আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

স্থানীয় নির্বাচন দলীয় হলে ‘আপত্তি নেই’ ইসির

তবে এ বিষয়ে আইন সংশোধনের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কেই উদ্যোগ নিতে হবে বলে জানিয়েছেন একজন নির্বাচন কমিশনার।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও ভবিষ্যতে স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচনগুলো দলীয়ভাবে করার বিষয়ে মত দিয়েছেন ইতোমধ্যে।
অবশ্য সংশ্লিষ্টরা  মনে করছেন, দলীয়ভাবে তৃণমূলের এ নির্বাচন হলে সহিংসতা বাড়বে। বাধাগ্রস্ত হচ্ছে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড। দলগুলোর মধ্যে শৃঙ্খলা ও দায়-দায়িত্ব নেওয়ার ‘চর্চা’ গড়ে না উঠলে দলীয় ডামাঢোলে স্থানীয় সরকারের প্রতিষ্ঠানগুলোকে চড়া মাশুল দিতে হবে।


নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পাঁচটি সিটি নির্বাচনের অভিজ্ঞতায় দেখেছি-শুধু দলীয় প্রতীক নেই। আমরা চেয়েছি নির্দলীয় হোক। কিন্তু দলগুলো প্রতিদ্বন্দ্বীদের যেভাবে সমর্থন দিয়েছে, স্থানীয় নির্বাচন তাতে জাতীয় পর্যায়ের নির্বাচনের রূপ পেয়েছে। দলীয়ভাবে এ নির্বাচন হলে আমাদেরও আপত্তি নেই। ”
তবে এজন্য স্থানীয় সরকার আইনে সংশোধনী আনতে হবে।

আর সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কেই এ উদ্যোগ নিতে হবে বলে কমিশনার জানান।
তিনি বলেন, “নির্বাচনটি স্থানীয় সরকারের। আমরা শুধু আয়োজন করে দেই। এথন স্থানীয় সরকার বিভাগ প্রয়োজনীয় সংশোধন আনতে পারে। ”
২০০৮ সালে চার সিটি কর্পোরেশনে নির্বাচন একসঙ্গে করার অভিজ্ঞতার পর তখনকার নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেনও বলেছিলেন, নির্দলীয় স্থানীয় সরকার নির্বাচন কেবল আইনের পাতাতেই আছে।

প্রকারান্তরে দলীয় নির্বাচনই তো হচ্ছে।   দলীয়ভাবে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হলে যে কোনো সমস্যার জন্য রাজনৈতিক দলগুলো দায়ী থাকে। কাজেও অনেক সুবিধা হয়।
তার মতে, স্থানীয় সরকার আইন পরিবর্তন করা গেলে কেবল নিবন্ধিত দলগুলোই অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবে। সেক্ষেত্রে দলীয় প্রতীক ব্যবহারেরও সুযোগ রাখা যেতে পারে।


“এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হলে দলীয় পরিচয়ের বাইরের প্রার্থীরা স্থানীয় নির্বাচনে স্বতন্ত্র হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ পাবেন। ”
নির্বাচন পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করে আসা বেসরকারি সংস্থা সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)- এর সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রতিবেশী ভারতসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয় পরিচয়েই হয়। ভারতে পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে অনেক স্থানীয় নির্বাচন এখন দলীয় পরিচয়ে হচ্ছে। সেখানে ব্যাপক সহিংসতাও হয়েছে। ”
সব মহলের সঙ্গে আলোচনা করে তবেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার পরামর্শ দেন তিনি।


সুজন সম্পাদক বলেন, “দলীয়ভাবে আমাদের এখানেও স্থানীয় সরকার (সিটি, পৌর, উপজেলা ও ইউনিয়ন) নির্বাচন হতে পারে। তবে এর মাশুল দিতে হবে। এখন তো স্থানীয় নির্বাচনে সহিংসতা নেই বললেই চলে। দলীয়ভাবে হলে তৃণমূলে বেড়ে যাবে দলবাজি। সারাবছরই লেগে থাকবে সহিংসতা।

এজন্য দলীয়ভাবে স্থানীয় নির্বাচন না করাটাই ভালো হবে। ”
বদিউল আলম জানান, ২০০৮ সালে যেখানে চার সিটিতে মেয়র প্রার্থী ছিলেন ৪৬ জন, এবার সেখানে মাত্র ১২ জন।
“দলীয় নির্বাচন হলে তৃণমূলে প্রার্থী কমে যাবে। যোগ্য ও সৎ প্রার্থীরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। সেক্ষেত্রে স্থানীয় সরকারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে আরো বেগ পেতে হবে।


রাজনৈতিক দলগুলোকেও যে কোনো ঘটনার জন্য দায়-দায়িত্ব না নেয়ার মানসিকতা তৈরি করতে হবে মন্তব্য করে বদিউল আলম বলেন, “যেখানে দলগুলোর মধ্যে শৃঙ্খলা নেই, সেখানে দল কীভাবে এতো ঝামেলা সামলাবে তা-ই দেখার বিষয়। ভোটারদের মধ্যে বিভক্তি প্রকট হয়ে যাবে। এটা স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের জন্য সুখকর হবে না। ”
বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে অধ্যাদেশ আকারে জারি করা ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, উপজেলা এবং সিটি কর্পোরেশন আইন নবম জাতীয় সংসদে পাশ হয়।
এ টি এম শামসুল হুদা নেতৃত্বাধীন ইসির অধীনে ২০০৯ সালে উপজেলা পরিষদ, ২০১০-১১ সালে পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ এবং ২০০৮-১২ সালে সিটি করপোরেশনে নির্বাচন হয়।


আর কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ নেতৃত্বাধীন ইসির অধীনে এবার স্থানীয় সরকারের মেয়াদোত্তীর্ণ নির্বাচনগুলো হচ্ছে।

সোর্স: http://bangla.bdnews24.com     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.