মাতুয়াইলে সামাজিকতা পালনের বাহার
প্রার্থীর দূরসম্পর্কের নাতির জন্মদিনেও ৭ দিন খানাপিনা
নিয়াজ মোর্শেদ
মাতুয়াইলে ভোট উপলক্ষে সামাজিকতা পালনের বাহার লেগেছে। ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণে চলছে নানা আয়োজন। টাকা খরচ হচ্ছে দেদার। টাকা খরচের পথ বের করতে নিত্যনতুন কৌশল অবলম্বন করা হচ্ছে। যেমন_ কেউ ছেলে পাতাচ্ছেন।
এরপর তার বিয়ের ঘোষণা দিয়ে সাত দিন ধরে চলছে ভূরিভোজ। কেউ দূরসম্পর্কের নাতির জন্মদিনের কথা বলেও সাত দিন ধরে গণভোজের আয়োজন করছেন। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে রাজনৈতিক দলের প্রয়াত নেতাদের শাহাদাতবার্ষিকীর আয়োজন। নির্বাচন উপলক্ষে এখানে চেয়ারম্যান প্রার্থীরা শুরু করেছেন টাকার খেলা। নিজ এলাকার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে বশে রাখা, কর্মী সংগ্রহ, ভোটারদের প্রভাবিত করাসহ প্রভাবশালীদের হাতে রাখতে প্রার্থীরা চোখ বন্ধ করে টাকা ঢালছেন।
অভিযোগ উঠেছে, ১৩ প্রার্থীর মধ্যে আটজনই টাকার খেলায় মেতেছেন। তাদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পেরে উঠছেন না অন্য প্রার্থীরা।
একাধিক প্রার্থী অভিযোগ করেন, বিএনপি প্রার্থী সানাউল্লাহ রাজনৈতিক কর্মসূচি সামনে রেখে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের জন্য প্রতিদিন ভূরিভোজের ব্যবস্থা করছেন। শফিকুল ইসলাম দিলু দূরসম্পর্কের নাতির জন্মদিন উপলক্ষে বাড়িতে সপ্তাহব্যাপী খানাপিনার
আয়োজন করেছেন। বর্তমান চেয়ারম্যান পনির পাতানো ছেলের বিয়ে দিচ্ছেন_ এমন খবর রটিয়ে প্রতিদিন ভূরিভোজ করাচ্ছেন।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, প্রচারে এলাকার যুবক শ্রেণীর চাহিদা সব থেকে বেশি। প্রচারকাজে বের হলে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মিলছে সাড়ে তিনশ' থেকে চারশ' টাকা। একটু পড়াশোনা জানলে টাকার অঙ্ক বেড়ে হচ্ছে সাড়ে পাঁচশ' টাকা পর্যন্ত। সঙ্গে সকাল ও বিকেলের নাস্তা ফ্রি। (আপনি নিজে নেমে যান এর চেয়ে বেশি কামাতে পারবেন যেভাবে বর্ণনা দিলেন তাতে মনে হচ্ছে আপনাকে টাকা দিয়ে লিখান হয়েছে)বেশ কয়েকজন প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রচারে মাদকসেবীদের ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে।
রায়েরবাগে কথা হয় রিকশাচালক হাশেমের সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রতিদিন একশ' টাকার বিনিময়ে সন্ধ্যায় নির্বাচনী মিছিলে অংশ নেওয়ার জন্য তাকে বলা হয়েছে। সকালে রিকশা চালিয়ে সন্ধ্যায় মিছিলে যোগ দেন তিনি। এলাকার ডেকোরেটর ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, একেকজন প্রার্থী প্রতিদিন দুপুর ২টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ব্যবহারের জন্য তিন থেকে চারটি মাইক ভাড়া নিলেও বিল হচ্ছে একটির।
এ ইউনিয়নে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন দেলোয়ার হোসেন, নূরুল আমিন নূরুল, আমিরুল ইসলাম, শফিকুল ইসলাম খান, জাহিদুল ইসলাম, শফিকুল ইসলাম, মোঃ মর্তুজা আলম, উজ্জ্বল মামুন খান, মোঃ সানাউল্লাহ, মোঃ নাসির উদ্দিন, আবদুল আলীম মিয়া, আবদুস সবুর, আবদুল মতিন মিয়া এবং আবদুর রহমান।
এলাকাবাসী জানান, আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী নাসিরউদ্দিন এলাকায় ভূমিদস্যু হিসেবে পরিচিত (এই লিখাটা হাবিবুর রাহমান মোল্লার সহায়তাই লিখানও হয়েছে এবং নাসিরউদ্দিন আওয়ামী সমরথিত নয়। তার বাবা ছিলেন জাতীয় পার্টি র এক্স চেয়ারম্যান। ঢাকা- ৫ এর সংসদ সদস্য হাবিবুর রাহমান মোল্লা চায়না তার কোন প্রতিতদন্দি থাকুক। যেই কারনে সে নাসিরউদ্দিন কে সহায়তা করছে) সম্প্রতি ৫ নম্বর ওয়ার্ডে একজন কানুনগোর জায়গা দখল করেছেন। বিএনপি নেতা নবীউল্লাহ নবীর সমর্থন নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন শফিকুল ইসলাম পনির।
বিভিন্ন কারণে তিনি এলাকায় বিতর্কিত। বিএনপির সাবেক সাংসদ সালাহউদ্দিন আহমদ সমর্থিত প্রার্থী সানাউল্লাহ এলাকায় মাদক ব্যবসা করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। আবদুল আলীম মিয়া মনোনয়ন ফরমে নাসিরউদ্দিন নামে এক যুবকের মোবাইল ফোন নম্বর উল্লেখ করেছেন। কারণ হিসেবে জানা যায়, ফোনে তিনি কথা বলতে পছন্দ করেন না। মর্তুজা আলম ডামি প্রার্থী।
আওয়ামী লীগ সমর্থিত শফিকুল ইসলাম দিলুর বিরুদ্ধে এলাকায় জায়গা দখলে সহায়তা ও সন্ত্রাসীদের লালন করার অভিযোগ আছে। এসব অভিযোগ সম্পর্কে অবশ্য কোনো কথা বলতে চাননি তিনি। পাল্টা অন্য প্রার্থীদের ব্যাপারে নানা অভিযোগ করেন। ( এই এলাকায় যদি কেউ নিঃস্বার্থ ভাবে রাজনিতি করে থাকে তাহলে শফিকুল ইসলাম দিলুর নাম সবার আগে আসবে। আমি নিজে বিনপি করি মনে প্রানে কিন্তু উনাকে সমরথন করি তার কাজ এবং সততার জন্য)নূরুল আমিন নূরুল স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও প্রচার কার্যালয়ে আওয়ামী লীগ নেতা-নেত্রীদের ছবি টানিয়ে রেখেছেন।
এলাকায় পরিচিতি পেতে কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন মুরগি ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন, জামায়াতের আবদুল আলীম মিয়া, আবদুস সবুর মিয়া ও আবদুর রহমান। তাদের মধ্যে আলীম মিয়া নাসির উদ্দিনের পক্ষে ডামি প্রার্থী। শহিদুল ইসলাম দিলুর সঙ্গে আর্থিক সমঝোতার মাধ্যমে আবদুস সবুর প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন বলে জানা গেছে।
সরেজমিন : কাজলার বাসিন্দা হোসেন মিয়ার অভিযোগ, এলাকার পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা খুবই খারাপ। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে বারবার আবেদন করেও লাভ হয়নি।
মাতুয়াইল পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দা জাহানারা কাজী বলেন, এলাকায় মাদক ১ নম্বর সমস্যা। ওয়ার্ডের মেম্বাররাই মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। শরিফপাড়ার বাসিন্দা কলেজপড়ূয়া জাকিদা সুলতানা বলেন, এলাকার রাস্তাঘাট খুবই খারাপ। বেশির ভাগ এলাকায় মাটির রাস্তা। ধার্মিকপাড়ার প্রবীণ করিমন বেওয়া বলেন, তিনি বয়স্কভাতার জন্য ওয়ার্ডের মেম্বারদের পেছন পেছন ঘুরেছেন।
এক কেজি চালও তাকে দেওয়া হয়নি। সিটি মিল, মলি্লকপাড়া, আইআর টিউবস এলাকার একাধিক বাসিন্দা বলেন, এলাকায় রাস্তা নেই, ড্রেনেজ ব্যবস্থাও নাজুক। শীত মৌসুম ছাড়া অন্য যে কোনো সময় এলাকাটি পানিতে তলিয়ে থাকে। পারডগাইর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মূল রাস্তাটির কয়েক ফুট পরপর বিশাল গর্ত। রাস্তার দু'পাশের দোকানিরা জানান, রাস্তার কারণে তাদের ব্যবসা মন্দা যাচ্ছে।
৫০ টাকা দিতে চাইলেও রাস্তার এক মাথা থেকে আরেক মাথায় রিকশাওয়ালারা যেতে চায় না।
এ ছাড়া নতুনপাড়া, মোমেনবাগ, আদর্শবাগ, রহমতপুর, মধুবাগ, মুসলিমনগর, মোগলনগর, খুরিয়াপাড়া, কেরানীপাড়া, দক্ষিণপাড়া, ভূঁইয়াবাড়ি, খানবাড়ি, রায়েরবাগ, হাসেম রোড, রায়েরবাগ খানকা এবং গ্রিধার; রায়েরবাগ, কাজলার পাড়, ভাঙ্গাপ্রেস, শরিফপাড়া এলাকার রাস্তাঘাটের বেহাল দশা।
রিটার্নিং কর্মকর্তার অফিস সূত্রে জানা যায়, এলাকার মোট ভোটার ৮৩ হাজার ৭৫ জন (৮৭ হাজার ভোট আসে)। তাদের মধ্যে পুরুষ ৪১ হাজার ৪৬৫ ও নারী ভোটার ৪১ হাজার ৬১৩ জন। ভোটগ্রহণ হবে ৪৬টি কেন্দ্রে।
শেষ কথাঃ
হলুদ সাংবাদিকতার কথা শুনেছি কিন্তু এ প্রথম দেখলাম। অবাক লাগে দেশের এক্তা দৈনিক এ কিভাবে এইসব লিখে!!!!! এই সাংবাদিক নিয়াজ মোর্শেদ যেভাবে লিখেছে সেটা নৈতিকতা বিবর্জিত এবং দেশের এই রসাতলে যাওয়ার পিছনে এইসব সাংবাদিকদের ভুমিকা অনেক বেশি। যা কিছু ভাল টা লিখুন, সত্যি টা লিখুন। আমি নির্বাচন কমিশন এর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি এইসব আজেবাজে হলুদ সাংবাদিকথা বন্ধের জন্য। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।