আজকাল যে সমস্ত ঘটনা চোখের সামনে ঘটতে দেখছি তাতে মনে হচ্ছে পুরো মিডিয়া যেন আমাদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে। যারা আমাদের তথা ভিকারুননিসার মেয়েদের দাবী দাওয়াকে সঠিকভাবে তুলে ধরছেন, তারা নাকি বিএনপি সমর্থিত পত্রিকা। আশ্চর্য হচ্ছি এই কারণে বাংলাদেশের রাজনীতিবিদরা সবাই সব কিছুর মধ্যে অপর পক্ষের হাত কেন খুঁজে বেড়ান? আমরা ভিকারুননিসার মেয়েরা যারা ১২ বছর ঐ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা করেছি, তাদের কি ঐ স্কুলের প্রতি কোন ভালবাসা নাই? তারা পাশ করে বের হয়ে গিয়ে আর কোনই খোঁজ খবর রাখে না স্কুলের? আমরা বুঝি না আমাদের ভালবাসার জায়গায় আঘাত করে সরকারমহল কি উদ্ধার করবেন? আমরা আমাদের স্কুলকে ভালবাসি। স্কুলের আনন্দ, দুঃখ সবকিছুতে আমরা সমানভাবে অংশগ্রহণ করি। মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী মনে হয় এই ব্যাপারটি জানেন না, বা জানলেই ভাব দেখাচ্ছেন যে তিনি জানেন না।
৬০ বছরের পুরোনো একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিয়ে এই রকম নোংরা রাজনীতি খেলা তাদের মোটেই শোভা পা্য় না। তারা রাজনীতি অঙ্গনের সবচেয়ে পুরানো কর্মী। তারা খুবই ভাল করে বুঝবেন যে স্কুলের/কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা এই রকম চাল চালতে জানে না, যেই রকম খেলা আমাদেরকে নিয়ে এখন খেলা হচ্ছে।
আজকের কালের কন্ঠে পড়লামঃ
শিক্ষক পরিমল জয়ধরের ছাত্রী নিপীড়নের কেলেঙ্কারির পর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে সৃষ্ট সংকট সম্পর্কে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, এ সংকটের পেছনে কোনো মহলের ইন্ধন রয়েছে। অপসারিত অধ্যক্ষ হোসনে আরা বেগমও দাবি করছেন, প্রতিষ্ঠানটিতে ভর্তি-বাণিজ্য বন্ধ করার কারণে একটি মহল এ ঘটনার জন্ম দিয়েছে_পরিমল উপলক্ষ মাত্র।
হাস্যকর একটা ব্যাপার। আমাদের স্কুলের অধ্যক্ষা সবসময় স্কুল/কলেজ থেকেই সবসময় নিয়োগ পেয়ে এসেছেন। হামিদা আলী আপার পরে কলেজের রোয়েনা হোসেন, তারপর কলেজের রোকেয়া আকতার বেগম। কিছু সময়ের জন্য শায়লা আপা আর তাহমিনা আপাও নিয়োগ পেয়েছিলেন। ইনারা সবাই স্কুল কলেজ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল।
তারা জানেন মেয়েরা কি চায়। তারা স্কুলকে যেভাবে ভালবাসবেন, একজন বাহিরের শিক্ষক এসে সেই ভালবাসাকে ধরে রাখতে পারেন নাই, এবং সেইটাই আমরা হোসনে আরা বেগম এর প্রতিটা পদক্ষেপ-এ দেখেছি। আমরা স্কুল থেকে বের হয়ে এসেছি মানে এই না যে স্কুলের খবর আমরা পাই না। আমাদের সবারই কারো না কারো বোন এই স্কুলে পড়ে। কারো মেয়ে এই স্কুলে পড়ছে।
ওদের মুখ চেয়েই আমরা বার বার স্কুলে অনিয়ম হলে প্রতিবাদ করি। আমরা কেউই রাজনীতি করি না। কারণ বাংলাদেশের মত দেশে যুবসমাজকে শুধুমাত্র ব্যবহার করা হয়। সুস্থ রাজনীতি এই দেশে একসময় হত, এখন আর হয় না।
আমাদের রাজনীতিতে বিন্দুমাত্র আকর্ষণ নাই।
এই কথাটি তারা যেন হৃদয়ের অন্তঃস্থলে ঢুকিয়ে নেন।
কালের কন্ঠে আরো লিখছেঃ
একজন অভিভাবক বলেন, এসব ঘটনায় বোঝা যাচ্ছে, ঐতিহ্যবাহী এ প্রতিষ্ঠানটি নোংরা রাজনীতির শিকার হচ্ছে। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ কালের কণ্ঠকে বলেন, 'ভিকারুননিসায় এসব করা হয়েছে পরিকল্পিতভাবে। না হলে যেদিন সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শোক প্রকাশের কর্মসূচি, সেদিন কিভাবে ভিকারুননিসায় বড় বড় দুটি কেক কাটা হয়?'
আমাদের স্কুলে সবসময়ই কোন ভাল খবর আসলে আমরা কেক কেটে আনন্দ করি। এটার জন্য কোন তৃতীয় পক্ষের দরকার আমাদের পরে না।
আমরা নিজেরাই তার জন্য যথেষ্ঠ। শিক্ষামন্ত্রী বার বার কেক কাটার কথা বলছেন। একজন সন্তান যখন জন্ম নেয়, আর সেই দিন যদি তার মা মারা যায়, তবে কি ঐ সন্তানটির জন্মদিন কখনোই কি পালন করা হবে না? শুধু কি শোক দিবসই পালিত হবে? আমরা ১৫ দিনের দুর্যোগপূর্ণ দিন পার করে যখন দেখলাম যে ভিকারুন নিসা এখন একটি সুরক্ষার বেড়াজালে যাচ্ছে, তখন স্বভাবতই মেয়েরা চাইবে আনন্দ করতে। এটার পিছনে ২য়/৩য়/৪র্থ কোন ব্যক্তি কিভাবে কোন দিক দিয়ে কিসের কারণে যুক্ত হবে এটা আমার বোধগম্যের বাহিরে। মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী যদি বুঝিয়ে দেন বিস্তারিতভাবে, তাহলে বড়ই উপকৃত হতাম।
পরিমলের বিচার এখন আমরা দেখতে চাই। তাকে কোন জায়গায় সুরক্ষিত অবস্থায় রাখা হয়েছে আমরা সেটা জানতে চাই। এটা আমাদের নৈতিক অধিকার। এ থেকে সরকার আমাদের বিরত রাখতে পারেন না। শুধু পরিমল নয়, আমরা হোসনে আরা বেগম, লুৎফর রহমান-এদের কর্তব্য অবহেলার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
পরিমলের সহকারী ছিল যারা তাদের সকলের বিচার হবে, এই এখনকার দাবী। আশা করি সরকার নিজের লোকের সুবিধা দেখা বাদ দিয়ে সত্যটিকে চোখ দিয়ে দেখবেন। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।