আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমাদের সংস্কৃতি জগতে পরিবারতন্ত্র ! - ৯

আগের পর্ব- Click This Link ড. মুহাম্মদ ইউনুস নোবেল পুরস্কার জিতে দেশের গৌরব কতোটা বাড়িয়েছেন সেটা বিদেশে না গেলে অনুভব করা যাবে না। ২০০৮ সালে ২১ দিন চীনে ছিলাম। এই একুশ দিনে চীনের ইংরেজী দৈনিকগুলোতে একবারই বাংলাদেশের কথা পড়েছি। সেটার উপলক্ষ ইউনুস। এক চীনা লেখিকা ইউনুসের আত্মজীবনী ''গরীবের ব্যাংকার'' চীনা ভাষায় অনুবাদ করেছেন।

বইটি নিয়ে আলোচনা আর অনুবাদকের সাক্ষাৎকার। এ ছাড়া মিডিয়ায় বাংলাদেশের কোন সংবাদ দেখিনি। তখন আমাদের সাথে ছয় মহাদেশের ৪৩টি দেশ থেকে ৭২ জন সেমিনারে গিয়েছিলেন। নেপাল আর পাকিস্তানের প্রতিনিধি ছাড়া কেউ বাংলাদেশ সম্পর্কে জানেন না। কিন্তু গ্রামীন ব্যাংক এবং ইউনুস সম্পর্কে অনেকেই দেখলাম উচ্ছ্বসিত।

মালয়েশিয়ার উন্নতির সুনাম বিশ্ব জুড়ে। সেই মালয়ীদের যখন ইউনুসের নোবেল প্রাইজের কথা বললাম তখন বললো এখানে তোমাদের চেয়ে আমরা পিছিয়ে আছি। ইউনুসের ভাই ড.মুহাম্মদ ইব্রাহীম টিভি উপস্থাপক, বিজ্ঞান সাময়িকী'র সম্পাদক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞানের অধ্যাপক। তাদের ছোট ভাই মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর সাংবাদিক ও টিভি উপস্থাপক। ইউনুসের প্রথম সংসারের কন্যা মনিকা সংগীত শিল্পী।

ড.শহীদুল্লাহর পর বহুভাষায় (১৬/১৭টি) পণ্ডিত ছিলেন ড.সৈয়দ মুজতবা আলী। (মজার বিষয় মুজতবা আলীর কাছে থেকে বগুড়া আজিজুল হক কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্ব নিয়েছিলেন ড.শহীদুল্লাহ) দুই বাংলায় লেখক হিসাবে মুজতবা আলীর খ্যাতি প্রবাদতুল্য। দুই বাংলা থেকেই তাঁর রচনাবলী প্রকাশিত হয়েছে। মুজতবা আলী যখন সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র তখনই রবীন্দ্রনাথকে চিঠি লিখে জানতে চেয়েছিলেন, আকাঙ্খা উচ্চ করিতে হয় কি প্রকারে ? রবীন্দ্রনাথ নীল খামে সে চিঠির জবাবও দিয়েছিলেন। পরে শান্তি নিকেতনে পড়তে যান তিনি।

তাঁর ভাই মুর্তজা আলী ছিলেন প্রশাসনের উচ্চ পদে কর্মরত। মুজতবা যখন বগুড়া আজিজুল হক কলেজের অধ্যক্ষ তখন তার ভাই মুর্তজা ছিলেন বগুড়ার জেলা প্রশাসক। তিনি ছিলেন একজন ভালো গদ্য লেখকও। আরেক ভাই মোস্তফা আলীও লেখক ছিলেন। এরা আলী ভ্রাতৃত্রয় নামে খ্যাত।

মোস্তফা আলীর ছেলে এম এম আলী ছিলেন ডন-এর সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার, হংকং স্টান্ডার্ড এবং ব্যাংকক টাইমসের (থাইল্যাণ্ড) নির্বাহী সম্পাদক। তিনি ডেইলী স্টারের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক। লেখক হিসেবেও তিনি ছিলেন উঁচু দরের। ডেইলী স্টার আমাদের ইংরেজী সাংবাদিকতার ধারাই বদলে দিয়েছিলো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজীর অধ্যাপক, বিটিভির ইংরেজী সংবাদ পাঠক ও লেখক ড.সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম মুজতবাদের ভাগ্নে।

তুষার গায়েন স্থপতি ও কবি। তার ভাই তাপস গায়েন কবি। দুজনেই এখন দূর প্রবাসে। তাদের বোন ড.কৃষ্ণা গায়েন সরকারের উপসচিব। আরেক বোন ড. কাবেরী গায়েন লেখক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক।

আরেক বোন অদিতি ফাল্গুনী লেখক ও কবি। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অন্যতম আকর্ষন ছিলো চরম পত্র। চরম পত্রের লেখন ও উপস্থাপক ছিলেন মোহাম্মদ রওশন আকতার ওরফে এম আর আকতার মুকুল। তিনি পরে এক জন লেখক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। তার সাগর পাবলিশার্স বেইলী রোডের অন্যতম আকর্ষন।

তার ভাই মোস্তফা নূরুল ইসলাম সম্প্রতি জাতীয় অধ্যাপক হয়েছেন। মননশীল লেখক, গবেষক, সম্পাদক ও উপস্থাপক হিসাবে তিনি দারুন প্রিয় মানুষ। আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের বাবা বি এম ইলিয়াস ছিলেন মুসলিম লীগের নেতা এবং পাকিস্তান সরকারের মন্ত্রী। অথচ ইলিয়াস পাঁড় বাম। তার চিলে কোঠার সেপাই বা খোয়াব নামা বহুল পঠিত উপন্যাস।

তার ভাই খালেকুজ্জামান ইলিয়াস লেখক ও অধ্যাপক। অধ্যাপক মাজহারুল ইসলাম বিশিষ্ট ফোকলোর বিশেষজ্ঞ, লেখক ও গবেষক। ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। তার ভাই অধ্যাপক আবদুল খালেকও ফোকলোর বিশেষজ্ঞ ও লেখক। তিনিও ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য।

মাজহারুল ইসলামের ছেলে চয়ন ইসলাম রাজনীতিবিদ ও রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী। (চলবে) পরের পর্ব- Click This Link ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.