আগের পর্ব-
Click This Link
পাবনা শহরে সমালোচনার ঢেউটা ক্রমেই বাড়তে লাগলো। একটা সোমত্ত মেয়ে রাস্তায় সবার সাথে সাইকেল চালায় ! সমাধান এক সময় হলো সেটা সাইকেল চালানো বন্ধ করে নয়, কলকাতা চলে গিয়ে। এই দস্যি মেয়েটির নাম সুচিত্রা সেন। বাংলা চলচলচ্চিত্রের চিরকালীন স্বপ্ন নায়িকা। তার ডাক নাম ছিলো রমা।
বিয়ে হয়েছিলো দিবানাথ সেনের সাথে। দিবানাথের ঠাকুর দাদা দীন নাথ সেন-এর নামে পুরনো ঢাকার একটি রাস্তার নাম এখনো বিদ্যমান। সুচিত্রার সিনেমায় যাবার ঘটনাটিও নাটকীয়। টালি গঞ্জে গিয়েছিলেন এক দাদার হয়ে ওকালতি করতে যাতে তাকে একটা চান্স দেয়া হয়। চান্স মিলে গেলো তার নিজেরই।
শুরুটা যে খুব রমরমা হয়েছিলো তা না। তবে উত্তমের সাথে জুটিটা জমে যাবার পর যা হয়েছে সেটা ঘটনা না রীতিমতো কিংবদন্তী। তবে বিস্ময়করভাবে বলিউডে একাধিকবার চেষ্টা করেও ঠাঁই করে নিতে পানেনি সুচিত্রা। ঋত্বিক বা সত্যজিৎ ঘরানায়ও তিনি নেই। কিন্তু চিরকালের জন্য আছেন কোটি ভক্তের অন্তরে।
তাঁর কন্যা মুনমুন সেন আর নাতনী রিয়া ও রাইমা সেন। অভিনয় জগতে তিন প্রজন্মের পরম্পরা। যে বলিউড নানীর দিকে মুখ তোলেনি সে বলিউড নাতনীদের কিন্তু ফেরাতে পারেনি।
ফিরে আসি ঢাকার সিনেমায়। ঢাকার প্রথম ছবি মুখ ও মুখোশের নায়িকা ছিলেন পূর্নিমা সেনগুপ্তা।
তাঁর কন্যা নাসরীনও ঢাকার ছবিতে কিছুদিন জনপ্রিয় নায়িকা ছিলেন। তার বর জসীম ছিলেন আমাদের চলচ্চিত্রের প্রথম প্রজন্মের একশন হিরো। জসীমের প্রথম স্ত্রী সুচরিতাও এক কালের নামী নায়িকা। জসীমের জ্যাম্বস গ্রুপ ছবিতে একশনের বিষয়গুলো পরিচালনা করতো। জ্যাম্বসের শুরু জসীম দিয়ে শেষ সুচরিতা দিয়ে।
আমাদের সিনেমার নায়ক রাজ রাজ্জাক। তার পুত্র বাপ্পারাজও অনেক মুভিতে নায়ক হয়েছেন।
সোহেল রানা অভিনয় করতেন। পরিচালনার সময় সোহেল রানা হয়ে যেতেন মাসুদ পারভেজ। তার ভাই রুবেল বহু সিনেমার একশন হিরো।
আরেক ভাই কামাল পারভেজ ছিলেন প্রযোজক। বীরপুরুষ নামের একটি সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন। অভিনেত্রী তানিয়া আহমেদ সোহেল রানার ভাগ্নী। তানিয়ার বর গায়ক ও যন্ত্রশিল্পী এস আই টুটুল।
আমজাদ হোসেন চলচ্চিত্রের সব্যসাচী ব্যক্তিত্ব।
জহির রায়হানের বিখ্যাত মুভি জীবন থেকে নেয়া'র কাহিনীকার আমজাদ হোসেন। সেই ছবিতে আমজাদ অভিনয়ও করেছেন। নিজে পরিচালনা করেছেন অনেক বিখ্যাত ছবি। তিনি নিজের সিনেমার জন্য দারুন জনপ্রিয় অনেকগুলো গানও লিখেছেন। অভিনয় করেন টিভিতে।
টিভি নাট্যকারও। তার ছেলেরাও (সোহেল আরমান, দোদুল) অভিনেতা, নাট্য নির্দেশক। তার ছেলে সোহেল আরমান এক সময় বিয়ে করেছিলেন জনপ্রিয় তারকা তারিনকে।
চলচ্চিত্র জগতের জনপ্রিয় নায়ক সুব্রত আর নায়িকা দোয়েল সংসার পাতলেন। তাদের দুজনের মিলিত জনপ্রিয়তাকে গ্রামীণ ফোনের একটি বিজ্ঞাপন করেই অতিক্রম করে গেছে তাদের কন্যা দীঘি।
কাজী হায়াত আমাদের বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক। তার ছেলে মারুফ এখনকার জনপ্রিয় নায়কদের একজন।
অমলেন্দু বিশ্বাস জ্যোৎস্না বিশ্বাস দম্পতি আমাদের যাত্রা জগতের সম্রাট আর সম্রাজ্ঞী। তাদের কন্যা অরুনা বিশ্বাস চলচ্চিত্র ও টিভি নাটকে অভিনয় করছেন অনেকদিন ধরে। অরুনার ভ্রাতৃবধু মৌটুসী বিশ্বাস এখনকার জনপ্রিয় মডেল ও টিভি নাটকের অভিনেত্রী।
ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায় শর্মিলা বন্দ্যোপাধ্যায় দম্পতি আবৃতি নাটক উপস্থাপনাসহ নানা আঙ্গিকে সক্রিয় আছেন বহুদিন। সম্প্রতি তাদের কন্যা তাথৈ মনের মানুষ মুভিতে অভিনয় করে মাত করে দিয়েছেন।
সাহিত্যিক শিক্ষাবিদ ড.আলা উদ্দিন আল আজাদ। তার কন্যা নায়লা আজাদ নূপুর চলচ্চিত্র ও নাটকে অভিনয় করেন। খুব উঁচু দরের নৃত্যশিল্পীও তিনি।
এখন অবশ্য প্রবাসে। ২০০২ সালে ঢাকার এক অনুষ্ঠানে এক তরুণীকে দেখে বললাম আপনাকে দেখতে নায়লা আজাদ নূপুরের মতো লাগছে। হেসে দিয়ে বললেন, আমি নূপুর। বিস্মিত হয়ে বললাম এই বয়সেও এমন সুন্দর আছেন কি করে ? মুচকি হেসে জবাব এড়িয়ে গেলেন। প্রায় পঞ্চাশ ছোঁয়া কাউকে তিরিশ বছরের তরুনীর মতো লাগে কিভাবে !
(চলবে)
পরের পর্ব-
Click This Link ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।