এর পক্ষে চতুর্থ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন চলার মধ্যে বিভিন্নজনের মত জানানোর পর আওয়ামী লীগ সভানেত্রী তার অবস্থান জানালেন।
বৃহস্পতিবার কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আওয়ামী লীগের স্বাধীনতা দিবসের আলোচনা সভায় তিনি উপজেলা নির্বাচনের প্রসঙ্গে বলেন, এই নির্বাচন দলীয়ভাবে হয় না। দল থেকে হলে প্রার্থী মনোনয়ন দেয়া যেত। একটা নিয়ন্ত্রণ থাকত।
“এখন না আছে নিয়ন্ত্রণ, না আছে কিছু।
আগামীতে এই ইলেকশনগুলো দলীয়ভাবে হওয়া উচিত। ”
স্থানীয় নির্বাচনে দলগতভাবে প্রার্থিতা ঘোষণা ও দলীয় প্রতীক ব্যবহারের আইনি সুযোগ না থাকলেও কার্যত সব রাজনৈতিক দলই প্রার্থী বাছাই করে সমর্থন ঘোষণা করে থাকে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম স্থানীয় নির্বাচন দলীয়ভাবে করতে আইন সংশোধনের ইঙ্গিত ইতোমধ্যে দিয়েছেন।
এরপর প্রধানমন্ত্রীপুত্র জয় দলীয়ভাবে স্থানীয় নির্বাচনের পক্ষে অবস্থান জানালে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদও তা সমর্থন করেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের একাধিক প্রতিদ্বন্দ্বী প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, “কাউকে যদি বলি, বসেন।
তাহলে উল্টো বলে, ‘দেখেন বিজয়ের মালা নিয়ে দেখা করব’। ”
নিজের উপজেলা টুঙ্গীপাড়ায় চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের ছয়জন প্রার্থী থাকার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, উপজেলার তৃতীয় ও চতুর্থ পর্যায়ে একজন প্রার্থী নিশ্চিত করতে পারায় ফল ভাল হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাচনে কারচুপির যে অভিযোগ বিএনপি এনেছে, তা নাকচ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “উপজেলা নির্বাচনে অনেক চেয়ারম্যান আর ভাইস চেয়ারম্যান জামাতের। আওয়ামী লীগ রিগিং করলে জামাতের একটা চেয়ারম্যানকেও জিততে দিত না।
“যারা জন্ম থেকে ইলেকশন রিগ করছে, তারাই এটা করছে। এটা আগামীতে প্রচার পাবে। ”
নির্বাচনে কারচুপির যে কোনো ঘটনা এড়াতে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন ব্যবহারের পক্ষে নিজের অবস্থান জানান শেখ হাসিনা।
“ইলেকট্রনিক ভোটিং হলে, সিল মেরে বাক্স ভরতে পারবে না। আধুনিক বিশ্বে যেভাবে হয়, সেভাবে হতে হবে।
যাতে অনিয়ম চিরতরে বন্ধ হয়ে যায়। ”
অনির্বাচিত কাউকে ক্ষমতায় আনতেই একটি চিহ্নিত গোষ্ঠী উপজেলা নির্বাচন নিয়ে উদ্দেশ্যমূলকভাবে সহিংসতার সংবাদ প্রচার করছে বলেও প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন।
‘সার্কাসের গাধার দড়ি ছেড়ার অপেক্ষার’ কৌতুকটি বলে শেখ হাসিনা বলেন, “অনেকেই দড়ির দিকে তাকিয়ে থাকে- কবে দড়ি ছিঁড়বে, কবে ক্ষমতায় যেতে পারবে। ”
গণতন্ত্রের ধারা যে কোনো মূল্যে অব্যাহত রাখার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, “যখন গণতন্ত্র থাকে না। অগণতান্ত্রিক কেউ ক্ষমতায় থাকে।
তখন ওনাদের দাম বেড়ে যায়। ওনারা নিজেদের ব্যক্তি স্বার্থে গণতন্ত্র ধ্বংস করছে। ”
গণতন্ত্র নস্যাতের ষড়যন্ত্র এখনো বলছে বলে সবাইকে সতর্ক করে দেন প্রধানমন্ত্রী।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগের দেশি-বিদেশি চাপের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “অনেক প্রেসার ছিল।
“আমিও তো বঙ্গবন্ধু মুজিবের সন্তান।
আল্লাহ ছাড়া কারো কাছে মাথা নিচু করব না। কেউ এত চাপ সহ্য করতে পারত কি না, জানি না। ”
‘লাখো কণ্ঠে জাতীয় সংগীত’ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অগ্নিশিখা নিয়ে নতুন প্রজন্ম এগিয়ে যাবে। এই যে শিখা প্রজ্জ্বলিত হলে, কেউ তা নেভাতে পারবে না।
জিয়াউর রহমানকে বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি দাবি করে তার ছেলে তারেক রহমানের বক্তব্য প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, “ঘোষক ফর্মুলা পাল্টে এখন রাষ্ট্রপতি বানিয়ে ফেলেছে!
“বিদেশে থাকলে তো একটু পড়াশোনা করার কথা।
কিন্তু, সেইটুকু পড়াশোনা করেছে কি না, জানি না। কিছু অর্বাচীন উদ্দেশ্যমূলকভাবে কিছু কথা বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য। ”
“মিথ্যাচার, অসাংবিধানিক ও অবৈধভাবে যাদের জন্ম, তাদের কাছ থেকে ভালো কিছু আশা করা যায় না। যাদের অবৈধ জন্ম- তারা তো অসংলগ্ন কথা বলবেই,” বলেন হাসিনা।
তিনি ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ পাকিস্তানের সেনা শাসক ইয়াহিয়া খানের ভাষণের কথা মনে করিয়ে দিয়ে বলেন, “ইয়াহিয়া বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানের শত্রু হিসাবে ঘোষণা করে।
আর তো কারো নাম নেয়নি। ”
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।