সবটাই চাই। তুমি নয় খানিকটাই দিও,তাও না পারো তো-কিছুই চাইনা। তবুও সবটাই চাইতে চাই। চাইতে দিও.. জাহান্নাম অতান্ত খারাপ অবস্থান স্থল,অতান্ত খারাপ আবাস,অতান্ত খারাপ ঠিকানা । যা আল্লাহ কাফের,মোশরেক,ফাসেক,ফাজেরদের জন্য নিরমান করে রেখেছে ।
আল্লাহ কোরআন মাজিদে জান্নাত ও জাহান্নাম উভয়ের ব্যাপারেই বিস্তারিত বণনা করেছেন । তবে তুলনামুলক ভাবে জাহান্নাম ও তার শাস্তির কথা বেশি বর্ণিত হয়েছে ,হয়তবা এর কারন এও হতে পারে যে অধিকাংশ মানুষ উৎসাহের চাইতে ভয়ের মাধ্যমে বেশি প্রতিক্রিয়শিল হয় । এ ব্যাপারে আল্লাহই ভাল জানেন ।
জাহান্নাম সম্পর্কে কোরআনে উল্লেখিত কিছু কিছু বণর্নাঃ
১,জাহান্নাম দেখামাএই কাফেরদের চেহারা কালো হয়ে যাবে । সুরা এউনুস-২৭
২,জাহান্নামি শাস্তিতে অস্তির হয়ে মৃত্যু কামনা করবে,কিন্তু তাদের মৃত্যু হবেনা সুরা ফুরকান-১৩
৩,জাহান্নামের আগুন জাহান্নামিদের চেহারার গোসতো বিদগ্ধ করবে এবং তাদের জিহবা বের হয়ে আসবে।
৪,অতপর সে সেখানে (জাহান্নামে) মরবেও না বাচঁবেও না । সুরা আল-১৩
৫,জাহান্নামের আগুন মানুষের হৃদয়কে গ্রাস করবে
৬,জাহান্নাম তার অধিবাসিদেরকে পরিবেষ্টন করে রাখবে ।
৭,জাহান্নামে থাকবে তার অধিবাসিদের আতর্নাদ,ফলে তারা কিছুই শুন্তে পাবেনা । সুরা আম্মিয়া-১০০
৮,জাহান্নামিদেরকে খাবার হিসাবে দেয়া হবে কাটাদার যাক্কুম বৃক্ষ এবং দুর্গন্ধময় বৃক্ষের খাদ্য । সুরা দুখান-৪৩
৯,জাহান্নামিদের শরীর থেকে নির্গত রক্ত এবং কাশি ও গরম পানি হবে তাদের পানিয় ।
সুরা ইব্রাহিম-১৬,১৭
১০,জাহান্নামিদেরকে আগুনের পোশাক পরানো হবে ।
১১জাহান্নামিদের হাত ও পা শৃংখলিত করা হবে, আর অগ্নি আচ্ছন করবে তাদের মুখমন্ডল । সুরা ইব্রাহিম-৪০,৫০
১২,জাহান্নামিদের জন্য থাকবে আগুনের উড়না ও বিছানা । সুরা আরাফ
১৩,জাহান্নামিদের জন্য থাকবে আগুনের ছাতি ও আগুনের কার্পেট । সুরা যুমার-১৬
১৪,জাহান্নামিদের জন্য আগুনের পানীয় ।
সুরা কাহফ-২৯
১৫,জাহান্নামিদের গলদেশে থাকবে আগুনের বেড়ি । সুরা হাক্কা-৩০
১৬,জাহান্নামিদের পায়ে থাকবে ভারী বেড়ি । সুরা মুযযাম্মিল-১২
১৭,জাহান্নামিদেরকে বিষাক্ত গরম হাওয়া ও বিষাক্ত গরম ধুয়া দিয়ে আযাব দেয়া হবে । সুরা ওয়াকিয়া-৪১,৪৪
১৮,জাহান্নামিদেরকে উপুড় করে টনে নিয়ে যাওয়া হবে জাহান্নামে । সুরা কামার-৪৮
১৯,জাহান্নামিদেরকে "সাউদ"নামক আগুনের পাহাড়ে চড়ানোর মাধ্যমে শাস্তি দেয়া হবে ।
সুরা মুদ্দাসসসির-১৭
২০,জাহান্নামিদেরকে লোহার হাতুরি ও গুর্জদিয়ে আঘাত করা হবে । সুরা হাজ্জ-২১
নোটঃ উপরে উল্লেখিত আয়াত সমূহ হুবহু আয়াতের তরজমা দেয়া হয়নি,বরং তার ভাবর্থ পেশ করা হয়েছে
জাহান্নাম সম্পর্কে কিছু হাদিসের উদ্ধৃতি নিন্ম রূপঃ
১,জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত একটি পাথর সওর বছর পর তার নিন্মস্তরে গিয়ে পৌছয়াবে । মুসলিম
২,জাহান্নামের একটি ঘেরাউয়ের দুটি দেয়ালের মাঝে চল্লিস বছরের রাস্তার দূরত্ব । (আবু ইয়ালা )
৩,জাহান্নামকে হাশরের মাঠে আনতে চারশ নব্বই কোটি ফেরেশতা
লাকবে । ( মুসলিম)
৪,জাহান্নামের সবচেয়ে হালকা শাস্তি হবে এই যে, আগুনের একজোড়া সেন্ডল পরিয়ে দেয়া হবে, যার ফলে জাহান্নামীর মস্তিষ্ক গলে গলে পড়তে থাকবে ।
মুসলিম
৫,জাহান্নামির একটি দাঁত উহুদ পাহাড়ের চেয়েও বড় হবে । মুসলিম
৬,জাহান্নামির দুকাধের মাঝে কোন দ্রুতগামী আশ্বারোহির তিন দিন চলার পথ দূ্রত্ব হবে । মুসলিম
৭,জাহান্নামির শরীরের চামড়া ৬৩ ফিট মোটা হবে । তিরমিযী
৮,পৃথিবীতে অহংকার কারীদেরকে ঠোট বরাবর শরীর দেয়া হবে । তিরমিযী
৯,জাহান্নামি এত অশ্রু প্রবাহিত করবে, যে তাতে অনায়েসে নৌকা চলতে পারবে ।
(মোস্তাদরাক হাকেম )
১০,জাহান্নামিদেরকে পরিবেশনকৃত খাবারের এক টুকরা পৃথিববীতে নিক্ষেপ করা হলে ,সমগ্র পৃথিবীর প্রানিমূহের জীবন যাপনের ব্যবস্তাপনা নষ্ট হয়ে যাবে । (আহমদ,তিরমিযী,নাসায়ী,ইবনে মাজা )
১১,জাহাননামিদের পানীয় থেকে কয়েক লিটার পৃথিবীতে নিক্ষেপ করা হলে ,তার দুরগন্ধ সমগ্র পৃথিবীর সৃস্টি জীবের নিকট ছড়িয়ে যাবে । (আবু ইয়ালা
১২,জাহান্নামির মাথার উপর এ পরিমান গরম পানি ডালা হবে ,যা তার মাথা ছিদ্র করে পিট দিয়ে বের হয়ে পায়ে গিয়ে পড়বে । (আহামদ)
১৩,কাফেরকে জাহান্নামে এত কঠিনভাবে আঘাত করা হবে যেমন বর্শার ফলাকে তার হাতলে মজবুতভাবে লাগানো হয় ।
১৪,জাহান্নামের আগুন গাড় কালো বর্নের ।
(মালেক)
১৫,জাহান্নামিদের সউদ নামক আগুনের পাহাড়ে আরোহন করতে সত্তর বছর সময় লাগবে । আবার যখন তারা সেখান থেকে অবতরন করবে তখন তাদেরকে আবার সেখানে আরোহন করতে বলা হবে । (আবু ইয়ালা)
১৬,জাহান্নামিদেরকে শাস্তি দেওয়ার জন্য আগুনের গুর্জ এত ভারি হবে যে জিন ও ইনসান মিলে তাকে উঠাতে চাইলেও উঠাতে পারবে না । (আবু ইয়ালা)
১৭,জাহান্নামের সাপ উটের সমান হবে আর তা এক বার ধংশন করলে ,চল্লিশ বছর পর্যন্ত জাহান্নামী তার ব্যাথা অনুভব করবে । (আহমদ)
১৮,জাহাননামের বিচ্ছু খচ্চরের সমান হবে ,তার ধ্বংশনের ব্যাথা কাফের চাল্লিশ বছর পর্যন্ত অনুভব করতে থাকবে ।
(আহমদ)
১৯,জাহান্নামিদেরকে জাহান্নামে উপুড় করে হাটানো হবে । (মুসলিম)
২০,জাহান্নামিদেরকে শাস্তি দেয়ার জন্য জাহান্নামের দরজায় চার লাখ ফেরেশতা থাকবে ,যাদের চেহারা অতান্ত ভয়ানক ও কালো হবে । তাদের দাতগুলো বাহিরে বেরিয়ে থাকবে, আর তারা হবে অত্যন্ত নির্দয় , আর তাদের শরীর এত বিশাল হবে ,যে কোন প্রানির তা অতিক্রম করতে দুমাস সময় লাগবে । (এবনে কাসির
এ হলো অত্যন্ত বেদনাদায়ক ব্যাথাতুর শাস্তির স্থান যাকে কোরআন ও হাদেসে জাহান্নাম বলে উল্লেখ করা হয়েছে , আল্লাহ তালা আমাদের মাঝের সমস্ত মুসলমানকে স্বীয় দয়া ও অনুগ্রহের মাধ্যমে তা থেকে হেফাজত করে,তিনি অত্যন্ত দয়ালু ও ক্ষমাশীল । তিনি যা চান তা করতে তিনি সক্ষম
বইঃ তাফহীমুস্সুন্না সিরিজ-১৫।
জাহান্নামের বর্ণনা ।
মূলঃ মুহাম্মদ ইকবাল কীলানি
ভাষান্তরঃ আবদুল্লাহিল হাদি মু ইউসুফ । ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।