আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হলুদ শাড়িতে নীল সূর্যের আলো..

লেখালেখিই হোক আমার জীবন... . হাঁটতে হাঁটতে দুটি পা ক্লান্ত হয়ে গেছে। কতদূর থেকে হেঁটে আসতে হল। প্রায় ৩ মাইল!! যখন দরকার তখন একটি রিকশাও পাওয়া যায়না। আর অপেক্ষা ভাল লাগেনা। তাই ক্লান্ত পায়ে আবার হাঁটা।

বাড়ির কাছাকাছি আসতেই অর্পর সকল ক্লান্তি দূর হয়ে গেল নিমিষেই। চোখে চোখ পরে গেল মনের মানুষের। কতদিন যাবত ভাবছে মুগ্ধতাকে নিয়ে। সত্যি ওকে দেখলে মুগ্ধ না হয়ে পারা যায়না। আল্লাহর সৃস্টি কত অপুর্ব।

শিউলি গাছের নিচে বসে দক্ষিনা হাওয়ায় প্রানটা একটু জুঁড়িয়ে নেয়। দুপুরের রোদ, এতদূর হাঁটার ক্লান্তিও ছাপ ফেলতে পারেনি মনে(শুধুমাত্র মুগ্ধতাকে দেখার পর থেকে)। কিছুক্ষন পরে বাসায় চলে যায় দু’জনেই। দুপুরের খাবার খেয়ে সোফায় বসে টিভিতে একটি ভালবাসার নাটক দেখতে বসে, ‘আমি বাসি তুমি বাসো তো’। ভালবাসার তথ্যবহুল আনন্দদায়ক নাটক।

নাটক দেখতে দেখতে মুহুর্তেই নিজের ভালবাসার কল্পনায় বিভোর হয়ে পরে অর্প। এতদূর হেঁটে আসার ফলে ঘুম এসে যায় চোখে। নিজের রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে বিছানায় শুয়ে শুয়ে কল্পনা করতে থাকে প্রেয়সীর মায়াবী সেই চোখ। ঘুমের দেশে হারিয়ে যায় নিমিষেই। মনে হয় কতদিন ঘুমায়নি।

হঠাত মুগ্ধকে দেখতে পায় অর্প। স্বপ্নের সেই হলুদ শাড়িতে আকাশি রঙের পাড়। এইতো ১৬ই ডিসেম্বর এমন একটি শাড়িই মুগ্ধতার জন্য কিনতে চেয়েছিল। কিন্তু যাকে এখন পর্যন্ত ভালবাসার কথাটাই মুখ ফুটে বলা হয়নি তাকে আবার শাড়ি দেওয়া!! তবু আগামি ২১ ফেব্রুয়ারির কথা মনে করে কস্ট করে কিছু টাকা জমানো শুরু করে। আর নিয়মিত ডায়েরি লেখা শুরু করে।

মনের কত কথা, কত কবিতা............!! মুগ্ধতাকে দেখে সত্যি মুগ্ধ হয়ে যায় অর্প। মুগ্ধতাও মিশুক হেসে ইশারায় অর্পকে কাছে ডাকে। বলে, “দেখ আমি তোমার জন্য কত সুন্দর করে সেঁজে এসেছি, তোমার পছন্দের শাড়ি পরেছি। তুমি আমায় কাছে ডাকবেনা?” অর্প নিজেকে নিয়ন্ত্রন করতে পারেনা। মুগ্ধতার কাছে ছুটে যায়।

বিকেল শেষ হয়ে প্রায় গোধুলি আসে। কিন্তু অর্পর ঘুম ভাঙ্গেনা। এমন সময় মুগ্ধতা অর্পদের বাসায় আসে। হাতে অর্পর পছন্দের রজনিগন্ধা ফুল। অর্পের রুমের কাছে গিয়ে দরজার নিচ দিয়ে ভিতরে রেখে আসে।

এরপর বাসার ভিতরে যায়। অর্পকে না দেখে আন্টিকে জিজ্ঞাসা করে ‘অর্প কোথায়?’ অর্পর মা বলে,‘কেন খেলতে গেছে!’ তাহলে অর্পর রুমে কে? কই রুমে কেউতো নাই। তাহলে দরজা ভিতর থেকে বন্ধ কেন? তাই নাকি? কই চলতো দেখি। মুগ্ধতা আর অর্পর মা দরজার সামনে গিয়ে দরজা ধাক্কায়। কিন্তু কেউ দরজা খোলেনা অর্পর বাবাকে ডেকে দরজা ভাঙা হল।

এরপর শুধুমাত্র একটি চিতকার। সব স্তব্ধ। তখন সন্ধ্যা নেমেছে প্রায়। গোধুলির রঙ তখন হলুদ হতে শুরু করেছে। অর্পর খুব প্রিয়।

সব আছে শুধু অর্প বাদে। যখন মুগ্ধতাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখছিল তখন ঘুমের মধ্যে দরজা খুলতে গিয়ে বৈদ্যুতিক শক খেয়ে তখনই মৃত্যু হয় তার। পায়ের কাছে যে বৈদ্যুতিক তার ছিল সেটিতো আর ঘুমের মধ্যে মনে থাকেনা। তাই থেমে গেছে স্বপ্ন, থেমে গেছে মুগ্ধতাকে দেখা, মুগ্ধ হয়ে তার হাসি দেখা, ভাষা হারিয়েছে মনের গোপন সেই কথাটি বলার। ও, হ্যাঁ বিছানায় শুয়ে শুয়ে অর্প মুগ্ধতাকে দেখে মুগ্ধ হওয়ার কথাই লিখছিল।

শেষ কথাগুলো ছিল---মূগ্ধতা তোমাকে দেখেই আমি মুগ্ধ আমি। তোমার হাসি আমাকে পাগল করে দেয়। আমার অপেক্ষার পালা এবার শেষ। আমি এবার তোমাকে আমার মনের কথাটি কবলে ফেলবো। হলুদ শাড়ির আর আকাশি রঙের পাড়ে তুমি আসবে আমার দরজায়।

আর তোমাকে দেখে মুগ্ধ এই আমি......... সূর্যটা ততক্ষনে নীল বর্ণের হয়ে গেছে, আর দিগন্তটাও হলুদাভ....। । বিদ্রঃ বৈদ্যুতিক মালামাল, যন্ত্রপাতি থেকে নিজেকে যতটা সম্ভব দূরে রাখুন। নইলে অনেক কিছুই ঘটতে পারে যা কল্পনাতীত। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।