"অবশ্যই আমার নামাজ আমার এবাদাত আমার জীবন আমার মৃত্যু সবকিছুই সৃষ্টিকুলের মালিক আল্লাহর জন্যে। "
জাহান্নাম কাকে আহবান করবে?
বলা হচ্ছে,
(সেদিন) সে (আগুন) এমন সব লোকদের (নিজের দিকে) ডাকবে, যারা (দুনিয়ার জীবনে অনীহা দেখিয়ে তা থেকে) ফিরে গিয়েছিলো এবং পৃষ্ঠ প্রদর্শন করেছিলো, (যারা দুনিয়ার জীবনে বিপুল) ধনরাশি জমা করে তা একান্তভাবে আগলে রেখেছিলো। (সূরা আল মায়া'রিজঃ আয়াত ১৭-১৮)
তাফসীরে ইবনে কাসীরে এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, বন্য প্রাণী যেমনিভাবে তার খাদ্য অনুসন্ধান করে নেয় ঠিক তেমনিভাবে জাহান্নাম হাশরের ময়দান থেকে দুষ্ট লোকদেরকে এক এক করে খুঁজে নেবে।
অবশ্য অন্য হাদীসে আছে, সেদিন জাহান্নামের সত্তর হাজার লাগাম থাকবে এবং প্রতিটি লাগাম ৭০ হাজার করে ফেরেশতা ধরে রাখবে। (মুসলিম)
অন্য রিওয়ায়েতে অতিরিক্ত আছে যে, আলাহ্ না করুন, যদি সে সময় ফেরেশতাগণ লাগাম ছেড়ে দেয় তবে সে প্রত্যেক ব্যক্তিকে তার থাবায় টেনে নেবে।
চাই সে সৎ হোক কিংবা অসৎ হোক। (তারগীব ওয়া তারহীব)
জাহান্নামীদেরকে গ্রাস করে জাহান্নাম তৃপ্ত হবে না
ইরশাদ হচ্ছে,
সেদিন আমি জাহান্নামকে (লক্ষ্য করে বলবো, তুমি কি পূর্ণ হয়ে গেছো? জাহান্নাম বলবে, (হে মালিক, এখানে আসার মতো) আরো কেউ আছে কি? (সূরা ক্বাফঃ আয়াত ৩০)
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
জাহান্নামে জাহান্নামীদেরকে অনবরত ফেলা হবে। আর জাহান্নাম বলতে থাকবে, আরো আছে কি? সমস্ত জাহান্নামীদেরকে নিক্ষেপ করার পরও জাহান্নাম পরিতৃপ্ত হবে না। তখন আলাহ তা'আলা জাহান্নামের মধ্যে তাঁর কুদরতী কদম রাখবেন। ফলে জাহান্নাম সংকুচিত হয়ে যাবে।
আর বলতে থাকবে, ব্যস, ব্যস ! আপনার ইজ্জত ও অনুগ্রহের শপথ করে বলছি। আমার আর প্রয়োজন নেই। (বুখারী, মুসলিম)
জাহান্নামীরা ভয়াবহ আজাবের সম্মুখীন হবে
(এ সময় জাহান্নামের প্রহরীদের প্রতি আদেশ আসবে, যাও) তোমরা তাকে পাকড়াও করো, এরপর তার গলায় শেকল পরিয়ে দাও, অতঃপর জাহান্নামের (জ্বলন্ত) আগুনে তাকে প্রবেশ করাও, এবং তাকে সত্তর গজ শেকল দিয়ে বেঁধে ফেলো; কেননা, সে কখনো মহান আল্লাহর ওপর বিশ্বাস স্থাপন করেনি, সে কখনো দুস্থ অসহায় লোকদের খাবার দেয়ার জন্যে (অন্যদের) উৎসাহ দেয়নি; (আর এ কারণেই) আজকের দিনে তার (প্রতি দয়া দেখানোর) কোনো বন্ধু নেই, (সূরা আল হাক্কাহঃ আয়াত ৩০-৩৫)
সূরা আল মোরসালাতে বলা হয়েছে,
চলো সেই ধূম্রপুঞ্জের ছায়ার দিকে, যার রয়েছে তিনটি (ভয়ংকর) শাখা প্রশাখা, এ ছায়া কিন্তু সুনিবিড় কিছু নয়, এটা (তাকে) আগুনের লেলিহান শিখা থেকে বাঁচাতেও পারবে না; (বরং) তা বৃহৎ প্রাসাদতুল্য আগুনের স্ফুলিংগ নিক্ষেপ করতে থাকবে, (মনে হবে) যেন হলুদ বর্ণের (কতিপয়) উটের পাল; (সূরা আল মোরসালাতঃ আয়াত ৩০-৩৩)
অন্যত্র বলা হয়েছে,
যেদিন ওদের গলদেশে (আযাবের) বেড়ি ও শেকল (পরিবেষ্টিত) থাকবে, (সেদিন) তাদের টেনে হেঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হবে, ফুটন্ত পানিতে, অতঃপর তাদের আগুনেও দগ্ধীভূত করা হবে, (সূরা আল মোমেনঃ আয়াত ৭১-৭২)
... বিদ্রোহী পাপীদের জন্যে থাকবে নিকৃষ্টতম ঠিকানা, জাহান্নাম - যেখানে তারা গিয়ে প্রবেশ করবে, কতো নিকৃষ্ট নিবাস এটি ! এ হচ্ছে (তাদের পরিণাম,) অতএব তারা তা আস্বাদন করুক, (আস্বাদন করুক) ফুটন্ত পানি ও পুঁজ, (তাদের জন্যে রয়েছে) এ ধরনের আরো (বীভৎস) শাস্তি; (সূরা সোয়াদঃ আয়াত ৫৫-৫৮)
... তাদের (পরিধান করানোর) জন্যে আগুনের পোশাক কেটে রাখা হয়েছে; শুধু তাই নয়, তাদের মাথার ওপর সেদিন প্রচন্ড গরম পানি ঢেলে দেয়া হবে, তার ফলে যা কিছু তাদের পেটের ভেতর আছে তা সব এবং চামড়াগুলো গলে যাবে; তাদের (শাস্তির) জন্যে সেখানে আরো থাকবে (বড়ো বড়ো) লোহার গদা। যখনই তারা (দোযখের) তীব্র যন্ত্রণায় (অস্থির হয়ে) তা থেকে বেরিয়ে আসতে চাইবে, তখনই তাদের পুনরায় (ধাক্কা দিয়ে) তাতে ঠেলে দেয়া হবে, (বলা হবে), জ্বলনের প্রচন্ড যন্ত্রণা আজ তোমরা আস্বাদন করো ... (সূরা আল হজ্জঃ আয়াত ১৯-২২)
তবে অপরাধের পরিমাণ অনুযায়ী তাদেরকে সেখানে শাস্তি দেয়া হবে। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
জাহান্নামীদের মধ্যে এমন কিছু লোক থাকবে, আগুন যাদেরকে টাখনু পর্যন্ত স্পর্শ করবে।
আবার কিছু লোক থাকবে, আগুন যাদের হাটু পর্যন্ত স্পর্শ করবে। আবার কারো কারো কোমর পর্যন্ত স্পর্শ করবে। কিছু লোক এমনও থাকবে আগুন যাদেরকে কন্ঠনালী পর্যন্ত পুড়াবে। (মুসলিম)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।