আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শ্রীমঙ্গলে মির্জাপুর ও শমশেরগঞ্জ সড়কে দীর্ঘ ১ বছর ধরে বাস চলাচল বন্ধ চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্কুলগামী ছাত্রছাত্রীদের

আমি সততা ও স্বচ্ছতায় বিশ্বাস করি। মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে মির্জাপুর ও শমশেরগঞ্জ লাইনে দীর্ঘ ১ বছর ধরে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে স্কুলগামী ছাত্রছাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। গত বছরের ২৭ মার্চ থেকে একশ্রেণীর প্রভাবশালী মহলের দৌরাত্বে এ রাস্তায় বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে একদিকে যেমন উপজেলার শমশেরগঞ্জ, মির্জাপুর, পাঁচাঊন, যাত্রাপাশা, বৌলাশী, ভূনবীর, ভীমশী, পাত্রিকুল, শাসন, সরকারবাজার, সাতগাঁও, মতিগঞ্জ এলাকার হাজার হাজার যাত্রী সাধারণ পড়েছেন বিপাকে অন্যদিকে স্কুলগামী ছাত্রছাত্রীদেরকেও পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ।

কবে এ রাস্তায় আবার আবার বাস চলাচল করবে সে আশায় প্রহর গুনছে এলাকাবাসী। শ্রীমঙ্গল-মৌলভীবাজার বাস মালিক সমিতি ও রোড পারমিটবিহীন অবৈধ গাড়ির মালিক পরে মধ্যে উক্ত রাস্তা দিয়ে যান চলাচলের ব্যপারে মারাত্মক বিরোধ সৃষ্টি হলে দু’পরে মধ্যে ভয়ানক সংঘর্ষের আশঙ্কা দেখা দেয়। বর্তমানে দু’পরে মধ্যে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন মুহুর্তেই ঘটতে পারে অনাকাঙ্কিত কোন ঘটনা। স¤প্রতি সরেজমিন ঘুরে এলাকাবাসী, ছাত্র-ছাত্রী, শিক ও জনপ্রতিনিধিদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সাথে সংযুক্ত শ্রীমঙ্গল-মির্জাপুর-শমসেরগঞ্জ-মৌলভীবাজার সড়কে প্রতিদিন প্রায় ২০ সহশ্রাধিক লোক যাতায়াত করে থাকেন।

এছাড়া এ রাস্তা দিয়ে তিনটি উচ্চ বিদ্যালয় ও একটি কলেজ ছাড়াও শ্রীমঙ্গলের বিভিন্ন শিা প্রতিষ্ঠানে পড়োয়া প্রায় ৫ সহস্রাধিক ছাত্র-ছাত্রী চলাচল করে থাকে। আকস্মিকভাবে বাস চলাচল বন্ধ হওয়ায় শতাধিক অটোরিক্সা ও এ্যামা মডেলের গাড়ী রাস্তাটি দখলে নিয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে ইচ্ছেমতো ভাড়া আদায় করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সরকারের বিভিন্ন মহলে দাবী-দাওয়া, আন্দোলনসহ সরকারের কাছে অনেক আবেদন-নিবেদন করা হয়েছে। অথচ দীর্ঘ ১ বছরেও এ ব্যাপারে কোন সুষ্ঠু সমাধান হয়নি। এদিকে এলাকার ভূনবীর দশরথ উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা জানায়, অবিলম্বে এ সড়কে পুনরায় বাস সার্ভিস চালু করা নাহলে মহা-সড়ক অবরোধসহ নানা কর্মসূচী ঘোষণা করে জোরদার আন্দোলন চালানো হবে।

শ্রীমঙ্গল-মৌলভীবাজার বাস মালিক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক মো. জহির উদ্দিন জানান, এ সড়কে ইতোপূর্বে শুধুমাত্র বাস সার্ভিস চালু ছিলো। গত বছর পূর্বে আকস্মিভাবে ইমা ও সিএনজি চালিত থ্রি. স্টোক চালু হবার কারণে বাধ্য হয়ে তারা বাস সার্ভিস বন্ধ করে দেন। এলাকার সাধারণ মানুষ তথা স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের সেবা প্রদানের স্বার্থে নিজেরা তিগ্রস্থ হলেও তারা বাস সার্ভিস পুনরায় চালু করতে চান। তিনি আরো জানান, মৌলভীবাজারের কুলাউড়া এবং হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ ও আউশকান্দি এলাকার প্রায় অর্ধশতাধিক মাইক্রোবাস ও ইমা গাড়িকে স্থানীয় সরকার কর্তৃক চলাচলের অযোগ্য ঘোষণা করলে এসব গাড়ি শ্রীমঙ্গলে নিয়ে এসে পিকআপ ভ্যানে রুপান্তরিত করে অবৈধভাবে মির্জাপুর,শমশেরগঞ্জ ও ভুনবীর লাইনে যাত্রীসহ বিভিন্ন মালামাল পরিবহন করছে। বাস মালিক সমিতি তাদেরকে এ রাস্তায় চলাচলে বাঁধা দিলে তারা সমিতিকে নানা ধরনের হুমকি প্রদান করে আসছে।

শ্রীমঙ্গল থেকে শমশেরগঞ্জ-মির্জাপুর-পাঁচাঊন লাইনে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় উপজেলার মির্জাপুর, ভূনবীর ও সাতগাঁও ইউনিয়নের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে চরম উত্তেজনা। ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ, নতুন সার্ভিসের গাড়িগুলো ছাত্রছাত্রীদের গাড়িতে উঠাতে চায় না। চাপের মুখে মাঝে মধ্যে উঠালেও এসব গাড়িতে হাফ ভারার পরিবর্তে অতিরিক্ত ভাড়া দিতে হয় তাছাড়া একসাথে বেশি ছাত্রছাত্রী গাড়িতে উঠানোও সম্ভব হয়না। সাধারণ জনগণের দাবী, এসব লাইনে বাস সার্ভিস মানুষের জন্য খুবই উপযোগী। এলাকার ব্যবসায়ীদেরও একই কথা।

কারণ গ্রামগঞ্জে উৎপাদিত বিভিন্ন রকমের ফসল বিক্রির জন্য বাসে করে শহরে পরিবহন করা সহজ ও সাশ্রয়ী। অপরদিকে পিকআপ ভ্যানে করে যাত্রীদের পাশাপাশি মালামাল পরিবহনে নানা অসুবিধা পোহাতে হয়। অনেক সময় গাড়ি রিজার্ভ করে মালামাল নিয়ে শহরে আসতে হয়। ফলে খাজনার চেয়ে বাজনা বেশি হয়ে যায় ভূক্তভোগী জনগণের। এদিকে শ্রীমঙ্গল থেকে মির্জাপুর পর্যন্ত বাসের ভাড়া ১৭ টাকা থাকলেও বর্তমানে পিকআপে ২০ টাকা এবং সিএনজিতে ২৫ টাকা ভাড়া আদায় করা হচ্ছে, যা গ্রামাঞ্চলের দরিদ্র মানুষের জন্য ব্যয়বহুল হয়ে পড়েছে।

এলাকার মির্জাপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক রাকেশ চৌধুরী জানান, তিনি এলাকাবাসীকে নিয়ে দীর্ঘদিন চেষ্টা চালিয়ে গেছেন, এমনকি ডিসি, এসপিসহ এরাকার বিভিন্ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিদের সাথে একাধিক বৈঠকেও ফলাফল আসেনি। ভূনবীর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক ঝলক চক্রবর্তী জানান, তিনি উক্ত বিদ্যালয়ে যোগদানের পূর্ব থেকেই এলাকার ছাত্র-ছাত্রীরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। তার যোগদানের পরও একাধিকবার ছাত্রÑছাত্রীরা বাস সার্ভিস চালুর দাবীতে সড়ক অবরোধ করে তাদের ােভ প্রকাশ করেছে। একই স্কুলের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী নবনিতা দেব বলে, প্রায়দিন সিএনজি বা ইমা গাড়ী আমাদের নিতে চায়না। পায়ে হেটে বাড়ী যেতে সন্ধ্যা হয়ে যায়।

অপরদিকে সিএনজিতে চড়ে যেমন বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখিন হতে হয়, তেমনি যাতায়াত করে প্রচুর টাকাও খরচ হয়। শিার্থীদের এই সমস্যার সমাধান না হলে লেখাপড়া বন্ধ করা ছাড়া আমাদের উপায় থাকবে না। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.