বয়স যখন তার ৯০ ছুঁই ছুঁই তিনি তবুও চিরতরুণ, সৌন্দর্যের পিপাসায়। তার শিল্পীমনসত্তায়। কিন্তু তিনি কতোটা আধুনিক ছিলেন? একজন আধুনিক ফিদা হুসেইন, প্রাচীন আদিরসের শিল্পীসত্তা ধারণ করে ছিলেন কিনা সেটি প্রশ্লসাপেক্ষ। তবে তার সৌন্দর্য পিপাসা নারী এবং প্রকৃতির সঙ্গে মিশে রয়েছে যা তাকে রোমান্টিক করেছে।
একজন চিত্রশিল্পী হিসেবে তিনি ধারণ করেছিলেন ভারতীয় পুরাণের বিষয়টিকে।
রোমান বা গ্রিক পুরাণের নারীরা যতোটা সৌন্দর্যের আধার ভারতীয় পুরাণের লক্ষী,সরস্বতী পার্বতীদের মধ্যে তার সন্ধান করেছিলেন মকবুল ফিদা হুসেইন।
০৯ জুন ৯৫ বছর বয়সে দেহত্যাগ করলেন তিনি। জীবনের এই লম্বা সময়টা তার কেটেছে শিল্পের সঙ্গে শিল্পীসত্তাকে খুঁজে ফেরার প্রত্যয়ে। তিনি ৭ সেপ্টেম্বর ১৯১৫ সালে জন্মগ্রহন করেন।
আধুনিকতার যতো বৈশিষ্ট্য সবই তার সত্তায় ছিলো।
আধুনিকতার একাকিতত্ব, নিজেকে খুঁজে ফেরার বা সন্দেহের প্রতিটি উপাদান তার মধ্যে ছিলো। তার মধ্যে কাজ করেছে সংশয়। তিনি আশ্রয় খুঁজেছেন সৌন্দর্যে। নিখাদ দেহসৌন্দর্যে।
ভারতীয় উপমহাদেশের সংস্কৃতির নগ্ন খোলা সৌন্দর্য নিজে যেমন উপলব্ধি করেছিলেন তেসনি ভোগ করেছিলেন।
বলিউডের মাধুরি দীক্ষিত থেকে বিদ্যা বালনে তিনি খোঁজ পেয়েছেন শিল্পগুণের। ৯৫ তে এসে হালের আনুশকা শর্মার প্রতিও তিনি ছিলেন সরেস।
তার সুন্দরকে তিনি দেখেছেন অন্য চোখে, শিল্পী চোখে। তার এই চেতনা রোমান্টিক এবং চিরতরুণের চেতনা।
২০০৬ সালে দেশ ছাড়েন মকবুল ফিদা।
২০১০ সালে কাতারের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন তিনি। তখন থেকে দুবাই ও লন্ডনে ছিলেন এ চিত্রশিল্পী। এক যুগ আগে বলিউডে ‘গজগামিনী’ নামে একটি চলচ্চিত্রও নির্মাণ করেছিলেন ফিদা, যাতে অভিনয় করেন মাধুরী দীক্ষিত।
তাকে নিয়ে টাইমস অফ ইন্ডিয়া শিরোনাম করেছিলো- আনুশকায় আবারো ফিদা হুসেইন'।
তাকে নিয়েই বলা সম্ভব ‘সৌন্দর্যের ফিদা, সৌন্দর্যের দেওয়ানা।
তার বিতর্কিত কিছু ছবি- যেখানে তিনি ভারতীয় পুরাণে খুজেছিলেন সৌন্দর্য।
ক্ষী-স্বরস্বতীর নগ্ন সৌন্দর্য যেনো ভারতীয় প্রকৃতির সৌন্দর্য। একমাত্র সৌন্দর্যিপপাসু জানে সৌন্দর্য-এর মর্ম। তাই সমালোচনার পরো ফিদা হুসেনের শিল্পীসত্তা সেই অমরত্ব সন্ধান করেছে।
হুসেইনের মাদার ইন্ডিয়া তাকে ঘরছাড়া করেছে ঠিকই, সমালোচতি করেছে ঠিকই তবুও তার শিল্পীসত্তাকে রোমান্টিক আধুনিকতা দিয়েছে।
আমাদের সংস্কৃতি আর শিল্পের সঙ্গে বিরোধ চিরকালের। মুল্যবোধের চেতনার সঙ্গে শিল্প চেতনার বড়ো পার্থক্য নেই। কেবল দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্য।
আপনাদের কি মনে হয়? ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।