগে। সহস্র ঠোকরেও টলে নাই সে, টলে নাই বিলুপ্তপ্রায় শকুনের মতোন সেইসব অধিবাসীর অভিশাপে, যারা পুরনো গন্ধ দুহাতে আঁকড়ে বেঁচেছিল। এহেন অ-নাগরিক কার্যকলাপে ত্যক্ত কিছু ঠোঁট বিস্বাদ চায়ের কাপে প্রস্তাব হানলে পুকুরটির সৎকারের, ওতে সায় দিয়েছিল কেউ কেউ। রাতের তৃতীয় প্রহরে পরিকল্পনামাফিক শোক পরিধান করে হাজিরা দিতে গেলে অনুষ্ঠানে উপস্থিত দেখা গিয়েছিলো মেটে রঙের এক জীর্ণ চৌকিদার এবং স্ট্রিটল্যাম্পের অভিযোগী মিটমিটে হলদে আলো। আর দুটো পাথুরে তরুণও দেখা গিয়েছিলো; অবশ্য ওরা শিখে গিয়েছিলো সিরিঞ্জ এবং শরীরের সহজ সমীকরণ, নিথর তুফান।

শুধু ঐ পাখিদের দেখা যায় নি, পরবর্তী বিকেলে কিংবা অন্য কোন দিন। অবশ্য লোকমুখে শোনা যায়, সেই চিলেরা এখন কাকের ছদ্মবেশে শহুরে আকাশে ওড়ে। [হলুদ] জুন ১০, ২০১১ রিজওয়ান ছবিটি ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।