এবার কনোকোফিলিপস তার খেল দেখিয়েছে বেইজিং এর সন্নিকটে অবস্থিত বোহাই সাগরের পেংলাই অঞ্চলে। চীনের রাষ্ট্রীয় সমুদ্র ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের মতে ৮৪০ বর্গ কিলোমিটার এলাকার সমুদ্রে সে ছড়িয়ে দিয়েছে অপরিশোধিত তেল। পেংলাইএর ১৯-৩ নম্বর কূপে কনোকোফিলিপস কর্তৃক গভীর সমুদ্রে কূপ খননের সময় এই ঘটনা ঘটে।
এর ফলে লন্ডনের যা এলাকা তার অর্ধেক পরিমান সমুদ্র এলাকা দূষিত হয়েছে যা লুকিয়ে রাখা হয়েছে এক মাস। গত জুনের ৪ তারিখ এই ঘটনার প্রথম ধাপের সূচনা ঘটলেও প্রেসের সামনে তা প্রকাশিত হল ৫জুলাই।
এই পুরো ৮৪০ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে তেল ছড়িয়ে পড়ার পরে বোধোদয় হল কর্তৃপক্ষের।
এই ক্ষেত্রটির মালিকানার ৫১ ভাগ চাইনিজ ন্যাশনাল অফশোর অয়েল কর্পোরেশন ও ৪৯ ভাগ কনোকোফিলিপসের। যে কুপটি থেকে তেল লিক করে সেই কূপে খনন কাজ করছিল কনোকো ফিলিপস। ঘটনার পুরো দায়ভার প্রেস কনফারেন্সে স্বীকার করেছে কনোকো ফিলিপস। তবে তেল পরিষ্কারের দায়িত্ব মাথায় তুলে নিয়েছে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানটি।
স্টেট ওশানিক আডমিনিস্ট্রেশন এর মুখপাত্র লি জিয়াওমিন বলেছেন-‘ নর্থ সি এর তেল নির্গমনের ঘটনায় তদন্ত কর্মকর্তারা ইতোমধ্যেই নির্গমনমুখ বন্ধের কথা বলেছিলেন। অনেক ক্রিয়াকলাপের কারণেই কনোকোফিলিপসকে একাধিক বার সতর্ক করতে হয়েছিল। '
যে তেল ছড়িয়ে পড়েছে তার ফলে মাছ মরে ভেসে ওঠার খবর দিয়েছে সেই অঞ্চলের মাছ ধরা কর্তৃপক্ষ। ঘটনার ৪৫মাইল দূরে নানহুয়াচাং দ্বীপে ভেসে উঠেছে মরা মাছ ও ম্ররত সামুদ্রিক আগাছা। ধারণা করা হচ্ছে এই ঘটনার ফলাফল হবে সুদূরপ্রসারী।
ক্ষতিপূরণের অঙ্ক জানতে হলে তদন্তের ফলাফল জানতে হবে। তবে অনুমান করা হচ্ছে এই অঙ্ক ২ মিলিয়ন ডলারের সমতূল্য হতে পারে।
চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ প্রতিষ্ঠান শিনহুয়ার মতে, এর দায় মার্কিন প্রতিষ্ঠানটির এবং এই খবর দেরীতে প্রকাশের জন্য এর কর্মকর্তারা ‘যান্ত্রিক সীমাবদ্ধতা’ স্বীকার করেন।
গ্লোবাল টাইমসের মতো শক্তিশালী পত্রিকা দাবী করে, ‘এই সকল বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের সাথে সরকারী রেগুলেটরি বা আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সম্পর্ক খুবই গাঘেঁষা’। ব্লগে দাবি করা হচ্ছে ২০০৯ থেকে ২০১০ সালের মাঝেই মার্কিন এবং ইউরোপিয়ান কূপগুলোতে ১০০এর অধিক অপ্রকাশিত তেল নির্গমনের ঘটনা ঘটেছে যা ধামাচাপা দেয়া হয়েছে সময়মতো।
গ্রীনপিসের দাবি ক্ষতির মাত্রাগত পরিমান বর্ননার অন্তত ৬০ গুন বেশি।
বহুজাতিক প্রতিষ্ঠাঙ্গুলোর কর্তৃপক্ষের প্রথম কাজ এখন দূর্ঘটনাকবলিত কূপ বন্ধ করা নয়, সত্যকে প্রকাশ হওয়া থেকে প্রতিহত করা।
শেষ কথা লিখতে গিয়ে থমকে গেলাম। আজকেও একজনের সাথে তর্ক করতে হয়েছে, বিদেশী কোম্পানী মানেই তাহারা বিশাল অতিদক্ষ-সুপটু-মহৎ-ত্রুটির-উর্ধে কিছু না!
সুতরাং, আমরা সিদ্ধান্তে আসতে পারি--
১। বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের মুনাফালোভ তার দক্ষতা ছাপিয়ে ওঠে
২।
পরিবেশ ধংস হলে তারা দেশীয় সহযোগী প্রতিষ্ঠান বা সাবকন্ট্রাকটর এর কাঁধে বন্দুক রেখে পাখি শিকার করে
৩। ক্ষতিপূরণের ধার এরা ধারে না(ঊকিল এবং ইনশুরেন্স তো আছেই এদের শেষ রক্ষাকবচ)
৪। নিয়ন্ত্রঙ্কারী প্রতিষ্ঠান গিলে খাওয়ায় এরা অতিশয় পটু(চীনে তার ছোট্ট নমুনা দেখিয়েছে, আমাদের মতো দেশে না জানি দেশটাই গিলে খায়!!)
৫। আপ্রাণ চেষ্টা করে দূর্ঘটনা চেপে যাওয়ার
সূত্র-
১। Bohai Sea Oil Leak Causes Long-Term Environmental Impact
View this link
২।
Oil leak from ConocoPhillips' China field cleaned up
View this link
৩। State Oceanic Administration informed the Bohai Bay oil spill case
View this link
৪। China Oil Leaks: ConocoPhillips Defends Response
View this link ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।