আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ক্যাম্পাস লাইফ - ১

আমি সাধারণ, ভালবাসি রবীন্দ্রনাথ, সত্যজিৎ, আর গোয়েন্দা গল্প। গান শোনা আর গল্পের বই পড়ায় আর মুভি দেখায় কোনও ক্লান্তি নেই। দেখতে দেখতে ৫ বছর হয়ে গেলো ক্যাম্পাস লাইফ এর। শেষ ই বলা চলে। যাও একটুখানি বাকি আছে তাও শীঘ্রই শেষ হবে।

আজ এই ক্যাম্পাস লাইফ এর কিছু স্মৃতিচারণ। ক্যাম্পাস লাইফ এর প্রধান আকর্ষণ ই ছিল হল এ থাকা। প্রথম যখন হল এ থাকার জন্য আসি তখন বাবা-মা এর চিন্তার অন্ত ছিলোনা। হাজারটা উপদেশ শুনে হল এ থাকতে আসলাম। প্রথম কয়দিন কাকার বাসা থেকে আসা-যাওয়া করলাম।

একেবারে নির্বান্ধব ছিলাম না হল এ। পূর্বপরিচিত দুজন ছিল রুমমেট। যেদিন প্রথম হল এ থাকলাম সেদিন বিকালেই গেলাম মুক্তমঞ্চে নাটক দেখতে। অর্থাৎ ডানা প্রথমদিন ই মেলে দিলাম। প্রথম সমস্যা হল ঘুমাতে গিয়ে।

আমরা প্রথম আসলে হল এ জায়গার সল্পতার জন্য টিচার্স কোয়াটার এর ফ্লাট এ ছিলাম। আমাদের রুম এ ৫ জন ছিলাম। তো আমি আবার লম্বা বলে আমার বিছানায় আর পা আটাতে পারিনা। তাতে অবশ্য বেশি সমস্যা হয়নি। কারন সারাদিন এর হইচই এর পর ঘুম আসতে দেরি লাগেনি।

আমাদের ফ্লাট টাতে আমাদের রুমটা ছিল আড্ডা দেবার জায়গা। আমাদের রুমের সাথে বারান্দা ছিল। ওই বারান্দায় ও আড্ডা চলতো। প্রথম সামার ভাকেশন যেদিন হল সেদিন রাত ৩ টা পর্যন্ত বারান্দায় হাউকাউ করলাম। রাত ৩ টার সময় যার কাছে যত খাবার ছিল সব শেষ করলাম।

কারন পরদিন সবাই বাড়ি চলে যাব। এমনি হাউকাউ করছিলাম একবার মনে হইল উপরের ফ্লাট এর টিচাররা ধাবরাইতে আসতে পারে। পরক্ষনে কে যেন বলল আমাদের ইচ্ছা আমরা করব। কে কি বলবে? যেই কথা সেই কাজ। হাউকাউ আরও বেড়ে গেলো।

ভাকেশন এর পর একজন রুমমেট বদলে গেলো। একজন ঢাকা ভার্সিটি চলে গেলো। এবার আমাদের রুম টার নাম হল বি এন সি সি। কারন রুম এর ৪জন আমরা বরিশাল এর আর বাকি একজন এর বাড়ি নোয়াখালী। ওই একজন কে আমরা বরিশাল এর বউ বানাবো বলে ঠিক করলাম।

আমাদের ফ্লাট এ খাবার বন্দোবস্ত ছিলোনা। খেতে যেতাম পাশের হল এ। একদিন দুপুরে খাচ্ছি, সাথে আমার এক ক্লাসমেট। আমি খালা কে বললাম ঝোল আনতে। সে এনে দিল, কিন্তু ওই বান্ধবী বেশ কয়েকবার বলার পর ও এনে দিলনা।

শেষে আমার বান্ধবী নিজে উঠে নিয়ে আসলো। একদিন ক্লাস এ যেয়ে বসে আছি। ক্লাস শুরু হইনি। তো আমাদের হটাত খেয়াল হল আমার রুমমেট এর জামার কোনা গিট দেয়া (তখনও লম্বা জামার চল ছিল)। সেখানে একটা ফোন নাম্বার ছিল।

পরে সেই নাম্বার এ কথা বলে আরেক রুমমেট( ওই ছিল আমাদের মধ্যে সবচেয়ে আডভান্স)। পরে সব রুমমেট দলবেঁধে গিয়েছিলাম ছেলে গুলর সাথে দেখা করতে। ওই প্রথম আমার সেন্ট্রাল মাঠে বসা। ভালো লাগেনি মোটেও। ফার্স্ট ইয়ার এই পুরো ক্যাম্পাস চষে ফেলেছিলাম।

প্রতিদিন বিকালে হাঁটতে বের হতাম। আর লেকের পাড়ের রাস্তা দিয়ে হাঁটলেই এক স্যার এর সাথে দেখা হত। এরপর ওই ফ্লাট ছেড়ে চলে এলাম হল এর গনরুম এ। আমার আবার মশারি না হলে ঘুম হয়না। ফ্লাট এ থাকতে সেফটিপিন দিয়েও মশারি টাঙ্গিয়েছি।

কিন্তু এখন পরলাম ভেঝালে। পুরো রুম এ ৫ সারি বিছানা। আমি রুম এর একপাশের জানালার ধারে। সুতারং অন্য পাশের কোনা বাঁধতে বিশাল দড়ি লাগালাম। এপাশ থেকে ওপাশের একটা দড়ি ছিল সেই পর্যন্ত।

এতেও ভেঝাল হল। আমি আগে মশারি নিলে ওইপাশের মেয়েদের টানাতে সমস্যা হয়ে যেত। কারন দড়ি আমার দিকে চলে আসত আর ওদের দড়ি খাটো হয়ে যেত। তার ফলে একদিন ঝগড়াও করলাম। এবারে একটা পচা ঘটনা।

আমার বর্তমান রুমমেট এবং ক্যাম্পাস লাইফ এর বেস্ট ফ্রেন্ড টি ঘুমের ওষুধ খাইল। যার ফলে আমার মেজাজ সপ্তমে উঠলো। কিন্তু রাত জাগলাম আমিই। পরদিন যখন ও একটু সুস্থ হইল আমার প্রথম কথা ছিল " খাইলি যখন শুধু ২ টা কেন? আমাদের বলতি, আমরা ও ২-৩ টা করে নিয়ে আসতাম। পুরাই শেষ হইতি।

" ওই প্রথম ভার্সিটির বন্ধুরা আমার রাগ দেখল। পরে আরও রাগ করছি বন্ধুদের উপর এইজাতীয় উল্টাপাল্টা কাজের জন্য। উল্টাপাল্টা কাজ নিজে করিনা আর পছন্দ ও করিনা। আর একদিনের পাগলামি। তখন ফুটবল বিশ্বকাপ চলে।

আমি আর আমার পাশের জন গল্প শুরু করলাম। খুব সম্ভবত আর্জেন্টিনার খেলা ছিল। (অন্য কোনও দলের খেলা হলে রাত জাগার প্লান ই করতাম না)। তো ভালো কথা খেলা দেখলাম। খেলা শেষ হয় কিন্তু আমাদের কথা আর শেষ হয়না।

কথা শেষ করে ৫.৩০ শুইতে আসলাম। তারপর ৮ টা পর্যন্ত ঘুম।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।